আপনি কয়েকদিন পর, কয়েক মাস পর বা আজকেই অথবা কালকে বিয়ে করবেন। এই বিয়ে করার আগে সবার মাঝে একটি কমন প্রশ্ন জাগ্রত হয় তা হচ্ছে বাসর রাতের নিয়ম কানুন গুলো কি। আমরা অনেকেই বাসর রাতের কথা শুনে উত্তেজিত হয়ে যায়। আর উত্তেজিত হওয়াটাই স্বাভাবিক। কারণ বাসর রাত একজন মেয়ে ও ছেলের মধুর একটি রাত। তাই আজকে বাসর রাতের নিয়ম কানুন নিয়ে আজকের আর্টিকেলটি লিখা। চলুন জানা যাক।
বাসর রাত এমন একটি লজ্জার বিষয় সকলের কাছে। বাসর রাতের কথা শুনলে সবাই উত্তেজিত হয়ে পড়ি। আর সবার মাথায় একটা প্রশ্ন আশে বাসর রাতের নিয়ম কানুন নিয়ে। তাই আজকে আমি আপনাদের গোপন সমস্যা নিয়ে আলোচনা করবো।যেনো বিয়ের আগে আপনি জানতে পারেন বাসর রাতে কি কি করতে হয়। তাই বেশি কথা বলে শুরু করি আজকের আর্টিকেল টি। সম্পূর্ণ পোষ্ট টি পড়ার জন্য বিশেষ ভাবে বলা হলো। সম্পূর্ণ পোষ্ট পড়লে আপনি বিস্তারিত জানতে পারবেন।
বা*সর রাতে প্রথম করনীয়
হয়তো আর কিছু দিন না হয় কালকে বা আজকেই আপনার বিয়ে। আর বিয়ে করলে বাসর রাত তো হবে। আপনাকে বাসর রাতের পরামর্শ দেওয়ার মতো কেও নাই তাহলে চিন্তা কিসের আজকে আমি বলে দিবো বাসর রাতের নিয়ম কানুন সম্পর্কে। প্রথমে শুরু করছি বাসর রাতের প্রথম করনীয় দিয়ে। অনেক কথা বলে ফেললাম তাই না। আসুন কাজের কথায় যাওয়া যাক। আপনারা অনেকেই এই কথাটা প্রায়শই শুনে থাকবে যে, বাসর রাতেই বিড়াল মারতে হবে। এই কথাটা হয়তো আপনার বন্ধু, না হয় দুলাভাই,না হয় ভাবি বলবে। আসুন জেনে নিই কেনো তারা এই কথা বলে।
আপনাকে যদি বন্ধ ঘরে একটি বিড়াল ছেড়ে দিয়ে কেউ বলে বিড়ালটি মেরে দেখা আর আপনি যদি বিড়ালটি মারার চেষ্টা করেন তাহলে দেখবেন আপনি সহজে মারতে পারছেন না। অনেক সময় লাগবে বিড়াল টিকে মারতে। ঠিক তেমনি আপনার বন্ধু,বড় দুলাভাই,ভাবি এটাই বোঝাতে চাই যে বাসর রাতে বেশি সময় ধরে বউ এর সাথে মিলন করতে হবে তাহলে আপনাদের সংসার সুখের হবে। তারা এই কথাটাই উল্টো করে বলে যে বাসর রাতে বিড়াল মারতেই হবে। বাসর রাতে কিছু কাজ বা করনীয় রয়েছে,তার মধ্যে প্রথম করনীয় রয়েছে।
বাসর রাতে প্রথম করনীয়ঃ আপনার স্ত্রী আপনার সাথে সারাজীবন থাকবে তাই তার সাথে শুরুটা যেনো ভালো ও মনের রাখার মতো হয় তার জন্য যথাসম্ভব চেষ্টা করতে হবে আপনাকে। আপনি বিয়ের দিন কাজ করার পর হয়তো ক্লান্ত থাকবেন তার পরেও বিশেষ ভাবে বলা আছে যে, আপনার এবং আপনার স্ত্রীর মিলন টা এমন ভাবে করুন যেনো সেই মিলন আপনার এবং আপনার স্ত্রীর সারা জীবন মনে থাকে। তাই বাসর রাতে ইসলামিক নিয়ম আছে যে দুজনে বাসর রাতে সহবাসের আগে অজু করে দুই রাকাত নফল নামাজ পড়তে হবে একসাথে।
