‘দুষ্মন্তের প্রতি শকুন্তলা’ বীরাঙ্গনা কাব্যের প্রথম পত্র। এ পত্রের কাহিনির উৎসসূত্র মহাভারত ও কালিদাসের ‘অভিজ্ঞান শকুন্তলম্’ নাটক। কাব্যে মহাভারত ও শকুন্তলা নাটকের ভাব ও ভাবনার স্বচ্ছন্দ অনুপ্রবেশ ঘটলেও কবি আখ্যান নির্মাণ ও চরিত্রসৃষ্টির ক্ষেত্রে মৌলিক চিন্তার আশ্রয় নিয়েছেন। সংস্কৃত সাহিত্যে কালিদাসের নাটকে তৃতীয় অঙ্কে দুষ্মস্তকে পদ্মপাতায় নখের আঁচড়ে লেখা শকুন্তলার প্রেমপত্রের কথা কবির অজ্ঞাত ছিল না। তবে একাব্যে শকুন্তলার পত্র-রচনার প্রেক্ষাপট ভিন্ন। মহাভারত ও কালিদাসের নাটক থেকে আমরা জেনেছি রাজা দুষ্মন্ত গান্ধর্ব মতে শকুন্তলাকে বিবাহ করে তাকে কন্বমুনির তপোবনে রেখেই স্বরাজ্যে প্রত্যাবর্তন করেছিলেন এবং ফিরে আসবার প্রতিশ্রুতি দিয়েও দীর্ঘদিন যাবৎ পত্নীর আর কোনো তত্ত্বাবধান করেননি। কালিদাস ‘দুর্ব্বাসার অভিশাপ’ নামক কল্পিত ঘটনার মাধ্যমে ভোগী রাজার ঔদাসীন্যকে কিছুটা শোভনতার আড়ালে রাখতে চাইলেও মধুসূদন তাকে গুরুত্ব দেননি, বরং রাজার এই ঔদাসীন্যে উপেক্ষিতা নারীহৃদয়ের যন্ত্রণা ও উদ্বেগ থেকেই শকুন্তলাকে দিয়ে এই পত্র রচনা করিয়েছেন।
শকুন্তলার পত্রটি মূলত ‘স্মরণ’ অনুসঙ্গ ভিত্তিক। এককথায় একে শকুন্তলার ‘visioris of the post’ বলা চলে। তবে গান্ধর্ব মতে বিবাহিতা শকুন্তলা রাজমহীষীর সম্মান তখনো পাননি। দুষ্মত্তের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের জন্যই রাজকুলবধূর প্রাপ্ত সম্মান ও মর্যাদা থেকে বঞ্চিতা হয়ে তিনি আজ তাত কন্বের আশ্রমে অসহায় অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন। প্রিয়তম কর্তৃক পরিত্যক্তাতে হওয়ায় দুষ্মন্তের প্রতি অভিমান বশত পত্রটিতে অসহায়া নারীর মৃদু অনুযোগের সুরও কিছুটা যুক্ত হয়েছে। সমগ্র পত্রটিতে শকুন্তলার অন্তর্বেদনা ও অভিমান ব্যক্ত করবার জন্য কবি কয়েকটি বিষয়ের প্রতি লক্ষ করেছেন এবং সেই বিষয়গুলির ভিত্তিতেই গড়ে উঠেছে ১২ টি স্তবকে বিন্যস্ত কাব্যাংশটির সূচনা, সমাপ্তি ও মধ্যবর্তী অংশ এই পত্রে পরপর ধারিবাহিক বিষয়গুলি হল—দুষ্মন্তের সঙ্গে শকুন্তলার প্রথম দর্শন, নিকুঞ্জ মিলন, রাজার বিদায়গ্রহণ, রাজা কথা না রাখায় শকুন্তলার দ্বিধা, স্বপ্নচারণ ও পরিশেষে পরিত্যক্ত স্ত্রীর নারীসুলভ অভিমান ও মৃদু অনুযোগ।
