দেশে অনেকগুলি রাজনীতিক দল থাকলে তাকে বহু দলীয় ব্যবস্থা (Multi-party System) বলা হয়। অর্থাৎ দেশের রাজনীতিক ক্ষেত্রে দু’টির বেশী সংগঠিত দল থাকলে তাকে বহু-দলীয় ব্যবস্থা বলে। এই দলগুলি জাতি, ধর্ম, ভাষা বা শ্রেণীর ভিত্তিতে গড়ে উঠতে পারে। বহু-দলীয় ব্যবস্থায় প্রতিটি দল যে যার মতাদর্শ ও কর্মসূচী অনুসারে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। নির্বাচনে কোন দল এককভাবে নিরঙ্কুশ গরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারলে, সেই দলই ক্ষমতাসীন হয়। তবে বহু দলীয় ব্যবস্থায় অনেকগুলি রাজনীতিক দল থাকে বলে কোন দলের পক্ষে এককভাবে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করা বা এককভাবে সরকার গঠন করা সম্ভব হয় না। ফলে একাধিক দলের সম্মিলিত সরকার (Coalition government) গঠিত হয়। ফ্রান্সের দল-ব্যবস্থা হল বহুদলীয় ব্যবস্থার উপযুক্ত উদাহরণ। ফ্রান্সে সমক্ষমতাসম্পন্ন প্রায় ১৫টি দল আছে। এই প্রসঙ্গে ভারতের দৃষ্টান্ত দেওয়া যায়।
বহু-দলীয় ব্যবস্থার সম্পর্কে আধুনিক রাষ্ট্রবিজ্ঞানীদের মত:
অ্যালমণ্ড, বল প্রমুখ আধুনিক কালের রাষ্ট্রবিজ্ঞানী বহু দলীয় ব্যবস্থাকে দু’ভাগে বিভক্ত করেছেন: কার্যকরী বহু দলীয় ব্যবস্থা (Working Multi-party System) ও অস্থায়ী বহুদলীয় ব্যবস্থা (Unstable Multi-party System)। কার্যকরী বহু দলীয় ব্যবস্থায় অনেকগুলি রাজনীতিক দল থাকে। তবে সরকার গঠন ও সরকার পরিচালনার ক্ষেত্রে দুটি শক্তিশালী দলের প্রাধান্য দেখা যায়। এ ক্ষেত্রে উদাহরণ হিসাবে নরওয়ে ও সুইডেনের দলীয় ব্যবস্থার কথা বলা যায়। অস্থায়ী বহু-দলীয় ব্যবস্থায়ও অনেকগুলি রাজনীতিক দল থাকে। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে কোন দলই তেমন শক্তিশালী নয়। এই ধরনের দলীয় কাঠামোতে সাধারণত মধ্যপন্থী দলগুলি দক্ষিণপন্থী ও বামপন্থী দলগুলিকে বাদ দিয়ে নির্বাচনে সমঝোতা গড়ে তোলে এবং জয়ী হয়ে ‘সম্মিলিত সরকার গঠন করে। এ ধরনের সরকার আপস-মীমাংসার মাধ্যমে পরিচালিত হয়। তার ফলে সরকার স্বল্পস্থায়ী ও দুর্বল হয়। ফ্রান্স ও ইতালীতে এ ধরনের বহুদলীয় ব্যবস্থা দেখা যায়।
উদারনীতিক গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় বহু-দলীয় ব্যবস্থার উদ্ভবের কারণ
আধুনিক রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আলোচনায় উদারনীতিক গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা একটি বহু আলোচিত বিষয়। উদারনীতিক গণতন্ত্রের কাঠামো ও প্রকৃতিতে জটিলতা বর্তমান। এতদ্সত্ত্বেও এই ধরনের রাজনীতিক ব্যবস্থার কতকগুলি সাধারণ বৈশিষ্ট্য আছে। অ্যালান বল (Alan R. Ball) উদারনীতিক গণতন্ত্রের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যের উল্লেখ করেছেন। উল্লিখিত বৈশিষ্ট্যগুলির মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হল উদারনীতিক গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় একাধিক রাজনীতিক দলের অস্তিত্ব স্বীকৃত। রাজনীতিক দলগুলি ক্ষমতা দখলের উদ্দেশ্যে পরস্পরের সঙ্গে অবাধ প্রতিযোগিতায় সামিল হয়। এই প্রতিযোগিতা প্রকাশ্যে এবং স্বীকৃত ও প্রতিষ্ঠিত কতকগুলি সাধারণ নিয়মনীতি বা পদ্ধতির মাধ্যমে সংঘটিত হয়। সাধারণভাবে সকল রাজনীতিক দলের মূল উদ্দেশ্য হল জনসাধারণের সামগ্রিক কল্যাণসাধন। তবে রাজনীতিক দলগুলির মধ্যে মতাদর্শ এবং কর্মপদ্ধতির পার্থক্য থাকে। উদারনীতিক রাজনীতিক ব্যবস্থায় বিভিন্ন রাজনীতিক দলের উদ্ভবের পিছনে নানা কারণ বর্তমান।
