Courtesy and politeness are the basic principle
which directs human life smoothly.
শিষ্টাচার : আভিধানিক অর্থে রুচিপূর্ণ ভদ্র ব্যবহারকে শিষ্টাচার বলে । শিষ্টাচার’ শব্দটির মধ্যেই এর সম্পূর্ণ তাৎপর্য লুক্কায়িত। শিষ্টাচার শব্দটিকে ভাঙলে যে দুটি অংশ পাওয়া যায় তা হলাে : শিষ্ট + আচার = শিষ্টাচার; এর অর্থ বিনীত, সংযত ও শশাভন আচার-ব্যবহার। অর্থাৎ, ভদ্রতা ও বিনম্র আচরণের যৌক্তিক মিলনের নামই শিষ্টাচার বা সৌজন্যতা। আত্মীয়-অনাত্মীয়, পরিচিত-অপরিচিত সকলের সঙ্গে প্রীতিপূর্ণ, রুচিসম্মত ব্যবহারই শিষ্টাচার । শিষ্টাচারে সকলেই মুগ্ধ হয় । শিষ্টাচার শুধু বাইরের মার্জিত ব্যবহারই নয়, এর সাথে মিশে আছে ভদ্রতার সামাজিক রীতি অনুসরণ এবং সুজনের মহৎ হৃদয়ের গভীর উষ্ণ স্পর্শ। আরও আছে নিবিড়ভাবে উৎসারিত অন্তর সৌন্দর্যের বিকশিত মহিমা।
মানবজীবনে শিষ্টাচারের গুরুত্ব : দেহের সৌন্দর্য পােশাক-আশাক-অলংকারে, কিন্তু আত্মার সৌন্দর্য সৌজন্য-শিষ্টাচারে। মানুষ। যতদিন অরণ্যচারী ছিল, ততদিন শিষ্টাচার বা সৌজন্যবােধ প্রকাশের প্রয়ােজনবােধ করেনি। যখন থেকে মানুষ সমাজবদ্ধ হলাে, তখন থেকে শিষ্টাচার ও ভদ্রতাবােধের প্রয়ােজন অনুভূত হলাে। শিষ্টাচার কেবল আমাদের ব্যক্তিজীবনের সৌন্দর্যই নয়, আমাদের সমাজজীবনেরও গৌরবজনক প্রভাবমুকুট। শিষ্টাচারের গুণেই মানুষের সঙ্গে মানুষের যেকোনাে সম্পর্ক রাখা সম্ভবপর হয়। বড়াে ও বয়স্কদের সম্মান করা, সকলকে আচরণে তুষ্ট করা, ঔদ্ধত্যকে পরিহার করা এবং সবার সঙ্গে প্রীতিময় সম্পর্ক গড়ে তােলাই হলাে। মানবিক বৈশিষ্ট্য। মার্জিত রুচি ও সুন্দর মনের পরিচয় দিতে হলে কথাবার্তায় ও আচার-আচরণে আমাদের নম্র ও বিনয়ী হতে হবে। শিষ্টাচার ও সৌজন্য সামাজিক মানুষের এক দুর্লভ ঐশ্বর্য । যে সমাজ শিষ্টাচারকে যতটা সাদরে গ্রহণ করে সে সমাজ ততটা সভ্য । উন্নত জাতি তথা উন্নত সভ্যতা শিষ্টাচারেরই অবদানপুষ্ট । ফুল যেমন বাতাসে তার সুবাস ছড়ায় তেমনি মহৎ ব্যক্তির শিষ্টাচার প্রকাশ। পায় তার ব্যবহারে । সামাজিক সম্প্রীতি বজায় রাখতে শিষ্টাচার অনন্য ভূমিকা পালন করে।
