বাংলাদেশে আছে ছয়টি ঋতু। মানুষ শীতের সকালগুলো লেপের নিচে কাটাতে বেশ ভালোবাসে
আর এজন্যই বলা হয় “শীতের সকাল যেন লেপ দিয়ে ঢাকা”। আমাদের প্রিয় শিক্ষার্থীদের
বাংলা অনুচ্ছেদ – শীতের সকাল বিভিন্ন পরীক্ষায় লিখতে আসে। তাই আমি বাংলা
অনুচ্ছেদ – শীতের সকাল সকল শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য লিখার চেষ্টা করেছি।
তোমরা যারা পরীক্ষায় বাংলা অনুচ্ছেদ – শীতের সকাল লিখতে চাও আমার পোস্ট তাদের
জন্য।
বাংলাদেশের ষড় ঋতুর মধ্যে মধ্যে শীত হলো অন্যতম একটি ঋতু যা আমাদের সামনে হাজির
হয় তার অনন্য বৈশিষ্ট্য নিয়ে। প্রিয় শিক্ষার্থী আমি তোমাদের জন্য বাংলা
অনুচ্ছেদ – শীতের সকাল প্যারা আকারে লিখার চেষ্টা করেছি। তোমরা যারা ষষ্ঠ থেকে
অষ্টম শ্রেণীতে পড়ো তারা মাঝেরে একটি প্যারা ছেড়ে দিতে পারো। নিচে বাংলা
অনুচ্ছেদ – শীতের সকাল বিস্তারিত লিখা হলো-
বাংলা অনুচ্ছেদ – শীতের সকাল (৬,৭,৮,৯,১০,১১,১২) সকল শ্রেণীর জন্য
বাংলাদেশ ষড়ঋতুর দেশ। পৌষ এবং মাঘ এই দুই মাস মিলে হয় শীতকাল। শীতকাল আমার সব
চেয়ে প্রিয় ঋতু কারণ শীতের সকাল অন্য সব ঋতুর সকাল থেকে একটু আলাদা। হেমন্ত
কালে যখন মাঠ ভরা ফসল কৃষকের ঘরে উঠে এবং মাঠকে শুন্য ও রিক্ত করে ফেলে তখনই বোঝা
যায় ঘন কুয়াশার চাদর মুড়ি দিয়ে উত্তরের হিমেল হাওয়ায় ভর করে হাড় কাপানো শীত
হাজির হয় তার নিজস্ব রূপ নিয়ে। আর এ সময় সবাই প্রতীক্ষা করে এক ফালি রোদের
জন্য। সকালের অন্যতম মজা হল লেপ মুড়ি দিয়ে ঘুম ঘুমিয়ে থাকা।
কুয়াশার চাদর মুড়ি দিয়ে
সবুজ দিগন্ত ঘুমিয়ে আছে
মেঠো পথ পেরিয়ে।
কারণ শীতের সকালের সূর্য অনেক দেরি করে উঠে আর তখন যেন প্রকৃতি তার সমস্ত আবরণ
খুলে ধারণ করে দিনহীন বেশ। আর প্রকৃতিতে তখন সৃষ্টি হয় এক ভিন্ন সৌন্দর্য। শীতের
সকালে সর্বত্র ঢেকে থাকে ঘন কুয়াশায়। মাঝে মাঝে এমন কুয়াশা বিরাজ করে যে
সূর্যের মুখ পর্যন্ত দেখা যায় না। সবকিছু ঝাপসা দেখায়, দূরের জিনিস দেখা যায়
না। আর এই শীতে সবচেয়ে বেশি কষ্ট হয় শিশু এবং বৃদ্ধদের। শীতের সকালে যখন সূর্য
উঁকি দেয় তখন গাছ ও ঘাসের ওপর রাতের ঝরা শিশির সোনার মতো জ্বলজ্বল করতে থাকে।
জীবনের বাস্তবতা শীতের সকালকেও হার মানিয়ে দেয়। তাই তো সবাইকে আড় মোড়া ভেঙ্গে
উঠতে হয়। শীতের সকালে কাজে যাওয়ার জন্য নিজেকে তৈরি করে নিতে হয়। শীতের সকালে
মানুষ ও প্রকৃতির মধ্যে এক ভিন্ন আমেজ লক্ষ্য করা যায়। মানুষ, জীবজন্তু,
পাখপাখালি শীতের সকালে সূর্যের প্রত্যাশায় প্রহর গুনতে থাকে। শীতের আমেজ লক্ষ্য
করা যায় গ্রামীণ এলাকায়। বাংলার গ্রাম গুলো শীতের সকালে যেন অন্যরকম এক পরিবেশ।
স্মৃতির কুয়াশা ভেদ করেই গ্রামের কর্মঠ মানুষেরা বের হন নিজ নিজ গৃহস্থালি
কাজে।
শীতের সকালের অন্যতম আকর্ষণ হল খেজুরের রস এবং রস দিয়ে তৈরি গুড়। আর খেজুরের
গুড় দিয়ে তৈরি হয় নানারকম পিঠে পায়েস। হেমন্তের পরেই আসে শীত ঋতু আর হেমন্ত
ঋতুতে কৃষকের ঘরে ওঠে নতুন ধান। কৃষকেরা নতুন ধানের পিঠে পায়েস তৈরি করে শীতের
মজাদার খেজুরের গুড় দিয়ে। সত্যিই সে এক অন্যরকম আনন্দ। শীতের সকালের অন্য এক
আকর্ষণ হল সর্ষে ফুলের হলুদ মাঠ। শীতের সকালে হলুদ ফুলের মাঠ দেখে মনে হয়
আল্লাহতালা যেন এই গাছকে শীতের জন্য নবরূপের ঢেলে সাজিয়েছেন।
শীতের সকালে দেখতে পাওয়া যায় গ্রামের মানুষ গুলো খড়কুটো গুছিয়ে তাতে আগুন
জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করেন। ধনীদের কাছে শীতের সকাল খুব আনন্দের হলেও
সবচেয়ে কষ্টদায়ক হলো গরিব অসহায় মানুষের কাছে। এরপরে ও শীতের সকালের অনন্য
বৈশিষ্ট্যের জন্য শীতের সকাল আমার খুব প্রিয়। আর এজন্যই হয়তো কবি বলেছেন-
শীতের সকালে
ধূসর দেয়ালে
একলা দোয়েল ডাকে
গাঁয়ের পথের
দিনগুলো সব
ভীষণ মনে পড়ে।
শেষ কথা
প্রিয় শিক্ষার্থী আমি তোমাদের বাংলা অনুচ্ছেদ – শীতের সকাল
(৬,৭,৮,৯,১০,১১,১২) সকল শ্রেণীর জন্য লিখার চেষ্টা করেছি। তোমরা এই অনুচ্ছেদ
মুখস্ত করলে আমার প্রিয় ঋতু অনুচ্ছেদ আসলেও লিখতে পারবে। আমি আশা করি আমার
এই বাংলা অনুচ্ছেদ – শীতের সকাল (৬,৭,৮,৯,১০,১১,১২) সকল শ্রেণীর জন্য পড়ে
তোমরা উপকৃত হবে।
Leave a comment