প্রথম স্তবকেই দেখি তপোবনবাসিনী শকুন্তলা নিজেকে দাসীরূপে নিবেদন করে রাজেন্দ্র দুষ্মন্তকে প্রণাম জানিয়ে তার বক্তব্য শুরু করেছে। এই স্তবকের মূল বিষয়টি হল আশামদে মত্ত শকুন্তলার দুষ্মন্তের জন্য প্রতীক্ষা এবং সর্বদা প্রাণনাথের চিন্তায় মগ্ন থাকার ফলে ধূলারাশি উত্থিত হতে দেখে, বাতাসের শব্দ শুনে রত্নালংকৃতা হস্তীসহ রাজার বনে পুনঃপ্রবেশ ঘটেছে বলে তার মনে ভ্রমের সৃষ্টি। পত্রটি শুরু হয়েছে অপ্রত্যক্ষ উদ্ভির বৈপরীত্য।
‘বননিবাসিনী দাসী নামে রাজপদে,/ রাজেন্দ্র! যদিও তুমি ভুলিয়াছ তারে/ভুলিতে তোমার কভু পারে কি অভাগী ?/হায় আশামদে মত্ত আমি পাগলিনী।
এভাবে পত্রের সূচনা থেকেই কবি তাঁর বক্তব্যকে সংলাপাশ্রয়ী করে তোলবার জন্য নায়িকার কথক সত্তাকে বিভাজিত করে দেখিয়েছেন। এই বিভাজনের ক্ষেত্রে নায়িকার দ্বৈত সত্ত্বার এক অংশ অপর অংশকে বিপরীত প্রক্রিয়ায় বিশ্লেষণ করেন।
দ্বিতীয় স্তবকে ভ্রমবশত শকুন্তলাকে নিকুঞ্জবনে ছুটে যেতে দেখা যায়। সেখানে পূর্বের মতোই মুকুলিত লতা, কোকিলের গীত, কপোত-কুজন, অলি গুঞ্জন সবই আছে, কিন্তু যে পদযুগল দেখবার আশায় সে ব্যাকুল ভাবে সেখানে ছুটে উঠেছে। সেই কেবল অনুপস্থিত। আর এবারই তার ভ্রম ভাঙে। তার চোখ জলে ভেসে যায়, স্বামী বিরহে নিকুঞ্জবনের মনোরম প্রাকৃতিক দৃশ্য শকুন্তলার মনে সৃষ্টি করে অন্য এক উপমা। গাছের পাতার সঙ্গে নিজের অবস্থার তুলনা করে সে বলে ওঠে।
শোন, পত্র সরস দেখিলে সমীরণ আসি নাচে লয়ে প্রেমামোদে ; কিন্তু যবে শুখাইস্ কালে/তুই, ঘৃণা করি তোরে তাড়ায় সে দূরে;/তেমনি দাসীর কি রে ত্যজিলা নৃপতি ?
৩য় স্তবকেও এরই পুনরাবৃত্তি। তৃতীয় স্তবক পর্যন্ত সবটাই যেন শকুন্তলার স্বপ্নচারণা ও স্বপ্নভঙ্গের বেদনায় ভরা তাছাড়া, প্রকৃতির বেদনা ও শকুন্তলার মনোবেদনা উভয় যেন একসূত্রে গ্রথিত হয়েছে এই স্তবক পর্যন্ত।
৪র্থ স্তবক গড়ে উঠেছে শকুন্তলার স্মৃতি রোমন্থনকে কেন্দ্র করে।
