আনুমানিক খ্রীঃ দশম শতকের দিকে মাগধী অবহট্ঠ ভাষার খােলস ছেড়ে বেরিয়ে এলাে নব্য ভারতীয় আর্যভাষার অন্যতম শাখা বাঙলা, যার স্বরূপ আমরা প্রত্যক্ষ করেছি সমকালেই রচিত চর্যাপদে। তারপর প্রায় সুদীর্ঘ সহস্র বৎসর অতিক্রান্ত হয়েছে। দীর্ঘকালের পথ-পরিক্রমায় ভাষা-দেহে যেমন ক্রম-পরিণতির লক্ষণসমূহ ফুটে উঠেছে, তেমনি সাহিত্য-ক্ষত্রেও দেখা দিয়েছে নানা বৈচিত্র্য এবং পরিপূর্ণতার লক্ষণ। জীবদেহে যেমন কালপ্রভাবে বাল্য-কৈশাের-যৌবন-আদি লক্ষণ পরিস্ফুট হয়, আমরা বাঙলা সাহিত্যের ক্ষেত্রেও তাদৃশ লক্ষণের স্ফূরণ লক্ষ্য করেছি, তার সঙ্গে আরাে লক্ষ্য করেছি সাহিত্যে সমসাময়িক যুগ-চেতনার চিহ্ন। এই কারণে কালকে ভিত্তি করেই সাহিত্য-ইতিহাসের যুগ বিভাগ কল্পিত হয়েছেযেমনটি অপর সকল দেশেও হয়ে থাকে।
ডঃ দীনেশচন্দ্র সেনই সর্বপ্রথম বাংলা সাহিত্যের যুগবিভাগ কল্পনা করেছিলেন তাঁর প্রখ্যাত বঙ্গভাষা ও সাহিত্য গ্রন্থে। তিনি কালানুক্রমিকভাবে বাঙলা সাহিত্যের ইতিহাস রচনা করলেও বিভিন্ন যুগকে চিহ্নিত করেছিলেন নিম্নোক্ত ক্রমে :-
১. হিন্দু-বৌদ্ধযুগ: (ক) শূন্যপুরাণ; (খ) নাথগীতিকা : গােরক্ষবিজয়; (গ) কথাসাহিত্য; (ঘ) ডাক ও খনার বচন।
২. গৌড়ীয় যুগ বা শ্রীচৈতন্য-পূর্ব সাহিত্য: (ক) অনুবাদ শাখা : কৃত্তিবাস, সঞ্জয়, কবীন্দ্র পরমেশ্বর ও শ্রীকর নন্দী, পরাগল খাঁ, মালাধর বসু; (খ) লৌকিক সাহিত্য : কানা হরিদত্ত, বিজয়গুপ্ত, নারায়ণদেব, জনার্দন; (গ) পদাবলী শাখা : চণ্ডীদাস, বিদ্যাপতি; (ঘ) কুলজী সাহিত্য।
৩. শ্রীচৈতন্য সাহিত্য বা নবদ্বীপে প্রথম যুগ: (ক) পদাবলী সাহিত্য : চণ্ডীদাস, গােবিন্দদাস, জ্ঞানদাস, বলরামদাস, মুসলমান কবিগণ; (খ) চরিত শাখা; (গ) অনুবাদ গ্রন্থ।
৪. সংস্কার যুগ: (ক) লৌকিক শাখা ও চণ্ডী; (খ) অনুবাদ শাখা।
৫. কৃষ্ণচন্দ্রীয় যুগ বা নবদ্বীপে দ্বিতীয় যুগ: (ক) কাব্যশাখা : বিদ্যাসুন্দর, আলাওল, কালীকীর্তন; (খ) গীতিশাখা : কবিওয়ালা প্রভৃতি।
