অথবা, কি কব সেই পড়শীর কথা ও তার হস্ত-পদ-স্কন্ধ-মাথা নাই রে। এখানে ‘পড়শী’ বলতে কী বুঝানো হয়েছে?

উত্তর : বাউল সাধনার এক প্রধান দিক মনের মানুষের অনুসন্ধান। এই মনের মানুষ অর্থাৎ পরমাত্মা বা ঈশ্বর। এখানে ‘পড়শি’ অর্থে সেই মনের মানুষ বা পরমাত্মাকে বুঝানো হয়েছে। লালন এখানে সেই পরমাত্মার সন্ধান লাভে ব্যাকুল হয়েছেন। আরশিনগরের পড়শি যিনি তিনিই লালনের মনের মানুষ। এই মানুষের অন্বেষণে ব্যাকুল লালন বলেছেন তাকে একবার দেখায় মনোবাঞ্ছা তাঁর। সেই ‘পড়শি’ সম্বন্ধে বলতে গিয়ে কবি এখানে বলেছেন যে, সেই ‘পরশির’ কোন আকার নেই; অর্থাৎ ঈশ্বরের নিরাকার রূপটি এখানে প্রকাশ পেয়েছে। ঈশ্বর বা পরমাত্মার অবস্থান আকাশ-পাতালে সর্বত্র। এই পড়শির সান্নিধ্য পেলে লালন লাভ করতেন পরম শান্তি। কিন্তু সাধনা সিদ্ধি হয় না বলে তাদের মধ্যে লক্ষ যোজন ব্যবধান।

সুতরাং লালন মানস যেন, পরমাত্মার সন্ধান, সাহচর্য ও মিলনের জন্য ব্যাকুল।