তারপর নামাজ শেষে একসাথে আল্লাহর কাছে মোনাজাত করতে হবে। আল্লাহ কাছে বলতে হবে আপনি যেনো আপনার জীবন সঙ্গী কে নিয়ে সারাজীবন সুখে থাকতে পারেন। আরো বলবেন ( হে আল্লাহ আপনি আমার ও আমার দম্পতি কে সন্তান দান করবেন, এবং সে জেনো শয়তান থেকে মুক্ত থাকতে পারে। মুমিন হতে পারে। এভাবে নামাজের পর্ব শেষে আপনার স্ত্রী বিছানায় গিয়ে বসবে তারপর আপনি গিয়ে তার মুখের কাপড় সরিয়ে আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করবেন। ইসলামিক এসব কাজ শেষে আপনি বা আপনার স্ত্রী যদি ক্লান্ত না থাকে সে ক্ষেত্রে সহবাসে লিপ্ত হতে পারেন। তাছাড়া আপনার সঙ্গীর সাথে জীবনের কিছু গল্প বলতে পারেন তাতে আপনার স্ত্রী খুশি হবে।
বাসর রাতের নিয়ম কানুন
একজন অবিবাহিত নারী ও পুরুষের মনে বাসর রাত নিয়ে প্রশ্ন ও জিজ্ঞাসা থাকবে না তা কি করে সম্ভব। বর্তমানে প্রতিটা অবিবাহিত নারী ও পুরুষের মনে বাসর রাত নিয়ে অনেক প্রশ্ন রয়েছে। যেমন বাসর বাসর রাতের নিয়ম কানুন, রাতে কি করা উচিত, কি করলে স্ত্রী বা স্বামী খুশি হবে, কিভাবে দীর্ঘ সময় পার করা যাবে মিলনরত অবস্থায় এ সকল প্রশ্নের উত্তর সবাই জানতে চাই। এসব প্রশ্ন এমন একটি প্রশ্ন যা সবাইকে বলা সম্ভব হয় না। তাই আজকে আপনাদের মাঝে এসব গোপনীয় বিষয় নিয়ে আলোচনা করব। চলুন তাহলে বাসর রাতের নিয়ম কানুন সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
বাসর রাতের নিয়ম কানুনঃ দুইজন অবিবাহিত নারী ও পুরুষের মধ্যে বৈধ সম্পর্ক স্থাপন হয় বিয়ের মাধ্যমে। বিয়ের মাধ্যমে সম্পর্ক স্থাপন হচ্ছে বৈধ সম্পর্ক স্থাপনের। বিয়ের প্রথম রাতকে বলা হয় বাসর রাত বা ফুলশয্যার রাত। এই বাসর রাত বা ফুলশয্যার রাত কথাটা শুনলেই আমাদের সকলের মনে উৎসাহ জেগে ওঠে। তবে বেশি উৎসাহ জেগে ওঠেছেলেদের মাঝে। মেয়েদের তুলনায় ছেলেদের বাসর রাত নিয়ে উৎসাহ উত্তেজনা একটু বেশি থাকে।
সকল ছেলেরাই বাসর রাতে কি করবে না করবে এইসব বেশি ভাবতে থাকে। বাসর রাত সম্পর্কে ইসলামিক কিছু নিয়ম নীতি রয়েছে। এসব নিয়ম-নীতি আস্তে আস্তে আপনাদের মাঝে তুলে ধরবো। বাসর রাত আমাদের সবার জীবনে গুরুত্বপূর্ণ একটি রাত। বাসর রাত এমন একটি রাত যা জীবনে একবারও আসে। চলুন ইসলামিক নিয়মে বাসর রাতের নিয়ম কানুন জেনে নিই।
ইসলামিক নিয়মে বাসর রাতের নিয়ম কানুনঃ
- সর্বপ্রথম কাজ হচ্ছে, স্ত্রী যেন সুন্দরভাবে সজ্জিত অবস্থায় বাসর ঘরে প্রবেশ করে।
- ঘরে প্রবেশের পর গোলাপ দিয়ে দুজন দুজনকে বরণ করে নিতে হয়।