শ্রদ্ধেয় দীনেশবাবু কালকে ভিত্তি করে পরে বিষয়ভিত্তিক উপবিভাগ কল্পনা করলেও একালের ঐতিহাসিকগণ এই যুগবিভাগ ও নামকরণকে মেনে নেন নি। এর প্রধান কারণ তিনটি। প্রথমতঃ কোন আভ্যন্তর লক্ষণ বা যুগচেতনা এই কাল-বিভাজনের ভিত্তি না হওয়ায় এ বিভাগ বিজ্ঞানসম্মত নয়; দ্বিতীয়তঃ, এখানে কখনাে ধর্ম, কখনাে ব্যক্তি এবং কখনাে বা মনােভাবকেই যুগের নিরিখ বলে গ্রহণ করায় যুগ-বিভাগের মানদণ্ড অস্থির; এবং তৃতীয়তঃ, পরবর্তীকালে যুগলক্ষণ-চিহ্নিত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কিছু কিছু গ্রন্থের আবিষ্কারে পূর্বকৃত কাল-বিষয়ক ধারণার অনেক তথ্যই মিথ্যা বলে প্রমাণিত হয়েছে। যেমন- দীনেশবাবু হিন্দু-বৌদ্ধযুগ তথা প্রাচীন যুগে রচিত বলে যে সকল গ্রন্থের নাম উল্লেখ করেছেন, ওদের কোনটিই এত প্রাচীন নয় বলেই একালের ঐতিহাসিক ও ভাষাবিজ্ঞানিগণ সুদৃঢ় অভিমত ব্যক্ত করেছেন। বাঙলা সাহিত্যের দিচিহ্ন নির্দেশক চর্যাপদ এবং ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ তখনাে পর্যন্ত আবিষ্কৃত হয়নি বলে এদের প্রেক্ষাপটে অপর গ্রন্থের আলােচনা সম্ভবপর ছিল না—ফলে ঐ আলােচনা অসম্পূর্ণ এবং ভ্রমপ্রমাদপূর্ণ বলেই দীনেশবাবুকৃত যুগবিভাগ পরিত্যক্ত হয়েছে।
পরবর্তীকালে আচার্য সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় এবং সুকুমার সেন প্রমুখ মনীষিগণের প্রাপ্ত তথ্যাদির বিচার-বিবেচনায় বাঙলা সাহিত্যের ইতিহাসকে নিম্নোক্ত প্রধান তিনটি যুগে বিভক্ত করেছেন :-
প্রাচীন যুগ
খ্রীঃ দশম থেকে দ্বাদশ শতক বিস্তৃত প্রাচীন যুগে বাঙলা ভাষায় রচিত সাহিত্যগ্রন্থ পাওয়া গেছে মাত্র একটিই—‘চর্যাপদ’। কারাে কারাে মতে, এই যুগটির সূচনা আরাে পূর্বে অষ্টম শতকেই। এতে অন্ততঃ ২৪ জন বৌদ্ধসিদ্ধাচার্যের রচিত প্রায় ৫০টি পদ পাওয়া যায়। এর রচনা-বিশ্লেষণে মনে হয় যে ধর্মীয় আবেগের বশেই সহজ-সাধন পদ্ধতি বিষয়ে সঙ্কেতে কবিরা কিছু বলে গেছেন—সজ্ঞানে সাহিত্যসৃষ্টি তাদের অভিপ্রেত ছিল না। সাধারণ পাঠকের নিকটও এর মূল্য রয়েছে—লেখকের ব্যক্তিগত জীবনের স্পর্শ, খণ্ড কবিতার পূর্বাভাষ এবং সমাজ সচেতনতার লক্ষণ চর্যার পদগুলিতে ফুটে উঠেছে। এছাড়া ভাষাতাত্ত্বিক কারণে গ্রন্থটি গবেষকদের নিকট অমূল্য বিবেচিত হয়ে থাকে।
