ঊনবিংশ শতাব্দীর বাংলা সাহিত্যে দুই উল্লেখযোগ্য সাহিত্যিক ইন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় ও ত্রৈলোক্যনাথ মুখোপাধ্যায়। জীবনের মর্মোৎসারিত জটিল সমস্যার উপস্থাপনা ও বিচার বিশ্লেষণেই বাংলা কথা সাহিত্য গুরুগম্ভীর হয়ে উঠেছিল। তাতে চলমানতার ধারা প্রবর্তিত করেছিলেন এরা দুজনে। এই পথে দুইজনেই ছিলেন দুইটি পৃথক শিল্পস্বভাবের প্রবর্তক।
নকশাজাতীয় রচনা বিষয় অবলম্বনে বিভিন্ন গল্প উপন্যাস লেখা শুরু করেন ইন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়৷ ইন্দ্রনাথ বঙ্কিম মণ্ডলীর অন্তর্ভুক্ত লেখক ছিলেন। বঙ্কিমচন্দ্র ও তাঁর সমসাময়িক লেখকদের যে বিশিষ্ট প্রবণতা ও মতবাদ দেখা দিয়েছিল তার প্রভাব ইন্দ্রনাথের মধ্যেও লক্ষ্য করা যায়। ঊনবিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগের রেনেসাঁস সুলভ ভাবোদ্বেলতা শতাব্দীর শেষভাগে এসে অনেকটা সুস্থ হয়েছিল। পাশ্চাত্ত্য আলোকে আমরা আবার আমাদের সত্তাকে নুতনতর বিচারে চিনে নিতে চেষ্টা করি। সেই সময় সেই আলোকে অতীতের অন্ধকার ও বর্তমানের মোহ অপসারিত হল। কিন্তু সমাজ-জীবনের সর্বক্ষেত্রে সামঞ্জস্যবোধ ও মানসিক ভারসাম্য অক্ষুণ্ণ ছিল না। অনেকস্থলেই পূর্ববর্তী যুগের পাশ্চাত্য মোহের প্রতিক্রিয়া স্বরূপই যেন সনাতন ভাবাদর্শের প্রতি নির্বিচার আনুগত্য দেখা দিল। ধর্মের বাহ্য ও ব্যবহারিক দিক, তার সমস্ত রীতিনীতি আচার অনুষ্ঠান অধিকাংশ লেখকের চিন্তা ও চেতনাকে অধিকার করে। লেখকগণ অনেকেই নব যুক্তি ও বিচারবোধের দ্বারা প্রাচীনসমাজের রীতিনীতিগুলি পুনঃপ্রতিষ্ঠা চান।
ইন্দ্রনাথও এই লেখকগোষ্ঠীরই বিশ্বস্ত প্রতিনিধি ছিলেন। সেইজন্য তাঁর লেখাতেও প্রগতিবাদী সমাজরূপের প্রতি তীব্র উপহাস ও পুরাতন বিধিব্যবস্থার জন্য সুগভীর মমত্বই ধরা পড়েছিল। ব্রাষ্মধর্মের উদারও উন্নত আদর্শ, বিধবা বিবাহ পুনঃপ্রচলনের প্রচেষ্টা জাতিভেদ দূরীকরণের জন্য আন্দোলন স্ত্রী-স্বাধীনতার ব্যাপক প্রভাব—এইসব বিষয় নিয়ে তিনি তাঁর ব্যঙ্গবিদ্রূপের আসর জমিয়েছেন।
তাঁর ‘কল্পতরু’ বাংলায় প্রথম বঙ্গ উপন্যাস। বঙ্কিমচন্দ্র বঙ্গদর্শনে এর প্রশংসা করেছিলেন। কল্পতরুর বাস্তবচিত্র উপভোগ্য কিন্তু রুচি সর্বত্র স্বাস্থ্যকর হয়নি। তাতে প্রধানত ব্রাহ্মধর্মাবলম্বী শিক্ষিত ব্যক্তির প্রতি ব্যঙ্গবাণ নিক্ষিপ্ত হয়েছে। ইন্দ্রনাথের পর্যবেক্ষণশক্তি ছিল প্রখর। বঙ্কিমচন্দ্র তাঁর মুচিরাম গুড়ের জীবন-চরিত্রে ইন্দ্রনাথকেই অনুসরণ করেছেন বললে অত্যুক্তি হয় না।
