প্রাককথন: অভিনেতা-নাট্যকার শম্ভু মিত্র তাঁর ‘বিভাব’ নাটকে প্রথাগত নাট্যরীতি থেকে সরে এসে নিজস্ব নাট্যরীতির অসাধারণ প্রয়ােগ। ঘটিয়েছেন।

নিজস্ব নাট্যরীতির সন্ধান : মঞ্চসজ্জা বা অভিনয় উপকরণের স্বল্পতার বাধা কাটিয়ে নাটক অভিনয়ের জন্যই তিনি এই নিজস্ব নাট্যরীতির সন্ধান করেছেন। এক্ষেত্রে প্রাচীন বাংলা নাটক, উড়ে যাত্রা কিংবা মারাঠি তামাশা হয়ে উঠেছে তার প্রেরণা, সাহস জুগিয়েছে বিখ্যাত রাশিয়ান চিত্রপরিচালক আইজেনস্টাইনের লেখা।

নাট্যরীতি বৈশিষ্ট্যের অনুসরণ : মঞ্চসজ্জা এবং উপকরণের যথাযথ ব্যবহার না করে শুধু ভঙ্গির সাহায্যে দর্শকের কল্পনাশক্তির উপর নির্ভর করে নাট্যবিষয়কে ফুটিয়ে তােলাই এই নাট্যরীতির বৈশিষ্ট্য।

নাট্যকারের ব্যঙ্গবাণ : নাটকের সূচনায় শম্ভু মিত্র তাঁর দীর্ঘ বক্তব্যে নিজের নাট্যভাবনাকে যেমন তুলে ধরেন, তেমনই বাঙালির ঔপনিবেশিক মানসিকতাকেও ব্যঙ্গ করেন। এ নাটকের সংলাপ সুগঠিত নয়। নাটকটিতে কিছু মানুষের পারস্পরিক কথােপকথনের মধ্য দিয়ে ভাষার অনেকগুলাে স্তর ফুটে উঠেছে, মাঝেমধ্যে একটা এলােমালাে ধরনও তৈরি হয়েছে। এর ফলে নাটকের মধ্যে জীবনের উত্তাপ আরও বেশি করে খুঁজে পাওয়া গেছে।

কাহিনি বিন্যাসে চমক : হাসির উপকরণ খুঁজতে গিয়ে পুলিশের গুলিতে মৃত মানুষের সামনে দাঁড়িয়ে যখন বলা হয়—”এবার নিশ্চয়ই লােকের খুব হাসি পাবে?” তখন স্থুল হাসি খুঁজতে ব্যস্ত সমাজকে চুপ করিয়ে দেয় নাট্যকারের এই তীব্র ব্যঙ্গ। কাহিনি বিন্যাসের এই চমক নাটককে অন্য মাত্রায় পৌঁছে দেয়।