যুগসন্ধি কাল: ১১৯৮ খ্রীঃ থেকে ১২০৫ খ্রীঃ সময়কালের মধ্যে বাঙলাদেশে প্রথম তুর্কী আক্রমণ ঘটে। স্বভাবতঃই রাজনৈতিক বিপর্যয় সমাজেও প্রভাব বিস্তার করে। সমগ্র দেশ জুড়ে এই অশান্তি চলছিল অন্ততঃ ১৩৫০ খ্রীঃ অবধি। এই কালে রচিত কোন বাঙ্লা সাহিত্যের পরিচয় পাওয়া না গেলেও, অনুমান করা হয় যে এই সময়সীমার মধ্যেই পরবর্তী যুগের মঙ্গলকাব্যের একটি সংক্ষিপ্ত পাঁচালী আকারের রূপ তৈরি হয়েছিল। হয়তাে, কানা হরিদত্ত, মানিক দত্ত প্রভৃতি একালে বর্তমান ছিলেন। এ কারণে এই পর্বটিকে ‘মানস-প্রস্তুতির যুগ’ বলে অভিহিত করা চলে।
মধ্যযুগ
আঃ ১৩৫০ খ্রীঃ পর্যন্ত ব্যাপ্ত বাক্কায় মুসলিম-শাসনকালটিই সাধারণভাবে মধ্যযুগ নামে অভিহিত হয়ে থাকে। তুর্কী-আক্রমণ যুগে আত্মরক্ষার তাগিদে বাঙালী যে কূর্মবৃত্তি গ্রহণ করেছিল, দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হবার পর তারা আস্তে আস্তে খােলস ছেড়ে বেরিয়ে এলাে। ইতােমধ্যে দেশের উচ্চবর্ণের হিন্দুরা কতকাংশে তাদের কূপমণ্ডুকতা ত্যাগ করে দেশের নিম্নবর্ণের হিন্দু বা আদিবাসীদের সঙ্গে মিলনটিকে সহজতর করে নিয়েছিল। ফলে বহু অনার্য দেব-দেবী, ধর্মীয় ভাবনা এবং আচার-আচরণ উচ্চবর্ণীয় হিন্দুসমাজেও প্রবেশাধিকার লাভ করায় নবাগত দেব-দেবী বা আচার-আচরণকে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করবার তাগিদে তারা এক নতুন জাতের সাহিত্য সৃষ্টি করলেন—এর নাম মঙ্গলকাব্য। এই যুগের সাহিত্যিকরা ছিলেন প্রধানতঃ জীবন-বিমুখ ও পরপ্রত্যাশী; বস্তুনিষ্ঠ জীবনযাত্রায় জটিলতা কম থাকায় এঁদের মধ্যে যুক্তিবুদ্ধির চর্চা তেমন ছিল না, ফলে আবেগসর্বস্ব কাব্যই ছিল তাদের সাহিত্যের বাহন।
মহাপ্রভু চৈতন্যদেবের আবির্ভাব মধ্যযুগের ভাবনা কামনায় অসাধারণ প্রভাব বিস্তার করায় চৈতন্য-পূর্ব ও চৈতন্যোকত্তর সাহিত্যে উল্লেখযােগ্য পার্থক্য সূচিত হওয়ায় ঐতিহাসিকগণ বাঙ্লা সাহিত্যের মধ্যযুগকে দুটি পর্যায়ে বিভক্ত করেন-একটি চৈতন্য-পূর্বযুগ বা আদিমধ্যযুগ, অপরটি চৈতন্যোক্তর যুগ বা অন্ত্যমধ্যযুগ।
আদিমধ্যযুগ বা চৈতন্য-পূর্বযুগ: আদিমধ্যযুগের সাহিত্যকীর্তি ছিল অপ্রচুর। এ যুগের বিশেষ উল্লেখযােগ্য রচনা বড়ু চণ্ডীদাস-রচিত ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’, যাতে সমসাময়িক ভাষার নিদর্শন প্রায় অক্ষত রয়েছে। বাংলা সাহিত্যের একটি নতুন ধারার প্রবর্তনও ঘটে এই যুগে ‘মনসামঙ্গল’ কাব্যে। মনে হয়, বাঙ্লাদেশের তিন প্রান্তে তিনজন কবি একই বিষয় নিয়ে প্রায় সমকালেই লেখনী ধারণ করেছিলেন, এঁরা হলেন বরিশালের