স্পিয়ারম্যান তার দ্বি-উপাদান তত্ত্বে সাধারণ মানসিক ক্ষমতার সঙ্গে বিশেষ মানসিক ক্ষমতার কথা উল্লেখ করেন। তাঁর মতে, বিশেষ মানসিক ক্ষমতা হল এমন একটি ক্ষমতা যা সব কাজে প্রয়ােজন হয় না, শুধুমাত্র নির্দিষ্ট কাজেই প্রয়ােজন হয়।

ম্পিয়ারম্যান-এর মতে, জন্মগতভাবে থাকে G উপাদান। কিন্তু যে উপাদান বিশেষ বিশেষ কাজে ব্যবহৃত হয় এবং তা সাধারণ মানসিক ক্ষমতার উপর নির্ভরশীল হয়, সেই উপাদানকে বলে বিশেষ মানসিক ক্ষমতা।

এই মানসিক ক্ষমতা একই ব্যক্তির বিভিন্ন কাজে বিভিন্ন। এর গুণগত মান পৃথক। এই ক্ষমতা পরিবেশ থেকে অর্জিত।

বিশেষ মানসিক ক্ষমতার বৈশিষ্ট্য

(1) বিশেষ প্রকৃতির: নির্দিষ্ট কাজ সম্পন্ন করার জন্য নির্দিষ্ট বিশেষ মানসিক ক্ষমতার প্রয়ােজন হয়। যেমন- অঙ্ক করার জন্য অঙ্কের বিশেষধর্মী ক্ষমতার প্রয়ােজন। ওই ক্ষমতা অন্য কোনাে কাজে প্রয়ােজন হয় না।

(2) অর্জিত : কোনাে কোনাে মনােবিদ মনে করেন, বিশেষ মানসিক ক্ষমতা সহজাত নয়, শিখনের মধ্য দিয়েই মানুষ এই ক্ষমতা অর্জন করে।

(3) সব কাজের জন্য একরকম নয় : বিশেষ উপাদানের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হল এর প্রয়ােজনীয়তা বিভিন্ন কাজের সময় বিভিন্ন ধরনের হয়। যেমন কোনাে ব্যক্তি যখন টাইপ করে তখন তার এক ধরনের বিশেষ ক্ষমতার প্রয়ােজন হয় আবার যখন কোনাে ব্যক্তি কলম দিয়ে লেখে, তখন তার অন্য ধরনের বিশেষ ক্ষমতার প্রয়ােজন।

(4) পেশাগত সাফল্য : ব্যক্তির পেশাগত সাফল্যের জন্য বিশেষ মানসিক ক্ষমতার প্রয়ােজন। যেমন— শিক্ষকতা পেশায় নিযুক্ত ব্যক্তির সাফল্যের ক্ষেত্রে সাধারণ মানসিক ক্ষমতার সঙ্গে শিক্ষণ সম্বন্ধীয় বিষয়ের বিশেষ দক্ষতা আবশ্যিক।

(5) সংখ্যাধিক্য : এই ক্ষমতা সংখ্যায় একটি নয়, এটি সংখ্যায় অনেক।

(6) পরস্পর নিরপেক্ষ : বিশেষ ক্ষমতাগুলি পরস্পর নিরপেক্ষ। এই জন্যই এদের মধ্যে সহ-সম্পর্কের মান শূন্য বা খুব কম।

(7) নিরপেক্ষতা : বিশেষ মানসিক ক্ষমতা নিরপেক্ষতা বজায় রাখে। অর্থাৎ একপ্রকার বিশেষ মানসিক ক্ষমতার সঙ্গে অপর প্রকারের কোনাে সম্পর্ক পরিলক্ষিত হয় না।

(8) গুণগত মানের নির্ধারক : বিশেষ মানসিক ক্ষমতা ব্যক্তির কাজের গুণগত মান নির্ধারণের ক্ষেত্রে সাহায্য করে থাকে। তবে এক্ষেত্রে সাধারণ মানসিক ক্ষমতা ও বিশেষ মানসিক ক্ষমতার যৌথ ভূমিকা ব্যক্তির কর্মের গুণগত মান নির্ধারণ করে।

সুতরাং বলা যায়, বিশেষ মানসিক ক্ষমতাগুলি পরস্পর নিরপেক্ষ, ব্যায় বহু। ব্যক্তির মধ্যে একাধিক বিশেষ ক্ষমতা থাকতে পারে।