সমালোচক বলেছেন ‘নক্শা জাতীয় রচনারই এক পরিণতি হচ্ছে ব্যঙ্গ-উপন্যাস। কিন্তু এই শ্রেণির প্রায় সব উপন্যাসই সম্পূর্ণত না হউক অংশত ক্যারিকেচারের পর্যায়ে পড়িয়াছে। ইন্দ্ৰনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত ‘কল্পতরু’ (১২৮১) এই ধরনের উপন্যাসের প্রথম এবং উৎকৃষ্ট নিদর্শন। কল্পতরুর বিষয়বস্তু সর্ব্বত্র ভদ্রোচিত নয়, তবু কতকটা বাস্তবচিত্র হিসাবে মূল্যবান বটে।
গ্রন্থরচনার উদ্দেশ্য ও প্রকৃতি সম্বন্ধে ইন্দ্রনাথ লিখেছেন ‘রহস্য ও রসিকতা একপদার্থ নয়। আমি সরস রহস্য লিখতে পেরেছি কিনা বলতে পারি না। কিছু শুধু রসিকতার অনুরোধে কিন্তু লিখিনি। বঙ্গদর্শনে বঙ্কিমচন্দ্র বইটির প্রশংসা করেছেন। তথাপি স্বীকার করতে হবে উপন্যাস হিসাবে কল্পতরু সার্থক নয়। নব্য হিন্দুত্বের (Neo- Hinduism) পক্ষ হতে বিশেষ করে ব্রাহ্মদের বিরুদ্ধেই ইন্দ্রনাথ বিষোদগার করেছিলেন। কাহিনির ধারা লঘু হাস্যরসাত্মক নয় গুরু করুণরসাত্মক। লেখকের অহং (ego) এত প্রধান যে তিনি বারবার তাঁর উপন্যাসের ঘটনা ও চরিত্রের মধ্যে এসে উপন্যাস ও পাঠকের পারস্পরিক যোগসাধনে বাধা দিয়েছেন। কল্পতরু সম্বন্ধে ড. শ্রীকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, “কল্পতরুর যে রসকিতা তা ঔপন্যাসিক উৎস হতে প্রবাহিত নয়, তা উপন্যাসের অগ্রগতি রোধকারী অবান্তর মন্তব্যের সন্নিবেশ। আমরা যখন লেখকের রসিকতায় হাসি তখন উপন্যাসের কথা আমাদের মনে থাকে না।”
ইন্দ্রনাথের ব্যঙ্গপদ্য উল্লেখযোগ্য। ‘উৎকৃষ্ট কাব্যম্’ ‘ক্ষুদ্ররচনা’ ‘ভারত উদ্ধার এগুলি সুন্দর ব্যঙ্গকাব্য। ‘ভারত উদ্ধার’ পঞ্চম সর্গাত্মক ও অমিত্রাক্ষর ছন্দে রচিত। প্রথম সর্গে প্রস্তাবনা ও ‘সরস্বতী স্তব’, দ্বিতীয় সর্গে সঙ্কল্প, তৃতীয় সর্গে মন্ত্রণা এবং চতুর্থ ও পঞ্চম সর্গে যথাক্রমে উদ্যোগ ও উদ্ধার। ভারত উদ্ধার কাব্যে তৎকালীন যুগের রাজনৈতিক আন্দোলনের হাস্যজনক দিকটা ফুটে উঠেছে।
‘ভারত মাতা’ ও ‘ভারত উদ্ধার’ বুলি সেই সময় পদ্যে ও গদ্যে অবিরত প্রচারিত হয়ে রুচিশীল পাঠকের পীড়াদায়ক হয়েছিল। ইন্দ্রনাথের কাব্যে তারই প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। ইন্দ্রনাথের ছদ্মনাম ছিল “পঞ্চানন্দ”। এই ছদ্মনামে তিনি বহু চুটকী রচনা করেন।
ড. শ্রীকুমার বন্ধ্যোপাধ্যায় বলেছেন, “ঊনবিংশ শতকের শেষপাদে ভারতের রাজনৈতিক ও বাংলার সামাজিক জীবনে যে অসঙ্গতি অসামঞ্জস্যের সুপ্রচুর সমাবেশ হইয়াছিল, পঞ্চানন্দের শ্যেনদৃষ্টি তাহাদের মধ্যে কাহাকেও বাদ দেয় নাই।”
ইন্দ্রনাথের ব্যঙ্গ দোফলা ছুরির মতো তার এক ফলা ব্রিটিশ শাসন ও অপর ফলা ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের শূন্যগর্ভ ভাববিলাসের বিরুদ্ধে যুগপৎ ‘শাণিত আঘাত হেনেছে।’ ‘ভারত উদ্ধার’ ও ‘ভলেন্টিয়ারী কাব্য’ তার প্রমাণ।