৫ম স্তবক থেকে দুষ্মন্তের প্রতি বিরহজনিত উভয়ের মর্মোচ্ছ্বাস-এর প্রকাশ। ষষ্ঠ স্তবকে কবি শকুন্তলাও দুষ্মন্তের মিলন প্রসঙ্গ উল্লেখের সময় থেকে একেবারে শেষ স্তবক পর্যন্ত দেখেছি এরই ক্রমিক বিকাশ। তার সঙ্গে সঙ্গে গান্ধাব বিবাহ ও নিকুঞ্জে ফুলশয্যার কথাও বলেছেন। শকুন্তলার জীবনের সব সুখশান্তি নষ্ট করে চলে যাবার জন্য দুষ্মন্তের প্রতি শকুন্তলার মৃদু অনুযোগ-এর দিকটিও রয়েছে।
দ্বাদশ স্তবকে প্রদত্ত আত্মপরিচয় অংশে শকুন্তলার মধ্যে দুষ্মন্তের প্রতি আত্মনিবেদনের ভাবটি প্রধান হয়ে উঠেছে। নিজেকে সে বারবার বন-নিরাসিনী দাসী, অভাগী, পাগলিনী, অনাথিনী, অবলা বলতে চেয়েছে। প্রথম পর্যায় থেকে দাসী, বন-বিনাসিনী, বাকল-বসনা এসব বলে নিজের পরিচয় গোপন রাখতে রাখতে একেবারে শেষ পর্যায়ে এসে নিজের নাম প্রকাশ করেছেন শকুন্তলা (দশম স্তবক)– ‘দাসী শকুন্তলা দোষী ও চরণ যুগে?’ এভাবে নিজের পরিচয় দেবার যে কৌশল তা পত্রটিকে নাটকীয় চমৎকারীত্ব দান করেছে। এসব শব্দের মধ্যে দাসী ও অভাগী শব্দদুটির একাধিক ব্যবহারও লক্ষ্য করার মতো। শকুন্তলা নিজের প্রতি দাসী কথাটি ব্যবহার করেছে এগারবার। শকুন্তলা সামান্যা বনবাসিনী নারী, তবুও সে সসাগরা পৃথিবীর অধীশ্বর রাজা দুষ্মন্তকে ভালোবেসেছে। এই অসম ভালোবাসার অন্তর্দ্বন্দ্ব প্রতিফলিত হয়েছে তার প্রযুক্ত বাক্যে। রাজাকে সে নৃপতি, রাজেন্দ্র, মণি সম্ভাষণে ভূষিত করেছে। কিন্তু তাঁর প্রতি আত্মসমর্পণ করলেও স্বামী পরিত্যক্ত অবহেলিতা শকুন্তলা নিজের পত্নী পরিচয় গুরুত্ব দিয়ে দাসী শব্দটি প্রয়োগ করেছে মধুসূদনের সৃষ্ট ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যবোধে সচেতন নারীর পক্ষে নিজেকে এভাবে দাসী বলে উল্লেখ করবার ঘটনাটি এজন্যেই কোথাও কোথাও ‘বীরাঙ্গনা’ কাব্যের পক্ষে আপাতদৃষ্টিকে বেমানান বলে মনে হয়। হয়তো ‘দাসী’ বলতে শকুন্তলা নিজেকে রাজপদে অবনতা আত্মনিবেদিতা বলেই বোঝাতে চেয়েছে। তাই ‘দাসী’ এক অর্থে স্বামীর প্রতি একনিষ্ঠা শকুন্তলার প্রগাঢ় প্রেমিকা সত্তারই পরিচয়বাহী।
‘বন-নিবাসিনী’ কথাটি ব্যবহৃত হয়েছে তিনবার (বনাচর সহ)। ‘ধন-নিবাসিনী’-এর অর্থতপোবন লালিতা আশ্রয়বাসিনী কন্যা।
‘পাগলিনী’ শব্দটি একবার প্রযুক্ত হয়েছে। এর অর্থ প্রিয়বিচ্ছেদে উন্মাদিনী।