শিক্ষাজীবনে শিষ্টাচারের তাৎপর্য : ছাত্রজীবন মানবজীবনের সর্বোৎকৃষ্ট সময় এবং উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ গড়ার প্রস্তুতিপর্ব বা ভিত্তি স্থাপনকাল। এরই ওপর নির্ভর করে একজন শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ জীবনের সফলতা ও ব্যর্থতা। পরবর্তী জীবনের গতি-প্রকৃতি ছাত্রজীবনের চরিত্র-গঠন ও পরিকল্পনা অনুযায়ী নিয়ন্ত্রিত হয়। এ সময় শুধু পুথিগত শিক্ষা নয়, শিষ্টাচার ও সৌজন্য শিক্ষারও যথার্থ কাল । শিষ্টাচার ও সৌজন্যের ছোঁয়াতেই ছাত্র হয় বিনীত, ভদ্র ও সংযত । ছাত্রজীবনে যে গুরুজনদের শ্রদ্ধা করতে শিখল না, যার উদ্ধত ব্যবহারে শিক্ষক বিরক্ত, যার রূঢ় অমার্জিত আচরণে সহ-শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ-বেদনাহত, পরবর্তী কর্মজীবনে তার একই আচরণের পুনরাবৃত্তি ঘটে। তখন সমাজ ও দেশের জন্য সে হয় অশুভ শক্তি, অকল্যাণের মূর্ত প্রতীক। হতাশা, ব্যর্থতার তিল তিল দংশন-জ্বালায় সে নিজেকে নিঃশেষ করে । ছাত্রজীবনই মানুষের সুকুমারবৃত্তি লালনের শুভক্ষণ । আর শিষ্টাচার ও সৌজন্য হলাে তার মনুষ্যত্ব অর্জনের সোপান। এরই মধ্যে রয়েছে নিজেকে সুন্দর ও সার্থকতায় পরিপূর্ণ করে তােলার মহাশক্তি। ছাত্রজীবনে শিষ্টাচারের প্রকাশ ঘটে পােশাক-পরিচ্ছদে। তাই পােশাক-পরিচ্ছদে সুরুচির পরিচয় থাকতে হবে । শিষ্টাচার-সৌজন্য প্রকাশের জন্য ছাত্রদের কিছু হারাতে হয় না, কোনাে অর্থ ব্যয় করতে হয় না, এতে কায়িক শ্রমও দিতে হয় না। শুধু দরকার হয় অভ্যাস আর সুশিক্ষা। সে অভ্যাস নৈতিক শিক্ষার আদর্শে জীবন গঠনের পরিশীলিত অনুশীলন। যার ফলে মহৎ ও সমৃদ্ধ জীবন বিকাশের পথ প্রশস্ত হয়। বিনয়ী ভদ ছাত্র শুধু শিক্ষকের স্নেহই কেড়ে নেয় না, সে পায় শিক্ষকের আশীর্বাদ, পায় তার সাহায্য । আর সেজন্য মনীষীদের পথ অনসরণ করে শিক্ষার্থীদের মহৎ অঙ্গীকারে জীবনকে কুসুমের মতাে বিকশিত করে তুলতে হবে । এমন জীবনকসম বিকাশে শিষ্টাচার। পুষ্পদণ্ড ও সৌজন্য পাপড়ির ভূমিকা পালন করে। শিষ্টাচারহীন শিক্ষা সুশিক্ষা নয়, কেননা শিক্ষার চড়ান্ত ফল বা পরিণতি হলাে। সহনশীলতা- যা একমাত্র শিষ্টাচার চর্চার মাধ্যমেই আত্মস্থ করা সম্ভব ।
সামাজিক দৃষ্টিতে শিষ্টাচার : ক্রমাগত বিবর্তনের ধারায় জ্ঞান-বিজ্ঞানে চরম উৎকর্ষ সাধিত একুশ শতকে এসে আমরা একটু মানব। সভ্যতার দিকে ফিরে তাকাতে চাই। সভ্যতার দেনা-পাওনার হিসাবে করলে আমরা দেখতে পাই, সভ্যতা আমাদের উন্নত জীবন। ব্যবস্থার সাথে অমূল্য ধন শিষ্টাচার উপহার দিয়েছে এবং সভ্যতা টিকিয়ে রাখতে শিষ্টাচারই হলাে মানুষের শ্রেষ্ঠতম সম্পদ। কেবল