ইন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সর্বাপেক্ষা প্রসিদ্ধ গ্রন্থ ভারত উদ্ধার কাব্য। এই কাব্যে তাঁর ব্যঙ্গ নিপুণতা পূর্ণ প্রকাশিত। এটি মধুসূদনের মেঘনাদবধের রচনারীতির প্যারডি। মেঘনাদবধের অনুকরণে আরম্ভে বাণীবন্দনা আছে। অমিত্রাক্ষর ছন্দের নিপুণ অনুকরণ— এই দিক হতে এটি জগবন্ধু ভদ্রের ছুছুন্দরী বধের অপেক্ষা উৎকৃষ্টতর। মধুসূদনের অনুকরণে প্রচুর নবাবিষ্কৃত নামধাতু প্রয়োগ করেছেন। বর্দাস্তিতে হস্তিল দ্বিতীয়িলে ভোতাইয়ে, শীতলিয়া পরাস্তিব কাসাইল-হাঁচাইল ইত্যাদি। কাব্যটির পরিকল্পনায় উদ্ভট মৌলিকত্ব রয়েছে। এর পরিবেশ রচনার মাঝে মাঝে আকস্মিক anticlimax সৃষ্টি করে হাস্যরস সৃষ্টি করা হয়েছে।
ভারত-উদ্ধার পাঁচটি সর্গে বিভক্ত।
প্রথম সর্গে প্রস্তবনা ও সরস্বতী স্তব। তবে অন্যান্য কবিদের মতো তিনি মৃত প্রাচীন কবিগণের বন্দনা করে গ্রন্থারম্ভ করা পছন্দ করেন না কারণ তিনি বাঙালি বলে পরপদবন্দনা বর্দাস্তিতে পারেন না।
দ্বিতীয় সর্গে সংকল্প। নায়ক বিপিনকৃষ্ণ ও তার বন্ধু কামিনীকুমার ভারত উদ্ধার করতে কৃতসংকল্প হয়েছে।
তৃতীয় সর্গে যন্ত্রণা। শনিবার আর্য কার্যকরী সভার বৈঠকে বিপিন প্রস্তাব পেশ করল,
সত্বর যাহাতে
পরাস্তি ইংরেজে রণে বিনা রক্তপাতে
আমাদের পক্ষে, হয় ভারত উদ্ধার
উপায় তাহার অদ্য হৌক বিবেচিত।
করতালি দ্বারা সভাস্থ সকলে বিপিনকৃষ্ণকে অভিনন্দন করল। কামিনীকুমার উঠে বলেন,
দণ্ডাইনু দ্বিতীয়িতে, ভদ্রলোকগণ
সসার প্রস্তাব যাহা করিল বিপিন।
চতুর্থ সর্গে উদ্যোগ। প্রত্যুষে তোপ পড়বার সঙ্গে সঙ্গে বঙ্গীয় নেতারা শয্যাত্যাগ করে
কোঁচন কাপড় কেহ করি পরিধান,
পরিয়া পিয়ান গায় কোঁচান উড়ানী
বুকের উপরে বাঁধি ফুল উঁচু করি,
ইজের চাপকান কেহ কার্পেটের টুপি,
যাহার যেমন ইচ্ছা সাজিয়া উল্লাসে
ভারত-উদ্ধার ব্রতে উৎসৃজিল তনু,
বাহিরিল গৃহ হতে।
কেউ কাঠ কাটার জন্যে চলল সুন্দরবনে, কেউ উত্তরবঙ্গে গেল বাঁশের সন্ধানে। আবার অনেক গেল পশ্চিমে বস্তা বস্তা ছাতু ও লঙ্কা চালান দিতে। ছাতু নিয়ে বিপিনকৃষ্ণ কোনোরকম সীমান্ত প্রদেশের ঘাঁটি পার হয়ে অশেষ কৌশলে সুয়েজ খালের ধারে গিয়ে সেখানে ছাতুর বস্তা গুদামজাত করে কলিকাতায় ফিরে এল। এদিকে এই ব্যাপক মহা আয়োজনের কথা ইংরেজরা বিন্দুবিসর্গও জানতে পারেনি। সুদরি কাঠের বাঁটওয়ালা হাজার হাজার বঁটি এবং বাঁশের চোঙ্গায় লক্ষ লক্ষ পিচকারি তৈরি হচ্ছে। তার পর চিৎপুরের খালধার হতে কেল্লা পর্যন্ত সুড়ঙ্গ কাটা হল এবং তাতে লঙ্কার বস্তা ভরা হল। চুপি চুপি নিশিযোগে সমস্ত কাজ হয়ে গেল। কেউ জানতেও পারল না। বাজারের পটকা কিনে ফেলে সলিতাগুলি খুলে ফেলা হল।
পটকা লঙ্কার স্তূপে মিশাইয়া দিয়া,
রক্ষিল সতের সূত্র সূড়ঙ্গের মুখে।
পঞ্চম সর্গ উদ্ধার। প্রভাতে বিরস মুখ বীর বিপিন পত্নীর কাছে বিদায় চাইতে গিয়ে কেঁদে ফেলল। পত্নী সান্ত্বনা দিয়ে বলে,
কি দুঃখে বা কান্দ?
