অথবা, বাউল সাধনার সারবস্তু কী? এ সাধনার স্তরগুলো সংক্ষেপে লেখ

উত্তর: বাউল একটি তাত্ত্বিক ধর্মসম্প্রদায়। বাউলদের ধর্মের তত্ত্ব ও দর্শন আছে, সাধন পদ্ধতি আছে। বাউল সাধনার এ স্তরকে তিনটি ভাগে ভাগ করা যায়। যথা: (১) প্রবর্ত (২) সাধক (৩) সিদ্ধি। নিচে এ তিন স্তরের সংক্ষিপ্ত পরিচয় দেওয়া হলো:

  • ১. প্রবর্ত: বাউল সাধনার প্রথম স্তর প্রবর্ত। প্রবর্ত অবস্থায় সাধক প্রেমের অমৃতরূপ লাভ করতে পারে। এজন্য তাকে সুষুম্নায় সঞ্চিত শুক্ররাশি ইড়ামার্গে মস্তিষ্ক চালনা করতে হয়।
  • ২. সাধক: বাউল সাধনার দ্বিতীয় স্তরকে সাধক নামে অভিহিত করা হয়। শৃঙ্গারের রতি স্থির করলেই সাধক হওয়া সম্ভব। এজন্য তাকে মস্তিষ্কে সঞ্চিত শুক্ররাশিকে পিঙ্গলা পথে চালনা করে সুষুম্নায় আনয়ন করতে হয়। ফলে বাউল সাধকগণ সাধনায় অমৃতরূপ লাভ করতে পারে।
  • ৩. সিদ্ধি : বাউল সাধনার সর্বশেষ স্তর হচ্ছে সিদ্ধি। উপর্যুক্ত দুটি স্তরকে পূর্ণাঙ্গভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারলেই সিদ্ধি লাভ করা যায়। অর্থাৎ ইড়া-পিঙ্গলা এবং সুষুম্নায় শুক্র সঠিকভাবে পরিচালনা করতে পারলেই পরমানন্দ লাভ হয়। ফলে দেহের গ্লানি, ক্লান্তি দূর হয় এবং দেহে সর্বদা প্রফুল্ল ও সজীবতা বিরাজ করে।

এভাবে বাউল সাধনার তিনটি স্তরকে আত্মস্থ করে একজন সাধক রতি শাস্ত্রের স্থায়ীভাবসমূহ লাভ করে জোয়ারের জলের মতো উচ্ছ্বসিত হয়ে সাধনার পূর্ণাঙ্গ স্তরে উপনীত হয়। সুতরাং ইড়া পিঙ্গলা এবং সুষুম্নার চক্রাবৃত্তে সে তারুণ্যামৃত ধারায় স্নাত হয়।