এর জন্যই আমরা সুসভ্য মানুষ হিসেবে তথা সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব হিসেবে গর্ববােধ করতে পারি । সমীক্ষায় দেখা গেছে, যে সমাজ যত সভ্য, তার লােক-ব্যবহার তত মার্জিত, সদ্ভাবমূলক এবং সুরুচিব্যঞ্জক। কিন্তু সেই লােক-ব্যবহার কেবল রীতিনীতির মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। সামাজিক অনুষ্ঠানে সৌভ্রাতৃত্ব ও সৌষ্ঠব রক্ষার্থে কতকগুলাে নিয়ম অনুসরণ করতে হয় তাকে রীতি বলে । কিন্তু ভদ্রতা বা শিষ্টাচার রীতিমাত্র নয়; রীতি কেবল বাইরের অভ্যাস, তাতে অন্তরের স্পর্শ থাকে না। আর হৃদয়ানুভূতিহীন অভ্যাস ভণ্ডামির নামান্তর। শিষ্টাচার আত্মা থেকে উৎসারিত মাধুর্য, শােভন হৃদয়ের অকৃত্রিম সৌন্দর্য। সামাজিক দৃষ্টিকোণ থেকে শিষ্টাচারের গুরুত্ব ব্যাপক। দলবদ্ধ সমাজব্যবস্থায় রীতি বা সংস্কারের শৃঙ্খলে আমাদের জীবন যাপিত হলেও মৌলিক শিষ্টাচার আমাদের পালন করতেই হয়। আত্মীয়তার বন্ধন অটুট রাখতে সৌহার্দ ও সম্প্রীতির বলয় সৃষ্টিতে শিষ্টাচারের তাৎপর্য অপরিসীম।
শিষ্টাচার অর্জনের উপায় : ইংরেজিতে একটি প্রবাদ আছে ‘Courtesy costs nothing but buys everything.’ কিন্তু এই শিষ্টাচার কীভাবে অর্জন করা যায়? হ্যা, আশৈশব আত্মসংযম ও মার্জিত প্রকাশভঙ্গির অনুশীলনের দ্বারা শিষ্টাচার অর্জন করা সম্ভব। তারপরও আত্যন্তিক স্পষ্টবাদিতার সঙ্গে শিষ্টাচারের মৌলিক পার্থক্য রয়েছে । স্পষ্টবাদিতার দোহাই দিয়ে ইতরতা বা রূঢ়তার অস্ত্র-প্রয়ােগ সামাজিক শালীনতাবােধকে পীড়িত করে । তথাকথিত স্পষ্টবাদীর দল লােক-সমক্ষে নিজেদের অসাধারণরূপে জাহির করার ঘৃণ্য লােভ সংবরণ করতে না পেরে সামাজিক শিষ্টাচারকে পদদলিত করে অত্যন্ত রূঢ় কথা বলে ফেলে। অথচ সেই অপ্রিয় সত্য বাক্যটি রূঢ়-স্বরে না বলে মার্জিত ভঙ্গিতে প্রকাশ করতে পারলে আত্মিক সমুন্নতি প্রকাশ পায় । আর তার জন্য প্রয়ােজন শিষ্টাচার । শিষ্টাচারের গুণে মানুষের হৃদয়ে অতি সহজেই জায়গা করে নেওয়া যায় ।
শিষ্টাচার ও খােশামােদ-বৃত্তি : দ্ৰতা হলাে সব মানুষের প্রতি সমান দৃষ্টি, আর খােশামুদির দৃষ্টি কেবল নিজের প্রতি নিবদ্ধ। সৌজন্যবােধ নিজেকে অপেক্ষমাণ রেখে পরের সুবিধা আগে করে দিতে তৎপর; অন্যদিকে, খােশামােদ বা তৈল বৃত্তি বােঝে শুধু। নিজের সুবিধা। তৈলবাজের উদ্দেশ্যই থাকে আত্মসুখ ও আত্মসমৃদ্ধি। কিন্তু শিষ্টাচার বা সৌজন্যবােধ সৌষ্ঠবমণ্ডিত, সরল ও সুন্দর। তৈল-বৃত্তি সৌষ্ঠবহীন, কুটিল ও কুৎসিত। শিষ্টাচার বিশ্বমুখীনতায় উজ্জ্বল আর খােশামােদ-বৃত্তি আত্মমুখীনতায় অন্ধ ।