(ক) বিভিন্ন আর্থনীতিক স্বার্থের ভিত্তিতে বিভিন্ন রাজনীতিক দলের সৃষ্টি হয়: সমাজতন্ত্রবাদীদের মতানুসারে রাজনীতিক দল গঠনের ভিত্তি হল আর্থনীতিক স্বার্থ। ল্যাস্কি প্রমুখ রাষ্ট্রবিজ্ঞানীর অভিমতও অনুরূপ। উদারনীতিক গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় আর্থনীতিক উদ্যোগ, উৎপাদন, বণ্টন প্রভৃতি বিষয়ের উপর রাষ্ট্রের সামগ্রিক নিয়ন্ত্রণ থাকে না। তার ফলে পরস্পর বিরোধী স্বার্থসম্পন্ন গোষ্ঠীর সৃষ্টি হয়। এর স্বাভাবিক ফল হিসাবে বিভিন্ন আর্থনীতিক স্বার্থের পরিপোষণের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন রাজনীতিক দলের উদ্ভব হয়। সমাজতন্ত্রবাদীদের মতানুসারে রাজনীতিক দল মাত্রেই একটি বিশেষ শ্রেণী স্বার্থের প্রতিনিধি হিসাবে ভূমিকা পালন করে থাকে। ধনবৈষম্যমূলক সমাজব্যবস্থাতে মূলত পরস্পর-বিরোধী দুটি শ্রেণী থাকে। একটিকে বলা হয় শোষক শ্রেণী এবং অন্যটিকে বলা হয় শোষিত শ্রেণী। শোষক শ্রেণীর স্বার্থ সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন দক্ষিণপন্থী রাজনীতিক দল থাকে। এবং শোষিত শ্রেণীর স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য বামপন্থী দল থাকে।
(খ) কর্মপদ্ধতিগত পার্থক্যের কারণে বহুদলীয় ব্যবস্থার সৃষ্টি হয়: উদারনীতিক গণতন্ত্রে মতাদর্শগত পার্থক্যের জন্য বিভিন্ন রাজনীতিক দলের উদ্ভব হয়। তেমনি আবার কর্মপদ্ধতিগত পার্থক্যের কারণেও বহু দলীয় ব্যবস্থার সৃষ্টি হয়। ভারতে উদারনীতিক গণতন্ত্র বর্তমান। এখানে এমন অনেক রাজনীতিক দল আছে যাদের মধ্যে আদর্শ ও উদ্দেশ্যগত কোন পার্থক্য নেই। কিন্তু কর্মপন্থার পার্থক্য হেতু দলগুলি পরস্পরের থেকে পৃথক।
(গ) ধর্মের ভিত্তিতেও রাজনীতিক দল গঠিত হয়ে থাকে। বিভিন্ন ধর্মীয় গোষ্ঠী বা সম্প্রদায় নিজ নিজ ধর্মমত প্রচার ও প্রসারের উদ্দেশ্যে রাজনীতিক ক্ষমতা ব্যবহার করতে চায়। এইভাবে ধর্মীয় ভিত্তিতে রাজনীতিক দলের সৃষ্টি হয়। উদারনীতিক গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় বিভিন্ন ধর্মের সহাবস্থান স্বীকৃত। তার ফলে বিভিন্ন ধর্ম-ভিত্তিক রাজনীতিক দল গড়ে ওঠারও সুযোগ এবং সম্ভাবনা থাকে।
(ঘ) জাতিগত বিচারে বিভিন্ন রাজনীতিক দল: উদারনীতিক গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় বহু জাতি পাশাপাশি সম্প্রীতির সঙ্গে বসবাস করে। প্রতিটি জাতির শিক্ষা-সংস্কৃতি, ইতিহাস-ঐতিহ্য, ভাষা-সাহিত্য প্রভৃতি স্বতন্ত্র। প্রতিটি জাতি তার পৃথক বৈশিষ্ট্য ও স্বকীয়তাকে সংরক্ষণ ও পরিপোষণ করতে চায়। এই উদ্দেশ্য সাধনের জন্য জাতি-ভিত্তিক রাজনীতিক দল গঠনের প্রবণতা দেখা দেয়। এই কারণেও উদারনীতিক গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় বিভিন্ন রাজনীতিক দলের উদ্ভব হওয়া স্বাভাবিক।