‘অভাগী’ ও ‘অভাগিনী’ শব্দটি বেশ কিছুবার ব্যবহৃত হয়েছে। সংখ্যাগতভাবে ‘দাসী’ই বেশিবার ব্যবহৃত তবে অন্যান্য শব্দগুলি ‘দাসী’ শব্দটির সহযোগী হয়ে অর্থ বিস্তারে সাহায্য করেছে।
পত্রটিকে প্রযুক্তি একটি বাক্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ‘গন্ধব, বিবাহচ্ছলে ছলিলে দাসীরে। এই বাক্যের মধ্যে দিয়ে শকুন্তলা ‘গন্ধব’ বিবাহকে রাজার ছলনা বলে কটাক্ষ করেছে। এই বাক্যের মধ্যে দিয়ে কৌশলে রাজা দুষ্মন্তের চরিত্রের দুর্বলতম দিকটি অনেকটাই উন্মোচন করেছেন কবি। তাছাড়া এই বাক্যে শকুন্তলার মর্মবেদনার কারণটি সুস্পষ্ট হয়েছে। তবে এই বিরহিণী শকুন্তলাই সব নন, তার প্রেমে একদিকে রয়েছে বেদনা, অপরদিকে মুগ্ধতা। সে একই সঙ্গে প্রেমের স্মৃতিতে বেদনাবিধুর আবার, স্বামীর কাছে পৌঁছানোর জন্য একান্ত প্রত্যাশায় বুক বেঁধে অপেক্ষারত-প্রেমিকা নারীর এই দ্বৈত সত্তাকে কবি তার প্রতিভার সাহায্যে আপন মহিমায় ফুটিয়ে তুলেছেন। প্রিয় বিচ্ছিন্না নারীর তীব্র বিরহবেদনার মধ্যে সজীব রেখেছেন তার প্রাণের আশালতটিকে—
‘কিন্তু নাহি লোভে দাসী বিভব! সেবিবে
দাসীভাবে পা দুখানি-এই লোভ মনে,-
এই চির-আশা, নাথ, এ পোড়া হৃদয়ে!
এখানেই সমাপ্ত নয়, সে বলছে—
‘বনচর চর, নাথ! না হানি কীরূপে?
প্রবেশিপে রাজপুরে, রাজ-সভাতলে?’
এই উক্তিটির মধ্যে শকুন্তলা ‘বীরাঙ্গনা’-র অন্যান্য নায়িকাদের চেয়ে স্বতন্ত্র হয়ে উঠেছেন। শকুন্তলাকে আমরা এখানে বিবাহিতা বলেই ধরে নেব (কারণ গন্ধর্ব বিবাহ-এর উল্লেখ পত্রে আছে)। সেদিক থেকে বীরাঙ্গনার অন্যান্য বিবাহিতা নারী যেমন কেকয়ী, জনা এরা তাদের স্বামীর অবহেলা, অবিচারকে নীরবে সহ্য না করে প্রতিবাদে মুখর হয়েছে ও শেষ পর্যন্ত স্বামীর পায়ে নতি স্বীকার না করে। প্রখর আত্মমর্যাদাবোধ বজায় রাখতে চেয়েছে। কিন্তু শকুন্তলা তেমন নন। তিনি স্বামীর এই চূড়ান্ত অবহেলা সত্ত্বেও দুষ্মন্তের রাজসভায় রাজমহিষীপদে গৃহীতা হবার আশা করে, বিভব নয়, ঐশ্বর্য নয়, কেবল ‘দাসীভাবে’ স্বামীর পদসেবা করবার আকাঙ্ক্ষা পোষণ করে। কারণ, তার বক্তব্য ‘জীবনের আশা’ হায়, কে ত্যজে সহজে!
