‘কপালকুণ্ডলা’ রোমান্সধর্মী উপন্যাস আলোচনা করে বুঝিয়ে দাও।

বাংলা উপন্যাসের প্রথম সার্থক স্রষ্টা বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (১৮৩৮-৯৪)। তার হাতেই বাংলা উপন্যাস প্রকৃত উপন্যাস হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। বঙ্কিমচন্দ্রের দ্বিতীয় উপন্যাস ‘কপালকুণ্ডলা’। কপালকুণ্ডলা উপন্যাসের বিষয়বস্তু হলো উপন্যাসের নায়ক নবকুমার সমুদ্র দর্শনের উদ্দেশ্য তীর্থযাত্রীদের নিয়ে একটি নৌকায় আরোহণ করে। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত তাকে নির্জন বনে নির্বাসিত হতে হয়। বনের মধ্যে একাকী বিচরণ কালে নবকুমার শবের পূজারি কাপালিকের পালিত কন্যা কপালকুণ্ডগুলার দেখা পায়। কাপালিক নবকুমারকে বলি দিতে গেলে কপালকুণ্ডলা তাকে মুক্ত করে এবং দু’জনে বিবাহপূর্বক লোকালয়ে পালিয়ে আসে। সন্ত্রীকে নবকুমার বাড়িতে ফিরলে পথের মধ্যে পূর্বের স্ত্রী পদ্মাবতীর সাথে তাদের সাক্ষাৎ ঘটে। শ্বশুরালয়ে ফেরার পর কপালকুণ্ডলার মধ্যে একটি সংসার বৈরাগী ভাব দেখা দেয় এবং বিভিন্ন কারণে তার সাথে নবকুমারের মতানৈক্য দেখা দেয়। এ সময় মতিবিবিও রাজরাণী হওয়ার স্বপ্ন ভঙ্গ হওয়ায় নবকুমারের প্রতি ঝুঁকে পড়ে এবং কপালকুণ্ডলার অনিষ্ট করতে মনস্থির করে। অবশেষে কাপালিকও দৈব আজ্ঞা পালনে কপালকুণ্ডলাকে বলি দিতে তার খোঁজে আসে। নবকুমারের বাড়ির নিকটবর্তী বনের মধ্যে মতিবিবি ও কাপালিক ষড়যন্ত্রে মেতে উঠে। এ পর্যায়ে পুরুব ছদ্মবেশী মতিবিবি কপালকুণ্ডলাকে কাপালিকের হাত থেকে বাঁচানোর সিদ্ধান্ত নেয় এবং তাকে বনের মধ্যে ডেকে আনে। এতে নবকুমার কপালকুণ্ডলার চরিত্র সম্বন্ধে সন্দিহান হয়ে উঠে এবং কাপালিকের উসকানিতে তাকে বলির কাজে সহায়তা করতে উদ্যত হয়। পরিশেষে উভয়ের ভুল বুঝাবুঝির অবসান হলেও ততক্ষণে কপালকুণ্ডলা উত্তাল তরঙ্গের মধ্যে পতিত হয় এবং নবকুমারও ঝাঁপিয়ে পড়ায় দু’জনের সলিল সমাধি ঘটে।

বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ উপরের লেখায় কোন ভুল থাকে তাহলে দয়া করে আমাদেরকে কমেন্ট করে জানাবেন আমরা সেটা ঠিক করে দেওয়ার চেষ্টা করবো, ধন্যবাদ।