পৃথিবীর সমস্ত প্রাচীন সাহিত্যের মতোই সংস্কৃত সাহিত্য কাব্য-মহাকাব্য এবং নাটকের প্রাধান্য লক্ষিত হয়। গদ্যের স্থান সেখানে কত সংকীর্ণ। পদ্যের মহাসমুদ্রে গদ্য যেন একটি ক্ষুদ্র দ্বীপ মাত্র। সংস্কৃত গদ্য সাহিত্যে যাঁরা বিচরণ করেছেন, তাঁদের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ হলেন কবি বাণভট্ট।

সমগ্র সংস্কৃত সাহিত্যের বিখ্যাত কবিদের নাম এবং সাহিত্য কীর্তি সম্পর্কে আমরা যতখানি পরিচিত, তাঁদের আত্মপরিচয় সম্পর্কে ততখানি নয়। এক্ষেত্রেও অবশ্য ব্যতিক্রম বাণভট। ‘হর্ষচরিত’ গ্রন্থের মধ্যে তিনি তাঁর আদি পুরুষের কাহিনি থেকে আরম্ভ করে ক্রম পরম্পরায় কয়েকজন কৃতবিদ্য পুরুষের কাহিনি বর্ণনা করে অবশেষে নিজের কথা বলেছেন। বাণের পিতামহ ছিলেন মহাত্মা অর্থপতি। অর্থপতির বারোজন পুত্রের মধ্যে অষ্টম পুত্র চিত্রভানু ছিলেন বাণের পিতা। শোণ নদের পশ্চিম তীরে ছিল তাঁদের আদি ভদ্রাসন ‘প্রীতিট’। তাকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠে ব্রাহ্মণ বিধান নামক একটি গ্রাম। এখানে আনুমানিক ৬০০ খ্রিঃ বাণের জন্ম। বাণ ছিলেন পিতামাতার শেষ বয়সের সন্তান। তাঁর জন্মের সঙ্গে সঙ্গে মাতার মৃত্যু হয় এবং চৌদ্দ বছর বয়সে পিতৃবিয়োগ হয়। অভিভাবকহীন বাণ অল্প বয়স থেকেই স্বেচ্ছাচারী, দুর্দান্ত এবং অবিনীত হয়ে উঠেছিল। তাঁর সঙ্গী সাথী ছিলেন অদ্ভুত সব পেশার মানুষ জন। কেউ ওঝা, কেউ চারণ, কেউ চিত্র শিল্পী, কেউ নতক, কেউ বা জুয়াড়ি। এই বিচিত্র দল নিয়ে বাণ একদিন দেশ ভ্রমণে বেরিয়ে পড়েন। নানান বিদ্যা এবং অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করে অবশেষে তিনি স্বগৃহে ফিরেও আসেন। ততদিনে তাঁর প্রতিভার খ্যাতি চারিদিকে ছড়িয়ে পড়েছে। অবশ্য এই প্রতিভার বিকাশ ঠিক কোনদিক থেকে ঘটেছিল সে সম্পর্কে তিনি আলোকপাত করেননি। যাইহোক সেই সময়ে তিনি রাজা হর্ষদেবের অনুগ্রহ লাভ করেন। এর পরেই তিনি তাঁর দুটি বিখ্যাত গ্রন্থ ‘হর্ষচরিত’ এবং ‘কাদম্বরী’ রচনা করেন।