- যদি তারা চায় তাহলে দুজন দুজনাকে মিষ্টিমুখ করাতে পারে।
- বাসর রাতে স্বামী স্ত্রী দুজন দুজনাকে প্রতিশ্রুতি দেওয়া যেনো দুজন দুজনাকে ছোটখাটো বিষয় নিয়ে ছেড়ে চলে যেতে না হয়।
- দুজন দুজনার পরিবারকে সম্মান দেখানোর পরিকল্পনা করা বা প্রতিশ্রুতি দেওয়া।
- দুজনে তাদের জীবনের কিছু সুন্দর মুহূর্ত নিয়ে গল্প করা।
- ভবিষ্যৎ নিয়ে আলাপ সেরে নেওয়া। যেমন বাচ্চাকাচ্চার বিষয়, বাবা-মার সাথে কেমন ব্যবহার করবে সে বিষয়। আত্মীয়-স্বজনের সাথে কেমন আচার-আচরণ করবে সে বিষয়গুলো নিয়ে আলাপ আলোচনা করা।
- ছেলে যদি স্ত্রীকে মোহরানা পরিশোধ না করে সে ক্ষেত্রে স্ত্রীকে মোহরানা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া। মোহরানা অল্প সময়ের মধ্যেই পরিশোধ করা।
- দুজন বিবাহিত নারী পুরুষের উত্তম রাত হচ্ছে বাসর রাত। আর এই রাতকে স্মরণ করে রাখার জন্য নিজেদের ভালোবাসা দিয়ে দুজন দুজনকে জয় করা। তারা যদি ক্লান্ত না থাকে সেক্ষেত্রে তারা সহবাসে লিপ্ত হতে পারবে। সহবাস বা মিলনের আগে অবশ্যই দুজনে অজু করে এসে দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় করতে হবে। নামাজ শেষে দুজনে একসাথে আল্লাহর কাছে মোনাজাতে বুঝতে হবে। কোনভাবেই ফজরের নামাজ যেন কাজা না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
ইসলামে বাসর রাতের নিয়ম
বিয়ে হচ্ছে ধর্মীয় একটি পবিত্র বন্ধন। বিয়ে হওয়ার পর দুইজন অবিবাহিত পুরুষ ও মহিলা হালাল সম্পর্কে জড়ান। বিয়ে ছাড়া দুইজন অবিবাহিত নারী পুরুষ কখনোই হালাল সম্পর্কে জড়াতে পারেন না। বিয়ে একমাত্র উপায় স্বামী-স্ত্রীর হালাল মিলনের। বাসর রাত নিয়ে সকল মেয়েদের অনেক স্বপ্ন থাকে। তাই বাসর রাত নিয়ে সবারই আগ্রহ বেশি রয়েছে। ইসলামে বাসর রাতের নিয়ম রয়েছে অনেক। চলুন তাহলে জেনে নেয়া যাক।
১. বাসর রাতের দোয়াঃ আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা মিন খাইরিহা অখাইরি মা জাবালতাহা আলাইহি, অআউজু বিকা মিন সাররিহা অশার্রী মা জাবালতাহা আলাইহ।
অর্থাৎ, হে আল্লাহ আমি তোমার নিকট এর জন্য মঙ্গল ও এর মধ্যে তোমার সৃষ্ট প্রকৃতির মঙ্গল প্রার্থনা করছি। আর তোমার কাছে এর অমঙ্গল এর মাঝে তোমার সৃষ্টি কৃত অমঙ্গল হতে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। (সুনানু আবিদাউদ ২/২৪৮)
২. দুই রাকাত সালাত আদায় করাঃ বাসর রাতে স্বামী স্ত্রী দুজন একসঙ্গে দুই রাকাত নামাজ আদায় করতে হয়। নামাজ শেষ করে একসঙ্গে মোনাজাত করা।
