প্রশ্নঃ বিশ্লেষণাত্মক মতবাদ আলোচনা কর।
উত্তরঃ এ মতবাদ প্রচলিত আইনের বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণের উপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত। এই মতবাদ আইনের আদর্শসমূহ নিয়ে চিন্তাভাবনা করে না বরং রাষ্ট্র কর্তৃক প্রদত্ত আইনের বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ দ্বারা সঠিক ব্যাখ্যা প্রদানের মাধ্যমে আইনের কার্যকারিতা যথার্থভাবে এবং নিশ্চিতভাবে বলবৎ করাই হলো এর মূখ্য উদ্দেশ্য।
প্রখ্যাত ব্রিটিশ আইনবিজ্ঞানী স্যার জন অস্টিন (ইল্রধভ) এই মতবাদের প্রধান উদ্দ্যোক্তা। এ ছাড়া বেনথাম, স্যামণ্ড এবং এ্যালেনও এই মতবাদের অন্যতম প্রবক্তা। অস্টিনের মতে, ইহা বিশ্লেষণমূলক; স্যামণ্ডের মতে, ইহা সুনিশ্চিত আইনের মতবাদ; এ্যালেনের মতে, ইহা অবশ্য পালনীয় মতবাদ এবং বেনথাম ও হার্ট এই মতবাদকে পজিটিভিজম হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। পজিটিভিজমের অর্থ এইভাবে বর্ণনা করা হয়ঃ (১) আইন আদেশ বিশেষ, (২) আইনগত ধারণাসমূহ সমাজতাত্ত্বিক এবং ঐতিহাসিক দৃষ্টিকোণ থেকে ভিন্ন উপায়ে বিশ্লেষণ করা উচিত, (৩) সামাজিক উদ্দেশ্য, নীতি বা নৈতিকতার প্রসঙ্গে না গিয়েও পূর্ব নির্ধারিত নিয়ম কানুন থেকে সিদ্ধান্তগুলি অনুমান করে নেয়া যায়। (৪) যুক্তি বা প্রমাণের সাহায্যে নৈতিক সিদ্ধান্ত প্রতিষ্ঠা যা সমর্থন করা যায় না। (৫) যা আইন হওয়া উচিত তা হতে বাস্তবে নির্দেশিত আইনকে পৃথক রাখতে হবে।
আইনের গবেষণামূলক ব্যাখ্যার জন্য বিশ্লেষণমূলক মতবাদের অস্তিত্ব অপরিহার্য। বিশেষভাবে নিম্নোক্ত ক্ষেত্রে এই মতবাদের প্রয়োজন অত্যাধিক বলে প্রমাণিত হয়েছেঃ
(ক) রাষ্ট্রীয় আইনের (Civil law) সুস্পষ্ট ধারণা সম্পর্কে বিশ্লেষণ করা ৷
(খ) সিভিল ল’ বা রাষ্ট্রীয় আইন ও অন্যান্য আইনের মধ্যে সম্পর্ক নিরূপণের ক্ষেত্রে পরীক্ষা নিরীক্ষা করা।
(গ) প্রশাসনিক বিচার ব্যবস্থা, সার্বভৌমত্ব এবং রাষ্ট্রীয় ধারণার উপর বিশ্লেষণ করা।
(ঘ) সিভিল ল’ এর উৎসগুলি সম্পর্কে পরীক্ষা নিরীক্ষা করা।
ঙ) দেওয়ানী ও ফৌজদারী আইনের সূত্রগুলি সম্পর্কে অনুসন্ধান করা।
(চ) আইনের ব্যবস্থাপনাকে বৈজ্ঞানিক ভিত্তিতে তদন্ত করা ৷
Leave a comment