বাণ রচিত ‘হর্ষচরিত’ আখ্যায়িকা কাব্য এবং ‘কাদম্বরী’ কথাজাতীয় কাব্য। আখ্যায়িকা এবং কথা-গদ্যকাব্যের দুটি শাখা। রচনা রীতির দিক থেকে এই দুই সাহিত্য ধারার মধ্যে বিশেষ কিছু পার্থক্য নেই। যা কিছু পার্থক্য আছে, তা হল বিষয়বস্তুতে। অখ্যায়িকার বিষয়বস্তু কোনো ঐতিহাসিক কাহিনি বা সত্য ঘটনা অবলম্বনে রচিত হয়। এই জাতীয় কাব্যে কবি আশ্বাস (অধ্যায়) থাকে এবং প্রতিটি আশ্বাসের আরম্ভের পূর্বে ছন্দরস শ্লোকের সাহায্যে বর্ণিতব্য বিষয়ে সূচনা থাকে। বাণভট্ট তাঁর সমকালীন নরপতি হর্ষবর্ধনের জীবনী অবলম্বনে হর্ষচরিত আখ্যায়িকাটি রচনা করেছিলেন। সমগ্র সংস্কৃত সাহিত্যে এটি হল একমাত্র অবলম্বনে হর্ষচরিত আখ্যায়িকাটি রচনা করেছিলেন। সমগ্র সংস্কৃত সাহিত্যে এটি হল একমাত্র খাঁটি আখ্যায়িকা। কথার বিষয়বস্তু কাল্পনিক, প্রধানত কবির স্বকল্পিত। কাল্পনিক বলেই কবি এখানে আপন প্রতিভাকে স্বচ্ছন্দ গতিতে প্রসারিত হওয়ার সুযোগ দিতে পারেন। এজাতীয় রচনা অখ্যায়িকার তুলনায় অনেক বেশি সরস হয়।

হর্ষচরিতের কাহিনি :

হর্ষচরিত আখ্যায়িকাটি একটি অসমাপ্ত কাব্য। এই কাব্যের প্রথম দু-তিনটি আশ্বাসে কবি আত্মপরিচয় দিয়েছেন এবং তারপর রাজা হর্ষবর্ধনের পূর্বপুরুষ পুষ্পভৃতির সময়কাল থেকে রাজবংশের কাহিনির কতকাংশ বর্ণনা করার পরেই কাব্যটি অকস্মাৎ সমাপ্ত হয়েছে। কাব্যের মধ্যে বিশেষভাবে প্রাধান পেয়েছে হর্ষবর্ধনের পিতা প্রভাকর বর্ধন, জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা রাজ্যবর্ধন, ভগিনী রাজ্যশ্রী এবং স্বয়ং হর্ষবর্ধনের কাহিনি। এদের সকলের জন্মকথা, রাজা প্রভাকর বর্ধনের রাজ্য শাসন ও পরলোক গমন, মৌখরী রাজবংশের রাজপুত্র গ্রহবর্মার সঙ্গে রাজ্যশ্রীর বিবাহ, মালবরাজ কর্তৃক গ্রহবর্মার মৃত্যু এবং রাজ্যশ্রীর বন্দিনীদশা, রাজ্যবর্ধনের মালব আক্রমণ এবং মালবরাজ্যের বন্ধু গৌড়াধিপতি শশাঙ্কের হাতে তার মৃত্যু, শশাঙ্কের বিরুদ্ধে হর্ষবর্ধনের যুদ্ধ যাত্রা, কারাগার থেকে রাজ্যশ্রীর পলায়ন এবং বিন্ধ্য পর্বতের অরণ্যে প্রবেশ করে অগ্নিতে আত্মাহুতি দানের চেষ্টা হর্ষবর্ধন কর্তৃক ভগ্নি উদ্ধার এবং ভ্রাতা-ভগিনীর মিলন এই হল অসমাপ্ত হর্ষচরিত কাব্যের বিষয়বস্তু।