৩. স্ত্রীর সঙ্গে স*হবাস এর সময় দোয়া পাঠ করাঃ দোয়াটি হল(বিসমিল্লাহ আল্লাহুম্মা জান্নিবনাশ শায়তান ওজান্নিবিস ছয় শায়তানা মা রাযাকতানা- মুসলিম/১৪৩৪)
৪. নিষেধ করা হয়েছে এমন জায়গা সময় থেকে বিরত থাকাঃ ঋতুবতী কোন নারীর সাথে কিংবা স্ত্রীর পেছন পথে সঙ্গম করা যাবে না।
উপোক্ত বিষয়গুলো মেনে বাসর রাত পালন করলে কোন রকম গুনাহ হবে না। আমরা সকলে চেষ্টা করব বাসর রাতে ইসলামী শরীয়ত মোতাবেক স্ত্রীর সঙ্গে সময় কাটানোর। তাহলে স্ত্রী অখুশি হবে না ও আপনার বরং নেকি হবে।
বা*সর রাতে নববধূ কিভাবে সজ্জিত হবে
বাসর রাত হচ্ছে সকল ছেলে ও মেয়েদের একটি মূল্যবান রাত। যা একজন পুরুষ বা মহিলার জীবনে এই রাত বারবার আসবে না। তাই এ রাত থেকে স্মরণীয় করতে মেয়েদের উচিত সুন্দর ভাবে বাসর ঘরে আসা। এজন্য তারা সজ্জিত হবে আসতে পারে। নববধূ মেহেদী ব্যবহার করতে পারে। হাতে মেহেদী ব্যবহার করলে তার স্বামী বেশি খুশি হতে পারে। স্ত্রী তার শরীরে অলংকার পরবে। শরীয়ত সম্মত ভাবে সেযুগুজে পরিষ্কার পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন কাপড় পড়ে সজ্জিত হবে। এভাবে স্ত্রী সজ্জিত হয়ে বাসর ঘরে স্বামীর সামনে আসবে। তাহলে দুজনের জন্য একটি স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
বাসর রাতে স্বামীকে খুশি করার উপায়
বাসর রাতে স্বামীকে খুশি করার জন্য আপনি চাইলে আপনার স্বামীকে ছোটখাটো কিছু উপহার দিতে পারেন। আপনার স্বামীর সাথে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে গল্প করতে পারেন। আপনার স্বামী যদি বাসর রাতে আপনার সাথে শারীরিক সম্পর্কে জড়াতে চাই তাহলে আপনার স্বামীকে অনুমতি দিন। তাহলে আপনার স্বামী খুশি হয়ে যাবে। তাছাড়া একটা বিষয় খেয়াল রাখবেন শারীরিক সম্পর্কের সময় আপনার স্বামী আপনাকে ঠিকঠাক ভাবে উপভোগ করতে পারে সে এই দিকে খেয়াল রাখবেন। তাহলেই দেখবেন বাসর রাতে আপনার স্বামী খুশি হবে।
স্বামী স্ত্রীর সহ*বাসের নিয়ম
সব কিছুরই নিয়ম-কানুন রয়েছে। তেমনি স্বামী স্ত্রী সহবাসের নিয়মও রয়েছে। চলুন জেনে যাও স্বামী স্ত্রীর সহবাসের নিয়ম গুলো।
- সহ*বাসের শুরুতেই নিয়ত করা।
- সহ*বাসের সময় আদর সোহাগ করা।
- সহ*বাসের সময় দোয়া করা।
- ইসলাম শরীয়ত মোতাবেক সহ*বাসের পজিশন অনুযায়ী সহবাস করা।
- স্ত্রী সহ*বাসের হারাম মেনে চলা।
- নিষিদ্ধ সময়ে সহ*বাস না করা।
স্বামী স্ত্রী সহ*বাসের নিয়মগুলো সংক্ষিপ্তভাবে তুলে ধরলাম। বিস্তারিত জানার প্রয়োজন হলে কমেন্টে জানিয়ে দিবেন। অন্য কোন আর্টিকেলে স্বামী স্ত্রী সহ*বাসের নিয়ম বিস্তারিত আলোচনা করব।
Leave a comment