নাহিক চাকুরী, তাই যাবে কি বিদেশে
করিতে অন্নের চেষ্টা, করিয়াছ মনে?
কাজ কি তোমার গিয়া এত ক্লেশ যদি
পাও তুমি মনে নাথ। কাটনা কাটিয়া
খাওয়াইব ঘরে বসি, ভাবনা কি তার?
অবশ্যই কোনো মতে কেটে যাবে।
চোখের জল মুছে বিপিন বলে
তা নয় প্রেয়সী,
স্বদেশ-উদ্ধার কল্পে বাহিরিব আজি,
করিব বিচিত্র রণ ইংরেজের সনে,
শেষে পরাস্তিব তারে।
গৃহিণী বলে,
বলি প্রাণ নাথ—
দেশ ত দেশেই আছে কি তার উদ্ধার ?
এতই অমূল্য ধন স্বাধীনতা যদি
নিতান্তই দিবে যদি সে ধন কাহারে,
আমাদেরই দাও নাথ, লব শিরঃ পাতি,
আমি তব চিরদাসী।
বিপিন বলে, আমাদের কৌশলের যুদ্ধ, ভয়ের কিছু নেই। শুনে পত্নী জিজ্ঞাসা করে, তবে তোমার চক্ষে জল কেন। বিপিন উত্তর করল ‘যাত্রাকালে নেত্রজল বাঙ্গালি কল্যাণ’। তখন গৃহিণী বলে।
নিতান্তই যাবে যদি হৃদয়বল্লভ
নিতান্ত দাসীর কথা না শুনিবে যদি
(ফুকারি কাঁদিয়া এবে উঠিল বিপিন)
আলু ভাতে ভাত তবে দিই চড়াইয়া
খাইয়া যাইবে যুদ্ধে। বিপিন সম্মত।
অবশেষে বঙ্গবীরেরা কৌশলযুদ্ধে অবতীর্ণ হল। বিপিনের পূর্ব নির্দেশ মতো সুয়েজ খালে ছাতুর বস্তা ফেলা হয়েছে এবং তাতে খালের জল শুকিয়ে গেছে, জাহাজে করে ইংরেজের পালাবার পথ বন্ধ। বঙ্গবীর কেহ বঁটি হাতে কেহ বা পিচকারিতে বালি-গোলা জল নিয়ে রণে অগ্রসর হলেন এবং ইংরেজ সৈন্যের চোখে বালি মেশানো জল পিচকারি করে ছুঁড়তে লাগল৷ বিস্ময়ের জড়তা কেটে গেলে ইংরেজ সৈন্য প্রথমে থেমে গেলেও কিন্তু পড়ে সুড়ঙ্গের সলিতায় আগুন দিয়ে যুদ্ধার্থে অগ্রসর হল। লঙ্কার ও পটকার স্তূপে আগুন লাগলে বিষম কাণ্ড শুরু হল।
প্রবল লঙ্কার ধূম প্রবেশি অরাতি
নাসারন্ধ্রে-গলে, খক খক খকে
কাসাইল শত্ৰুদলে ফ্যাচ ফ্যাচ ফ্যাচ
হাঁচাইল ভয়ঙ্কর কাতারিল সবে।
বঁটি হস্তে শামলা-ঢাল-ধারী উকিল সৈন্যের কাছে ইংরেজ পরাজিত হল। শান্তির প্রস্তাব করলে
উকিল সম্মতি দিল, হইল নিয়ম
দেশে না যাইবে কেহ ইংরেজ যতেক
অনুমতি না লইয়া ; থাকিবে ভারতে
ভৃত্যভব, ভারতের করিবেক সেবা।
যে যেমন আছে এবে রহিবে তেমনি।
দেশ স্বাধীন হয়ে গেল। আলোচ্য কাব্যের নামকরণ থেকেই কবির ব্যঙ্গের মূল লক্ষ্য সহজেই বোঝা যাবে। জাতীয় আন্দোলনের মহৎ ও আবেগরঞ্জিত দিক নিয়ে অনেকেই কাব্য লিখেছেন কিন্তু ইন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় ওই আন্দোলনের অসার ও অবাস্তব দিক নিয়ে রাজনৈতিক আন্দোলনকে ব্যঙ্গ করেছেন। সম্ভবতঃ তাঁর প্রাচীন সংস্কারবদ্ধ মন এই আন্দোলনের সার্থকতা সম্বন্ধে সন্দিহান ছিল।
Leave a comment