জাতীয় পতাকা একটি দেশের সার্বভৌমত্বের প্রতীক। আমাদের শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন পরীক্ষায় বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা – অনুচ্ছেদ লেখার চেষ্টা করেছি। তোমরা যারা পরীক্ষায় বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা – অনুচ্ছেদ লিখতে চাও তারা আমার এই বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা – অনুচ্ছেদ পড়তে পারো।
৩০ লক্ষ শহীদের রক্তের বিনিময়ে বাংলাদেশে অর্জিত হয়েছে এই জাতীয় পতাকা। আমরা আমাদের জাতীয় পতাকাকে অনেক বেশি ভালোবাসি। নিচে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা – অনুচ্ছেদ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো –
বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা – অনুচ্ছেদ
জাতীয় পতাকা হলো একটি দেশের স্বাধীন ও সার্বভৌমত্বের প্রতীক। মনে রাখতে হবে জাতীয় পতাকা শুধু মাত্র এক টুকরো কাপড় নয়, জাতীয় পতাকা হলো একটি দেশের প্রতীক প্রকাশ করে থাকে। বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়েছিল ১৯৭১ সালের ২ মার্চ ঢাকার বটতলায়। আর জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেছিলেন ছাত্রনেতা এবং ডাকসুর সভাপতি আ স ম আব্দুর রব।
১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে লাখো শহীদের আত্মত্যাগের মধ্যে দিয়ে রচিত হয় এই পতাকা। ১৯৭০ সালে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা প্রথম অংকন করেন বুয়েটের ছাত্র শিব নারায়ণ দাস। তিনি যখন পতাকা অঙ্কন করেন তখন পতাকার নকশা ছিল সবুজ জমিনের উপর লাল বৃত্ত এবং বৃত্তের মধ্যে সোনালী রঙের বাংলাদেশের মানচিত্র খচিত। এবং এই পতাকাটিই প্রথম ওড়ানো হয়েছিল। পরবর্তীতে শিল্পী কামরুল হাসান আবার পতাকার নতুন নকশা অংকন করেন।
এবং লাল বৃত্তের মধ্য থেকে সোনালী রঙের বাংলাদেশের মানচিত্র বাদ দেওয়া হয়। বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার দৈর্ঘ্য হলো ১০ ফুট এবং প্রস্থ ৬ ফুট। বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার সবুজ অংশ দিয়ে বাংলাদেশের সবুজ শ্যামল প্রকৃতিকে এবং লাল রং দিয়ে লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতার কথা বলা হয়েছে। ১৯৭২ সালের ১১ই জানুয়ারি জাতীয় পতাকার লাল বৃত্তটির মাঝখান থেকে সোনালী রঙের মানচিত্র সরিয়ে ফেলা হয়।
এবং বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা সরকারিভাবে গৃহীত হয় ১৯৭২ সালের ১৭ই জানুয়ারি। বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা ব্যবহারের নিয়ম এবং নির্দেশনা রয়েছে। যেমন – ভবনের ব্যবহারের জন্য পতাকার মাপ হল ১০ঃ৬ ফুট, ৫ঃ৩ ফুট এবং ২.৫ঃ১.১ ফুট। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ও দ্বিপাক্ষীয় বৈঠকের অনুষ্ঠানে টেবিলে ব্যবহারের পতাকার মাপ হলো ১০ ইঞ্চিঃ ৬ ইঞ্চি। বাংলাদেশের স্বাধীনতার কথা এবং দেশকে স্বাধীন করতে লাখো শহীদের লাল রক্তের কথা মাথায় রেখেই বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা অঙ্কন করা হয়েছে।
পৃথিবীর সকল দেশের কাছে বাংলাদেশ নামক একটি দেশ রয়েছে তার অস্তিত্ব পৌঁছে দেয় বাংলাদেশের এই জাতীয় পতাকা। সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে বাঙালি জাতি অর্জন করেছে তাদের স্বাধীনতা আর স্বাধীনতার মুর্ত প্রতীক হলো আমাদের জাতীয় পতাকা। ২০১৩ সালের ১৬ই ডিসেম্বর বিজয় দিবসের জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে ঢাকার শেরে বাংলা নগরে ২৭ ১১ ৭ জন মানুষের উপস্থিতিতে গঠন করা হয় মানব পতাকা যা বিশ্বের সবচেয়ে বড় মানব পতাকা হিসেবে গ্রীনিস ওয়ার্ল্ডে বিশ্ব রেকর্ড করে।
আমরা গর্বিত আমাদের জাতীয় পতাকার জন্য। দেশের প্রত্যেক নাগরিকের উচিত পতাকাকে যথাযথ সম্মান দেখানো। আমরা বাংলাদেশের মানুষ আমাদের জাতীয় পতাকাকে অনেক/ প্রাণীর চেয়ে বেশি ভালোবাসি।
শেষ কথা
প্রিয় শিক্ষার্থী, আমি তোমাদের জন্য বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা অনুচ্ছেদ লিখার চেষ্টা করেছি। আমি আশা করি, আমার এই অনুচ্ছেদ পড়ে তোমরা অনেক উপকৃত হবে। আর যদি উপকৃত হও তাহলে অবশ্যই একটি কমেন্ট করে জানাবে এবং বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করবে।
Leave a comment