বিজয়গুপ্ত, ময়মনসিংহের নারায়ণদেব এবং ২৪ পরগণার বিপ্রদাস পিপলাই। এছাড়া এ যুগে অনুবাদ সাহিত্যেরও সূত্রপাত হয়েছিল। কৃত্তিবাস রচিত ‘রামায়ণ’ এবং মালাধর বসু-রচিত ভাগবত-এর অনুবাদ ‘শ্রীকৃষ্ণবিজয়’ যুগের দু’টি উল্লেখযােগ্য সাহিত্য। একালের সাহিত্যে ধর্মীয় চেতনাই প্রবল, ব্যক্তি-চেতনার কোন পরিচয় পাওয়া যায় না। তবে কবিরা যে সজ্ঞানে সাহিত্য রচনায় ব্রতী হয়েছিলেন, তা স্পষ্ট। বিদ্যাপতি এবং দ্বিজ চণ্ডীদাসও এই যুগেই বর্তমান ছিলেন।
অন্ত্যমধ্যযুগ বা চৈতন্যোত্তর যুগ: চৈতন্যদেবের আবির্ভাব সমগ্র দেশের পক্ষেই একটি যুগান্তকারী ঘটনা। বাঙালীর সমাজ-জীবনে তার আবির্ভাব যেমন একটা বিরাট পরিবর্তন সৃষ্টি করেছিল, তেমনি বাঙলা সাহিত্যেও এনেছিল একটা ভাববিপ্লব। সমাজের নিম্নস্তরের মানুষও ক্রমশঃ সমাজে একটা মর্যাদার আসন লাভ করেছিল। চণ্ডীমঙ্গল কাব্যে ব্যাধসন্তান কালকেতু পেল নায়কের ভূমিকা। ধর্মমঙ্গল’ আদি কাব্যেও এই প্রভাবের পরিচয় পাওয়া যায়। এই যুগে অসংখ্য মঙ্গলকাব্য রচিত হয়েছিল; অনুবাদ শাখাও হল বহুধা বিস্তৃত অবশ্য তা প্রধানত সীমাবদ্ধ রইলাে রামায়ণ, মহাভারত ও ভাগবতের মধ্যেই। শ্রীচৈতন্যদেবের জীবন কাহিনীকে অবলম্বন করে রচিত হ’ল কয়েকটি উৎকৃষ্ট জীবনী-সাহিত্য। অবশ্য এ যুগের সর্বাধিক উল্লেখযােগ্য সৃষ্টি রাধাকৃষ্ণের লীলাকাহিনী অবলম্বনে রচিত পদাবলী সাহিত্য। সমগ্র প্রাচীন ও মধ্যযুগের কোন সাহিত্যধারাকে যদি বিশ্বের দরবারে পরিবেশনের যােগ্য বলে প্রতিষ্ঠিত করতে হয়, তবে সেখানে একমাত্র এই পদাবলী সাহিত্যই প্রথম দাবিদার হবে। কোন একটি ধর্মীয় গােষ্ঠীর রচনা সত্ত্বেও এই পদাবলী সাহিত্যের মানবিক এবং সার্বজনীন আবেদনকে অস্বীকার করা চলে না। এই অন্ত্যমধ্যযুগেই সাহিত্যে জীবনমুখিতারও পরিচয় পাওয়া যায়। “চৈতন্যোত্তর যুগের শেষভাগে যে কাব্যধারা পরিপূর্ণভাবে জীবনমুখী হইয়া উঠিয়াছিল সেই লৌকিক কাব্যশাখার একদিকে গীতিকাব্য-সাহিত্য অপরদিকে শাক্তপদাবলী। অশিক্ষিত অথবা অর্ধশিক্ষিত পল্লীকবিদের হাতে রচিত গীতিকাব্যগুলি পরিমার্জিত কিংবা সুসংস্কৃত নহে, কিন্তু বাস্তব অভিজ্ঞতাসমৃদ্ধ এবং জীবন রসে পূষ্ট। শাক্ত-পদাবলী বৈষ্ণব পদাবলীর অনুকরণে রচিত হইলেও ইহাতে বাস্তব-জীবনের সঙ্গে যােগ ঘনিষ্ঠতর। এই লৌকিক সাহিত্যেরই আর একটি ধারা মুসলমানী সাহিত্য বা কিসসা সাহিত্য। এই ধারায় উপকথা-রূপকথা জাতীয় কাহিনী প্রাধান্য লাভ করিলেও যে এইগুলি জীবনরসে সমৃদ্ধ তাহাতে কোন সন্দেহ নাই।” (বাঙলা সাহিত্যের পরিচয় ও অধ্যাপক পরেশচন্দ্র ভট্টাচার্য)।
