স্থান ও কালভেদে প্রয়ােজনীয়তার ওপর নির্ভর করে পরিকল্পনাকে নিম্নলিখিত ভাগে ভাগ করা যায়一

[1] প্রাকৃতিক পরিকল্পনা : ভূপ্রাকৃতিক বিভিন্ন অবস্থা যেমন—ভূমিরূপ, জলবায়ু, স্বাভাবিক উদ্ভিদ ইত্যাদির ওপর ভিত্তি করে এই প্রকার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। এক্ষেত্রে প্রাকৃতিক অবস্থার উন্নয়নই প্রধান লক্ষ্য, যেমন ধস নিয়ন্ত্রণে, বৃক্ষরােপণে, বন্যা নিয়ন্ত্রণে, বাঁধ নির্মাণে ইত্যাদি।

[2] অর্থনৈতিক পরিকল্পনা : কৃষি, শিল্প ও পরিসেবা ক্ষেত্রের উন্নয়ন ঘটিয়ে মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থা এবং দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নয়ন ঘটানাে।

[3] সামাজিক পরিকল্পনা : সামাজিক অবস্থার উন্নতি ঘটানাের লক্ষ্যে এই প্রকার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। যেমন- নিরক্ষরতা দূরীকরণে, কুসংস্কার দূরীকরণে পরিকল্পনা গ্রহণ।

[4] রাজনৈতিক পরিকল্পনা : রাজনৈতিক অবস্থার উন্নতির লক্ষ্যে এই প্রকার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। যেমন—ভারতে সাধারণ জনগণ যাতে বেশি করে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করতে পারে তার জন্য ত্রিস্তর পঞ্চায়েত ব্যবস্থার প্রচলন।

[5] পরিবেশগত পরিকল্পনা : পরিবেশ দূষণ রােধ করে পরিবেশের গুণগত মান বজায় রাখা এই প্রকার পরিকল্পনার উদ্দেশ্য। যেমন দূষণ রােধ, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ইত্যাদি।

[6] একক উদ্দেশ্যভিত্তিক পরিকল্পনা : কোনাে একটি উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে এই প্রকার পরিকল্পনা নেওয়া হয়।

[7] বহু উদ্দেশ্যভিত্তিক পরিকল্পনা : বহু প্রকার উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে এই প্রকার পরিকল্পনা নেওয়া হয়। যেমন—দামােদর ভ্যালি বহুমুখী নদী পরিকল্পনা।

ভাট ও রাও-এর প্রদত্ত পরিকল্পনা অঞ্চলের শ্রেণিবিভাগ

ভাট ও রাও (Bhat & Rao) 1964 খ্রিস্টাব্দে সম্পদ বণ্টনের বিন্যাস এবং কৃষিজমির ব্যবহারের ভিত্তিতে ভারতকে iiটি বৃহৎ এবং 5টি গৌণ পরিকল্পনা অঞ্চলে বিভক্ত করেন। 11টি বৃহৎ পরিকল্পনা অঞ্চলগুলি হল—[1] পশ্চিম উপকূল, [2] পশ্চিমবঙ্গ [3] মধ্যভাগের মালভূমি, [4] পূর্বঘাট, [5] পূর্ব উপকূল, [6] উত্তর পূর্ব মালভূমি, [7] গঙ্গা সমভূমি, [8] অসম, [9] গুজরাত, [10] রাজস্থান, [11] কাশ্মীর ও উত্তরের পার্বত্য অঞ্চল।

ভাট পরবর্তীকালে রাজ্যের অংশবিশেষের পরিবর্তে সম্পূর্ণ রাজ্য নিয়ে পরিকল্পনা অঞ্চলগুলিকে চিহ্নিত করেন- দক্ষিণ অঞ্চল, পশ্চিম অঞ্চল, পূর্ব অঞ্চল, উত্তর-পশ্চিম অঞ্চল, উত্তর-মধ্য অঞ্চল।