‘হর্ষচরিত’ সংস্কৃত সাহিত্যের একমাত্র আখ্যায়িকা। বস্তুত কাশ্মীরি কবি কলহনের রচিত রাজতরঙ্গিণীর পূর্বে ইতিহাস অবলম্বনে কাব্য রচনার প্রচেষ্টা একমাত্র বাণভটেই করেছিলেন। শুধু তাই নয়, তিনি অত্যন্ত সাহসিকতার সঙ্গে তাঁর সমকালীন ঘটনাকে কাব্যের বিষয়বস্তু করেছেন। বাণভট্ট তাঁর এই কাব্যটির মধ্যে যথেষ্ট কল্পনারও আশ্রয় দিয়েছিলেন। তবুও তিনি তাঁর সমকালীন এবং পূর্বকালীন রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও সমাজজীবন চিত্রণে যথেষ্ট বিশ্বস্ততার পরিচয় দিয়েছেন। ইতিহাসের প্রামাণ্য কাহিনির সঙ্গে মিলিয়ে দিয়েছেন। সাধারণ মানবমানবীর হৃদয়ের সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনার চিত্রকে। ঐতিহাসিক কাহিনি হলেও হর্ষচরিতে চিত্রধর্মিতার অভাব নেই। ভারতীয় গ্রাম্য জীবনের অনবদ্য চিত্র তিনি যেমন এঁকেছেন তেমনি ফুটিয়ে তুলেছেন প্রকৃতির ভয়াল ভয়ংকর রূপ। বাণভট্টের ভাষা সমাস বহুল, তাই দুর্বোধ্য। সমালোচকগণ তাঁর সম্পর্কে যে অভিযোগ তুলেছেন তা একেবারে অস্বীকার করা যাবে না। ভাষার এই দুরুহতা সত্ত্বেও হর্ষচরিত আখ্যায়িকাটি কিন্তু একটি পরম আস্বাদনীয় গদ্য কাব্য।

কাদম্বরীর বিষয়বস্তু :

বাণভট্ট রচিত কাদম্বরী একটি কথাকাব্য। অনেকেই এটিকে কবির স্বকল্পিত রচনা বলে দাবি করেছেন। তবে এই দাবি বোধ হয় সম্পূর্ণ ঠিক নয়। কবি এই কাব্য রচনার প্রেরণায় পেয়েছিলেন গুণাঢ্যের পৈশাচী প্রাকৃতে রচিত বড়ঢকহা (বৃহৎ কথা) গ্রন্থ থেকে। অবশ্য করি নিজের কোথাও গুণাঢ্যের ঋণ স্বীকার করেননি। তাই শুধু অনুমানের ওপর নির্ভর করে বাণভট্টের মৌলিক কাহিনি রচয়িতার মর্যাদা থেকে বঞ্চিত করা যায় না। কাদম্বরী কল্পিত কাহিনি বলে কবি ইচ্ছেমতো এর শাখা প্রশাখা বিস্তৃত করেছেন। এখানে জন্ম-জন্মান্তরের কাহিনি বর্ণিত হয়েছে। একটি মূল কাহিনির মধ্যে একাধিক কাহিনি স্থান পেয়েছে। অবশ্য সেই কাহিনিগুলোকে ঠিক শাখা কাহিনি বলা যাবে না।

