প্রখ্যাত বিজ্ঞানী জগদীশচন্দ্র বসুর ভাগিনেয় দেবেন্দ্রমােহন বসু বাঙালির বিজ্ঞানচর্চার ইতিহাসে একটি স্মরণীয় নাম। একাধারে গবেষক এবং বিজ্ঞান-প্রশাসক দেবেন্দ্রমােহন ছােটোবেলা থেকেই দুর্গামােহন দাস, শিবনাথ শাস্ত্রী, আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়, ভগিনী নিবেদিতা, সরলা দেবী, লােকেন পালিত, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, নীলরতন সরকারের সান্নিধ্য লাভ করেন। ব্রাহ্ম বালিকা বিদ্যালয়, সিটি স্কুল, প্রেসিডেন্সি কলেজের পর পদার্থবিজ্ঞানে এসএসসি পাশ করে তিনি জগদীশচন্দ্রের অধীনে কাজ করেন। ১৯০৭ খ্রিস্টাব্দে দেবেন্দ্রমােহন কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রাইস্টস কলেজে পড়তে যান। ১৯১২ সালে তিনি লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের রয়্যাল কলেজ অব সায়েন্স থেকে ফিজিক্সে বিএসসি অনার্স ডিগ্রি নিয়ে দেশে ফেরেন। আশুতােষ মুখােপাধ্যায়ের নির্দেশে ১৯১৪ খ্রিস্টাব্দে উচ্চতর পড়াশােনার জন্য দেবেন্দ্রমােহন জার্মানি গিয়ে বার্লিনে আইনস্টাইনের সান্নিধ্য পান। ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দের মার্চ মাসে তিনি বার্লিন বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি উপাধিতে ভূষিত হন। এর কয়েকমাস পর তিনি লন্ডন হয়ে দেশে ফিরে পুরােনাে কাজেই বহাল হন। ১৯৩৭ খ্রিস্টাব্দে জগদীশচন্দ্রের মৃত্যু হলে পরের বছর তিনি বসু বিজ্ঞান মন্দিরের মহাপরিচালক হন।

উইলসনের মেঘ-প্রকোষ্ঠ (Cloud-Chamber) নিয়ে তিনি প্রথম গবেষণা করেন। তারই উদ্যোগে এদেশে তেজস্ক্রিয়তা ও নিউক্লিয়ার ফিজিক্সের গবেষণার প্রবর্তন হয়। দেবেন্দ্রমােহন চৌম্বকত্ব নিয়ে গবেষণা করে এক শ্রেণির রাসায়নিক যৌগ পদার্থের অণুর চৌম্বক ধর্ম সম্পর্কে একটি বিশেষ সূত্র আবিষ্কার করেন। এ ছাড়াও তিনি পদার্থের ধর্ম ও রীতি নিরূপণ নিয়ে, কমিক রে নিয়ে, উদ্ভিদের শারীরবৃত্ত নিয়ে গবেষণা করেন। ড. শ্যামাপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায়, মৃগাঙ্কশেখর সিংহ, গােপালচন্দ্র ভট্টাচার্য প্রমুখ তার তত্ত্বাবধানে বসু বিজ্ঞান মন্দিরে গবেষণা করেন। “বিজ্ঞানের সকল শাখা একে অন্যের সঙ্গে সম্পৃক্ত এবং নির্ভরশীল থাকুক”—চিরকাল এই ছিল তার মূল লক্ষ্য। তিনি ভারতীয় বিজ্ঞান কংগ্রেসের পদার্থবিজ্ঞান শাখার সভাপতিত্ব করে পরে সেখানে প্রধান সভাপতি হন।

তিনি মেঘনাদ সাহা প্রতিষ্ঠিত ‘Indian Sclence News Association’-এর সভাপতি এবং তার পত্রিকা Science and Culture পত্রিকার আজীবন উপদেষ্টা ও কিছু সময়ের জন্যে সম্পাদক ছিলেন। ‘Indian Science Assoclation’ এর আজীবন সদস্য ও দীর্ঘকাল সহ-সভাপতি ছিলেন। তিনি ‘Indian Physical Society এর প্রতিষ্ঠাতা-সদস্য ছিলেন। এশিয়াটিক সােসাইটির সাধারণ সভ্য, ভাইস-প্রেসিডেন্ট ও কার্য শাখা সেক্রেটারি এবং পরে সভাপতি হন। এ ছাড়াও তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেলাে, বঙ্গীয় পরিষদের সহ-সভাপতি ছিলেন। বিশ্বভারতী তাকে দেশিকোত্তম উপাধিতে ভূষিত করে। তাঁর রচিত একটি বিখ্যাত গ্রন্থ J. C. Bose’s Plant Physiological Investigation in Relation to Modern Biological Knowledge l ১৯৭৫ খ্রিস্টাব্দের ২ জুন তাঁর জীবনাবসান ঘটে।

বাংলার বিজ্ঞানচর্চার ইতিহাসে প্রিয়দারঞ্জন রায়ের অবদান আলােচনা করাে। 

বাংলার বিজ্ঞানচর্চার ইতিহাসে জ্ঞানেন্দ্রনাথ মুখােপাধ্যায়ের অবদান আলােচনা করাে। 

বাঙালির বিজ্ঞানচর্চার ইতিহাসে আশুতােষ মুখােপাধ্যায়ের অবদান আলােচনা করাে। 

বাংলার বিজ্ঞানচর্চার ইতিহাসে ডা. ইন্দুমাধব মল্লিকের অবদান আলােচনা করাে। 

বাংলার বিজ্ঞানচর্চার ইতিহাসে শিশিরকুমার মিত্রের অবদান আলােচনা করাে। 

বাংলার বিজ্ঞানচর্চার ইতিহাসে প্রশান্তচন্দ্র মহলানবিশের অবদান আলােচনা করাে। 

বাংলার বিজ্ঞানচর্চার ইতিহাসে নীলরতন ধরের অবদান আলােচনা করাে। 

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বাংলা ভাষায় বিজ্ঞানচর্চার পরিচয় দাও। 

রবীন্দ্রনাথ ব্যতীত ঠাকুরবাড়ির অন্যান্য মানুষজনের বিজ্ঞানচর্চার পরিচয় দাও। 

বাঙালির বিজ্ঞান ভাবনা ও বিজ্ঞানচর্চার ইতিহাসে জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ির অবদান আলােচনা করাে। 

বাংলা ভাষায় বিজ্ঞানচর্চার ইতিহাসে অক্ষয়কুমার দত্তের অবদান আলােচনা করাে। 

বাংলা ভাষায় বিজ্ঞানচর্চার ইতিহাসে রামেন্দ্রসুন্দর ত্রিবেদীর অবদান আলােচনা করাে।