চক্ষুলজ্জা ও শিষ্টাচার : চক্ষুলজ্জা নামে একটি সামাজিক উপসর্গ শিষ্টাচারের বেনামিতে লােক-সমাজে প্রচলিত আছে। চক্ষুলজ্জার খাতিরে অসত্যকে সত্য বলে স্বীকার করা একটি গুরুতর সামাজিক ব্যাধি। শিষ্টাচারের সঙ্গে দৃঢ়তার মিশ্রণই এই ব্যাধির সঠিক চিকিৎসা। এদেশে অমায়িক এবং লােকপ্রিয় মানুষের খুবই অভাব। তাই আমাদের সমাজে এখনও শিষ্টাচার নামক স্বভাবটি যথার্থভাবে গড়ে ওঠেনি। তাছাড়া দারিদ্র্য, অশিক্ষা, স্বেচ্ছাচারিতা ও অপরিকল্পিত জীবন-যাপনের ফলে আমাদের সমাজব্যবস্থায় শিষ্টাচার বা সৌজন্যবােধের সংস্কৃতি খুব একটা প্রসারতা লাভ করেনি । শুনতে আপত্তিকর হলেও সত্য যে, শিষ্টাচার-সংস্কৃতি তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত ছড়িয়ে দিতে এবং তার সর্বজনীন সুফলতা অর্জন করতে বাঙালিকে আরও অনেক সাধনা করতে হবে।
শিষ্টাচার ও রাষ্ট্র : পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের সর্বক্ষেত্রে শিষ্টাচারের গুরুত্ব অনস্বীকার্য। শিষ্টাচারের অভাবে মানুষে-মানুষে, জাতিতেজাতিতে বিরােধ ও দ্বন্দ্বযুদ্ধ লেগেই থাকে। সাম্প্রতিককালে দেশের অভ্যন্তরে রাজনীতিক দলগুলাের পারস্পরিক সাংঘর্ষিক সম্পর্ক শিষ্টাচার বর্জনের সবচেয়ে বড়াে প্রমাণ। শিষ্টাচার না থাকার ফলে রাজনীতিক সংস্কৃতি যেমন বিপর্যস্ত হয় তেমনি গণতন্ত্র হয় ভূলুণ্ঠিত। তাই জনসাধারণের আচার-ব্যবহারে যেমন শিষ্টতা বজায় রাখতে হবে তেমনি রাষ্ট্র পরিচালনায় এবং নেতৃত্ব প্রদানে মন্ত্রীএমপি-নেতা-নেত্রীদের যথার্থ শিষ্টতার পরিচয় দেওয়া অপরিহার্য । সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রতিটি মানুষ তার নিজ নিজ কর্মে শিষ্টতা বজায় রাখলে সমাজে সুশৃঙ্খল পরিবেশ বিরাজ করবে। সামাজিক সুসম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে শিষ্টাচারের কোনাে বিকল্প নেই। যে জাতি যত বেশি সভ্য, সে জাতি তত বেশি শিষ্টাচারী। শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড আর শিষ্টাচার জাতির সভ্যতার ভিত।