কাদম্বরীর মূল গল্পটি এইরূপ : বিদিশার রাজা শুদ্রকের রাজ্যপাটে মন নেই, বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে আমোদ-আহ্লাদে দিন কাটান। একদিন এক চণ্ডাল কন্যা বৈশম্পায়ন নামক এই শুক পাখি নিয়ে এল তার রাজসভায়। রাজার ইচ্ছায় পাখিটি তার আত্মকাহিনি বলতে আরম্ভ করল বিন্ধ্য পর্বতে পম্পা সরবতের তীরে একটি শিমূল গাছে শুক পাখিটি তার পরিবারের সঙ্গে থাকত। শরব বাহিনির অত্যাচারে পাখিটির পরিবারে সবাই মারা যায়। মৃতপ্রায় পাখিটিকে হরিমুণি নিয়ে যান তাঁর ত্রিকালজ্ঞ পিতা জাবালি মুনির নিকট। জাবালি মুনি পাখিটিকে দেখে বলেন যে, সে তার পূর্বজন্মের অবিনয়ের ফল ভোগ করছে। এখান থেকেই শুরু হয় শুক পাখির পূর্বজন্মের কাহিনি। উজ্জয়ীনির রাজ্য তারাপীড়ের অভিন্ন হৃদয়ের বন্ধু ও মন্ত্রী ছিলেন শুকনাস। একই দিনে তারাপীড় এবং শুকনাসের ছেলে হল, নাম যথাক্রমে চন্দ্রাপীড় ও বৈশম্পায়ন। যথা সময়ে তাদের বিদ্যাভ্যাস শেষ হল। ইতিমধ্যে তারাপীড় কুলুত রাজ্য জয় করে। রাজকন্যা পত্রলেখাকে বন্দিনী করে। নিয়ে এলেন। রাজকন্যা ক্রমশ কুমার চন্দ্রাগীড়ের সখি হয়ে উঠল। এরপর চন্দ্রাপীড় যৌবরাজ্য অভিষিক্ত হলেন এবং দিগ্বিজয়ে বেরুলেন। সঙ্গে বৈষম্পায়ন ও পত্রলেখা। তিন বছর পর কৈলাসের কাছে কিরাত নগর জয় করে। কুমার এক শিব মন্দিরে প্রবেশ করে দেখতে পান এক তপঃক্লিষ্টা দিব্যদর্শনা শ্বেতবর্ণা কুমারীকে। চন্দ্রাপীড়ের আগ্রহে কুমারী তার দুঃখের কাহিনি বলতে শুরু করেন। কুমারীর নাম মহাশ্বেতা। তিনি গন্ধর্ব রাজহংস ও অপ্সরা গৌরীর একমাত্র কন্যা। মহর্ষি শ্বেতাকেতুর পুত্র পুণ্ডরীককে তিনি বিবাহ করেছিলেন। পরে একদিন অচ্ছোদ সরোবরের তীরে সাক্ষাৎকারের সময় মহাশ্বেতার সামনে পুণ্ডরীকের মৃত্যু হয়। সেই থেকেই মহাশ্বেতার এই তপস্বিনী বেশ। মহাশ্বেতার প্রিয়সখী কাদম্বরী সখীর দুঃখে তিনিই বিবাহ করলেন না বলে স্থির করলেন। তাই মহাশ্বেতা চন্দ্রাপীড়কে সঙ্গে নিয়ে সখীকে বিয়েতে সম্মত করানোর জন্য যান। প্রথম দর্শনেই চন্দ্রাপীড় ও কাদম্বরী পরস্পরের প্রতি আকৃষ্ট হন। পরের দিন কাদম্বরীর কাছ থেকে বিদায় নিয়ে চন্দ্রাপীড় অচ্ছোদ সরোবরের তীরে তাঁর সঙ্গী সাথীদের নিকট চলে আসেন। কিন্তু খবর আসে কাদম্বরী অসুস্থ। চন্দ্রাপীড় কাদম্বরীর নিকট উপস্থিত হন এবং বুঝতে পারেন এটা তার দেহের নয় মনের অসুখ। তবে তিনি কাদম্বরীকে কোনোরকম প্রণয় সম্ভাষণ না করেই রাজধানীতে ফিরে যান। কিছুদিন পরেই কাদম্বরীর প্রণয়বার্তা এসে পৌঁছায় চন্দ্রাপীড়ের কাছে তিনি তখন অচ্ছোদ সরোবর তীরে উপনীত হন এবং শুনতে পান মহাশ্বেতার অভিশাপে বন্ধু বৈশম্পায়ন প্রাণ ত্যাগ করেছেন। এই সংবাদে চন্দ্রাপীড়ের প্রাণ সংশয় দেখা দেয় এবং কাদম্বরীও প্রাণ ত্যাগ করেছেন। অবশেষে দৈববাণীতে সকলের প্রাণ রক্ষা হয়। মহর্ষি জাবালের মুখে এই কাহিনি শুনে শুকপাখি তার পূর্ব স্মৃতি ফিরে পায়। এক শুক পাখিটিই আসলে ছিল বৈশম্পায়ন এবং যে শূদ্রক রাজার কাছে সে লালিত পালিত হয়েছিল তিনি ছিলেন চন্দ্রাপীড়। শুক পাখি স্মৃতি ফিরে পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তার এবং শুদ্রক রাজার মৃত্যু হয় আর অচ্ছোেদ সরোবরের তীরে পুনর্জীবন গ্রহণ করেন। চন্দ্রাপীড় ও বৈশম্পায়ন তথা পুণ্ডরীক। চন্দ্রাপীড়ের সঙ্গে কাদম্বরীর ও পুণ্ডরীকের সঙ্গে মহাশ্বেতার মিলন সাধিত হল।

