‘বিষাদ সিন্ধু’তে কারবালার বিষাদময় ঘটনা বিধৃত কর
উত্তর: আধুনিক বাংলা সাহিত্যের প্রাথমিক পর্যায়ে মুসলমান সাহিত্যিকদের পদচারণা ছিল না বললেই চলে। হাতে গোনা যে কয়জনের নাম আমরা পাই তাদের মধ্যে প্রধান ছিলেন মীর মশাররফ হোসেন। মীর সাহেবের সবচেয়ে জনপ্রিয় গ্রন্থ ‘বিষাদ সিন্ধু’। বৃহদায়তন এ গ্রন্থের প্রকাশকাল ১৮৮৫-১৮৯১ খ্রিষ্টাব্দে।
‘বিষাদ সিন্ধু’ একটি উপন্যাস জাতীয় গদ্যগ্রন্থ। এতে রয়েছে মহাকাব্যের বিস্তার। ‘মহানবী হযরত মুহাম্মদ (স) এর প্রিয় দৌহিত্র হযরত ইমাম হোসেন (রা) এবং হযরত মাবিয়ার (রা) পুত্র এজিদের মধ্যে বিরোধের বিষয়বস্তু নিয়ে এ গ্রন্থটি রচিত। বলাবাহুল্য কারবালার প্রান্তরে হযরত ইমাম হোসেন (রা) এজিদ বাহিনীর হাতে নির্মমভাবে নিহত হয়েছিলেন। ইমাম হোসেন (রা) সত্যের জন্য, ন্যায়ের জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। সেই মর্মান্তিক ঘটনা শুধু মুসলমানদের কাছেই নয়। সমগ্র দুনিয়ার বিবেকবান মানুষ মাত্র এহেন ঘটনায় শোকাকুল হয়ে উঠে। এজন্যই নাম হয়েছে বিষাদ সিন্ধু। গ্রন্থটি বাংলাদেশের মুসলমানদের কাছে খুবই জনপ্রিয়তা লাভ করেছিল।
গ্রন্থটি বাংলাদেশের মুসলমানদের কাছে খুবই জনপ্রিয়তা লাভ করেছিল।
‘বিষাদ সিন্ধু’ নির্ভেজাল ইতিহাস সম্মত উপন্যাস নয়। এতে লেখক অনেক কল্পিত ঘটনা ও চরিত্রের সমাবেশ ঘটিয়েছেন। এমনকি কাহিনির মূল ধারাও তিনি পুঁথি সাহিত্য থেকে গ্রহণ করেছেন। জঙ্গনামা রূপকথায় পরিণত হয়েছে কিন্তু বিষাদ সিন্ধু উৎকৃষ্ট সাহিত্য সৃষ্টি হিসেবে সমাদৃত হয়েছে। বিষাদ সিন্ধু সম্পর্কে মুহম্মদ আবদুল হাই লিখেছেন, “মধ্যযুগীয় ধর্ম চেতনা বিমুখ আচ্ছন্নতাকে অপসারিত করে ইহলোকের ইন্দ্রিয়পরবশ মানব-মানবীর হর্ষ শোকের মহামূল্যকে তিনি যেন কল্পনালোকে প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছেন সেটাই তার শ্রেষ্ঠ পরিচয়। এজন্যই ‘বিষাদ সিন্ধু’ চরিত্রসমূহ কিস্সা কাহিনি ক্রোড়োদ্ভূত হয়েও অনেক দূর পর্যন্ত মৃত্তিকা সংলগ্ন প্রিয়জন-পরিজন বেষ্টিত, শত্রু, মিত্র পরিবৃত সজীব নরনারী।”
বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ উপরের লেখায় কোন ভুল থাকে তাহলে দয়া করে আমাদেরকে কমেন্ট করে জানাবেন আমরা সেটা ঠিক করে দেওয়ার চেষ্টা করবো, ধন্যবাদ।
Leave a comment