শিষ্টাচার না থাকার কুফল : আজ সমাজের ও রাষ্ট্রের নানা ক্ষেত্রেই অশিষ্টাচার ও সৌজন্যহীনতার নিষ্ঠুর চিত্র পরিলক্ষিত হয় । দিন দিনই মানুষের উচ্ছঙ্খলতা বাড়ছে। বাড়ছে সীমাহীন ঔদ্ধত্য। আজকাল তাে বয়ােজ্যেষ্ঠদের সম্মান করার রীতি প্রায় উঠেই গেছে। অতি আধুনিকতার নামে এবং পাশ্চাত্য অনুকরণে গা ভাসিয়ে আমরা যেমন আমাদের শিক্ষা ও সংস্কৃতিকে ভুলতে বসেছি তেমনি ভুলেছি শিষ্টাচার-সৌজন্যবােধ। তাই তাে গুণীজনদের অবজ্ঞা করি আর নমস্যদের করি অশ্রদ্ধা। মানুষের ভিতরের সুকুমারবৃত্তিগুলাে কেমন যেন নেতিয়ে পড়ছে দিন দিন। প্রকট হয়ে উঠছে শুধু জনে জনে দ্বন্দ্ব আর সংঘাত। শিষ্টাচারের অভাবে সমাজ অন্তঃসারশূন্য ও জাতি বিবেকহীন হয়ে পড়ছে। চারদিকে আজ নিষ্ঠুর বিত্তবানের নির্লজ্জ ঔদ্ধত্য; সবলের সীমাহীন নির্মম অত্যাচার। আজকাল ভদতাই যেন ভীরুতার প্রকাশ; সৌজন্যই যেন দুর্বলতার পরিচয়; শিষ্টাচার প্রদর্শন করাই যেন অসহায়ত্বকে তুলে ধরা; নম্রভাব দেখালে মানুষ যেন তাকেই আজ মনে করে হাঁদা-বুদ্ধ! তাই জীবনানন্দ দাশ যথার্থই বলেছেন—
অদ্ভুত আঁধার এক এসেছে এ পৃথিবীতে আজ
যারা অন্ধ সবচেয়ে বেশি আজ চোখে দ্যাখে তারা
যাদের হৃদয়ে কোন প্রেম নেই– প্রীতি নেই
করুণার আলােড়ন নেই
পৃথিবী অচল আজ তাদের সুপরামর্শ ছাড়া ।
মানুষকে অপমান করতে পারলে, হেনস্তা করতে পারলেই যেন মানুষের পৈশাচিক তৃপ্তি । দুর্ব্যবহার, মিথ্যাচার, দুর্নীতি, লাম্পট্য এবং যাবতীয় বিবেকবর্জিত কু-কাজের কলুষতায় মানুষ আজ নিমজ্জিত। শিষ্টাচার ও সৌজন্যবােধের সৌন্দর্য হারিয়ে মানুষ আজ নিঃস্ব, হৃদয়হীন । অন্তরের প্রস্ফুটিত শতদল আজ ছিন্নভিন্ন । আদর্শ সমাজ ও রাষ্ট্র গঠনে শিষ্টাচারের বিকল্প কিছু নেই।
উপসংহার : শিষ্টাচারের মাধ্যমে মানবিক সত্তার বিকাশ ঘটে বলে ঔদ্ধত্য আর উচ্ছঙ্খলতা এখানে পরাজিত হয় । দূর হয় কদর্য ও অশীলতা । শিষ্টাচারের গুণেই মানুষ হয়ে ওঠে সহজ-সরল, স্পষ্ট, সৎ ও মার্জিত । মােটকথা, দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় সংসার চক্রের অনিবার্য ঘর্ষণে যে শ্বাসরােধকারী ধূম্রজাল উথিত হতে থাকে, শিষ্টাচারের স্নিগ্ধ শান্তি-বারি সিঞ্চনেই তা নিবারিত হতে পারে । শিষ্টাচার ধলি-মান পৃথিবীর রুক্ষতাকে কোমলতা দান করে প্রাত্যহিক জীবনযাত্রাকে শােভামণ্ডিত করে তােলে। শিষ্টাচার সভ্যতার। আতিক সম্পদ যুগ-যুগান্তরের চিপ্রকর্ষের অনবদ্য যােগফল। তাই সমাজ হতে শিষ্টাচারের দুর্ভিক্ষ দূর হােক এটাই আমাদের সনির্বন্ধ প্রার্থনা।
Leave a comment