কাদম্বরী শুধু সংস্কৃত সাহিত্যের নয় বিশ্বসাহিত্যে একটি তুলনাহীন সৃষ্টি। এর বিষয় বস্তুর মধ্যে দুই জোড়া কাহিনি পাশাপাশি এগিয়ে যাবার প্রত্যেক কাহিনির নায়ক-নায়িকার তিনটি করে জন্ম বর্ণিত হয়েছে। বাণের এই রচনা সম্পর্কে বলা হয় বাণোচ্ছিষ্টং জগৎ সর্বম” অর্থাৎ জগতের এমন কিছু নেই বা বাণ স্পর্শ করেননি। একজন কবি সম্পর্কে এর চাইতে বড়ো প্রশংসা আর কিছুই হতে পারে না। কাদম্বরীর প্রধান সম্পদ এর চিত্রধর্মিতা এবং অলংকার প্রয়োগ। বিভিন্ন অবস্থা বর্ণনায় বাণ এতটাই নৈপুণ্য দেখিয়েছেন যে পাঠকালে পাঠকের চোখের সামনে সেই পরিবেশের একটা ছবি ভেসে ওঠে। তবে এখানেও ভাষার জটিলতা রয়েছে। তাই কোনো কোনো সমালোচক কাদম্বরীকে “ভরতীয় অরণ্য” আখ্যা দিয়েছেন। তবে সেই অরণ্যে প্রবেশ করলে তার রূপ-রস-শব্দ-শব্দ-গন্ধ স্পর্শে সকলেই মুগ্ধ হন। আধুনিক কালের বিচারে বাক্যটিকে হয়তো উপন্যাস বলা যাবে না। ঠিকই, কিন্তু নিঃসন্দেহে রোমান্সধর্মী কাব্যে আখ্যা দেওয়া যেতে পারে।

সংস্কৃত গদ্য কাব্যের তিন মহারথী হলেন দণ্ডী, সুবন্ধু এবং বাণভট্ট। দণ্ডী রচিত দুখানি গ্রন্থ দশকুমারচরিত এবং ‘অবন্তী সুন্দরী কথা। সুবন্ধু রচিত বাসবদত্তা’। এই তিনটি গ্রন্থের তুলনায় বাণভট্টের হর্ষচরিত এবং কাদম্বরী যে সর্বাংশে শ্রেষ্ঠ একথা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। বিশেষ করে কাদম্বরী কাব্যে তিনি একই সঙ্গে গদ্যে ও কাব্যের সংমিশ্রণ ঘটিয়ে যে বিস্ময়কর প্রতিভার পরিচয় রেখেছেন, তা এক কথায় অনবদ্য। স্বয়ং রবীন্দ্রনাথও বাণভট্টের কাব্যপ্রতিভাকে স্বীকার করে নিয়েছেন। জনৈক সমালোচকের ভাষায় বলা যায়, “বাণের ভাষার দুর্বোধ্যতা ভেদ করে তাঁর কাব্যজগতে প্রবেশ করতে পারলে তাঁর পর্যবেক্ষণ শক্তি ও বর্ণনা কৌশলে মুগ্ধ হতে হয়…. মনোভঙ্গিতে তিনি রোমান্টিক কল্পনার অধিকারী অথচ বর্ণনায় তিনি ক্লাসিক কবির মতো পুঙ্খানুপুঙ্খ ও ঐশ্বর্য পূর্ণ ছবি আঁকতে ভালোবাসেন। শুধু সংস্কৃত সাহিত্যের নয় সমগ্র বিশ্বসাহিত্যের রোমান্স রচয়িতাদের মধ্যে বাণভট্ট অন্যতম।”