পত্রটিকে নাটকীয় একোক্তিগুলির স্বাভাবিক ছাঁচকে বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে স্বাতন্ত্র্যচিহ্নিত করে সৃষ্টি করা হয়েছে। তার ফলে ধরা পড়েছে বিশেষ শৈলীজাত কৌশল। সেক্ষেত্রে পত্রকাব্যগুলির কাব্যিক নাট্য ধর্মে ভেদরেখা অনেকটাই মুছে গেছে। একোক্তির ছাঁদকে ভেঙে সংলাপাশ্রয়ী করে তোলার জন্য পরিবেশ ও চরিত্রের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে একাধিক চরিত্রকে (প্রাণীবাচক ও অপ্রাণীবাচক উভয়প্রকার চরিত্র) আনয়ন করেন, কাব্যাংশের। তারা যেন নায়িকার কথোপকথনের সূত্র ধরেই অদৃশ্য মঞ্চে এসে উপস্থিত হয়। এরা নায়িকার কথক সত্তাকে সক্রিয় করে এবং নাটকীয় একেক্তিকে সংলাপাশ্রয়ী হতে সাহায্য করে। শকুন্তলা পত্রিকায় তার দৃষ্টান্ত চোখে পড়ে—
এই সংযোজনের জন্য কখনও কখনও সচেতন জড় পদার্থকেও অদৃশ্যমঞ্চে চরিত্র রূপে উপস্থিত বলে মনে হয়। মনুষ্যতর প্রাণীও এক্ষেত্রে সংযোজিত হয় ও তাদের মধ্যে মনুষ্যসত্তার আরোপণ ঘটে। এজাতীয় সংযোজে নায়ক-নায়িকা জড়পদার্থকে উদ্দেশ্য করে নিজের মনের অবস্থার ব্যক্ত করে। এই রীতি নায়িকার প্রতিরোধকে প্রসারিত করে তোলে। নায়িকার বক্তব্য কেবল চরিত্রভিমুখী হয়ে মনুষ্যতের প্রাণীও বৃহৎ বিশ্বপ্রকৃতির সঙ্গে একাকার হয়ে গেছে। যেমন—“রে নিকুঞ্জশোভা, কি সাধে হাসিস তোরা ?….. কহি পত্রে,” “শোন, পত্র ; সরস দেখিলে/ তোরে, সমীরণ আসি নাচে তোরে লয়ে প্রেমামোদে….”
কোথাও কোথাও শকুন্তলার সংলাপে রয়েছে মেয়েলি ভাষার নিজস্ব টোনের বৈশিষ্ট্য যা চরিত্রের সাথে মানানসই হয়ে তাকে আরও বেশি নাটকীয়তা দান করেছে। যেমন—
‘মুদি পোড়া আঁখি বসি রসালের তলে’
অথবা—
‘আসি তুমি আক্রম গুঞ্জরী/এ পোড়া অধর পুনঃ!…..”
আবার কোথাও নায়িকার সংলাপে প্রতিফলিত হয়ে নাটকীয় অঙ্গভঙ্গি। নায়ক মঞ হবার সময় অভিনেতা বা পাত্র পাত্রীর ক্ষেত্রে অঙ্গঙ্গি সঞ্চালনের এই ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শকুম্ভলা পত্রিকায়, শকুন্তলার কিছু সংলাপে এ জাতীয় শারীরিক সঞ্চালনের ছাপ সুস্পষ্ট যা নায়িকার বিরহবেদনার প্রকাশে অত্যন্ত সহযোগী হয়ে প্রকাশ পেয়েছে। ফলে পত্রকাব্যটি মঞে উপস্থাপিত না হওয়া সত্ত্বেও কেবল শব্দ দিয়েই তাতে ফুটে উঠেছে মঞ্চস্থ কোনো নাটকের পাত্র-পাত্রীর প্রত্যক্ষ অভিনয়ের মতো ছবি। যেমন— “বিষাদে নিশ্বাস ছাড়ি, পড়ি ভূমিতলে, ….. মিলিবারে আঁখি, দেখি তোমায় সম্মুখে !/ অমনি পসারি বাহ ধাই ধরিবারে / পদযুগ,”
গোটা পত্রকাব্যটি নিরবচ্ছিন্ন কোনো কাহিনিকে আশ্রয় করেনি বর্তমান ও ভবিষ্যতের খণ্ড খণ্ড চিত্রগুলিকে কবি একে একে মেনে ধরেছেন। ফলে কাহিনিতে নাটকের মতো flash back স্বপ্নচারণা ও আগামীদিনের সম্ভাব্য ঘটনার আবির্ভাব ঘটেছে। এই পত্রে যেমন— ‘যে তরুর দলে/গন্ধর্ব্ব-বিবাহচ্ছলে ছলিলে দাসীরে,’
এই পত্রে মধুকবির লিপিচাতুর্যের প্রমাণও আছে। পত্রে অমিত্রাক্ষর ছন্দের সুন্দর ব্যবহার এ পত্রের লালিত্য আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
Leave a comment