যুগসন্ধি কাল: ১৭৬০ খ্রীঃ মধ্যযুগের কবি রায়গুণাকর ভারতচন্দ্রের মৃত্যু এবং এর তিন বছর পূর্বেই ১৭৫৭ খ্রঃ পলাশীর যুদ্ধ ভারতে মুঘল-শাসনের কার্যত অবসান ঘটিয়েছে। এই সময় থেকে কার্যতঃ বাঙলার শাসনভার ইস্ট ইণ্ডিয়া কোম্পানী’ নামক এক ইংরেজ বণিক কোম্পানীর হাতে চলে যায়। ১৮৫৭ খ্রীঃ সিপাহি বিদ্রোহের পর এই শাসনভার ইংলণ্ডের পার্লামেন্টের হাতে ন্যস্ত হয়। এই সুদীর্ঘ শতাব্দী কাল ছিল বাঙালীর জীবনে আর এক যুগসন্ধি কাল। এই কালের মধ্যে কোন উল্লেখযােগ্য সাহিত্য সৃষ্টি না হলেও ফোর্ট উইলিয়ম কলেজ, হিন্দু কলেজ এবং শ্রীরামপুরে মুদ্রণযন্ত্র প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে পরবর্তী নতুন যুগসৃষ্টির প্রস্তুতি দেখা দিয়েছিল। বাঙ্লা গদ্যের আবির্ভাব ঘটে এই যুগে। আর কাব্যের আসরকে মাতিয়ে রেখেছিল কবিগান, যাত্রা, টপ্পা, পাঁচালি, তর্জা, খেউড় প্রভৃতি অপেক্ষাকৃত স্থূল ও অমার্জিত সাহিত্য।
আধুনিক কাল
১৮০০ খ্রীষ্টাব্দে মুদ্রণযন্ত্রের প্রতিষ্ঠা এবং ফোর্ট উইলিয়ম কলেজ প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়েই আধুনিক যুগের সৃষ্টি। পাশ্চাত্যের প্রভাবে সাহিত্যের বহিরঙ্গ ও অন্তরঙ্গ উভয়দিকেই নবজীবনের আবির্ভাব সূচিত হয়। বাঙলা গদ্যের বিভিন্ন দিক্ গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ, সাময়িক পত্র, বাঙলা নাটক-প্রহসন, বা গীতিকাব্য ও মহাকাব্য—সবই এই নতুন ধারার সৃষ্টি। সাহিত্যে জীবনচেতনা, সমাজচেতনা, ব্যক্তি-স্বাতন্ত্র্য, মন্ময়তা-আদি লক্ষণ পরিস্ফুট হয়ে ওঠে। এ যুগের শ্রেষ্ঠ লেখকদের মধ্যে আছেন রামমােহন রায়, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, মাইকেল মধুসূদন, বঙ্কিমচন্দ্র, রবীন্দ্রনাথ, শরৎচন্দ্র প্রভৃতি মহৎ শিল্পীবৃন্দ। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর আধুনিক বাঙলা সাহিত্যে আরাে সৃজনশীলতা লক্ষ্য করা যায়—এই যুগ এখনাে সচল ধারায় প্রবাহিত।
Leave a comment