বহু-দলীয় ব্যবস্থার গুণাগুণ
বহু দলীয় ব্যবস্থার সপক্ষে যুক্তি:
(১) জনমতের যথাযথ প্রকাশ : বহু-দলীয় ব্যবস্থার মাধ্যমে জনমতের যথার্থ প্রতিফলন ঘটে। দেশে একটি বা দুটি রাজনীতিক দল থাকলে সমাজের বিভিন্ন মতাদর্শের সুষ্ঠু প্রতিফলন ঘটে না। কিন্তু বহু-দলীয় ব্যবস্থায় এই আশঙ্কা থাকে না। কারণ এই ব্যবস্থায় জনমতের সকল ধারা ও উপধারা যথাযথভাবে প্রকাশিত হয়।
(২) সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের স্বার্থ সংরক্ষণ : বহুদলীয় ব্যবস্থায় সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের একাধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হতে পারে না এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ও সরকার পরিচালনায় অংশগ্রহণ করতে পারে। তার ফলে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের স্বার্থ সংরক্ষণের ব্যাপারে কোন অনিশ্চয়তা থাকে না।
(৩) স্বৈরাচারের আশঙ্কা কম: কোন দলই এককভাবে স্বেচ্ছাচারী হতে পারে না। ফলে জনগণ সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের স্বৈরাচারের আশঙ্কা থেকে মুক্ত থাকে। এইভাবে বহু দলীয় ব্যবস্থায় সংখ্যাগরিষ্ঠের স্বৈরাচার রোধ করা যায়। তার ফলে নাগরিক স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের স্বরূপ বজায় থাকে।
(৪) শাসনকার্যে জনমতের প্রতিফলন : বহুদলীয় ব্যবস্থায় সাধারণত একাধিক দলের সম্মিলিত মন্ত্রিসভা (coalition ministry) গঠিত হয়। একাধিক দলের সম্মিলিত মন্ত্রিসভা, একদলীয় মন্ত্রিসভা অপেক্ষা দেশের জনমতকে সঠিকভাবে উপলব্ধি করতে পারে। এর ফলে শাসনকার্যে জনমতের যথার্থ প্রতিফলন ঘটে।
(৫) কায়েমী স্বার্থ থাকে না: বহু-দলীয় ব্যবস্থায় এক-দলীয় ব্যবস্থার মত কায়েমী স্বার্থের সৃষ্টি হয় না। কারণ এই ব্যবস্থায় কোন রাজনীতিক দল এককভাবে প্রাধান্য প্রতিষ্ঠা করতে বা কর্তৃত্ব করতে পারে না। তাই কোন দলের পক্ষে সংকীর্ণ দলীয় স্বার্থ বা কায়েমী স্বার্থের অনুকূলে বিশেষ সুযোগ-সুবিধা সৃষ্টি করা সম্ভব হয় না।
(৬) রাজনীতিক শিক্ষার বিস্তার : সমাজের সমস্যাদি সম্পর্কে বহু দলের বিভিন্ন রকম আলাপ-আলোচনা ও মতামতের ফলে জনগণের রাজনীতিক শিক্ষার বিস্তার ঘটে। অনেকগুলি দল দেশের বিভিন্ন সমস্যাদি সম্পর্কে নানা দৃষ্টিভঙ্গি থেকে আলোচনা করে। প্রতিটি দল তার নীতি, আদর্শ ও কর্মসূচী অনুসারে সমস্যাদির সমাধানকল্পে পরিকল্পনা প্রণয়ন ও প্রচার করে। তার ফলে জনগণের রাজনীতিক বিচার-বুদ্ধি বিকশিত হয়।
(৭) প্রতিনিধি নির্বাচনের স্বাধীনতা: বহু-দলীয় ব্যবস্থায় নির্বাচকদের প্রতিনিধি বাছাই করার সুযোগ ও স্বাধীনতা অধিক। বিভিন্ন রাজনীতিক দলের মনোনীত প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে নাগরিকগণ পছন্দমত প্রার্থীকে ভোট দিতে পারে। নির্বাচকদের পছন্দ এখানে সীমাবদ্ধ নয়। রামসে ম্যুরের মতানুসারে দুটি রাজনীতিক দলের মধ্যে নাগরিকদের পছন্দকে সীমাবদ্ধ রাখা উচিত নয়।
বহু দলীয় ব্যবস্থার বিপক্ষে যুক্তি:
(ক) অস্থায়ী সরকার : বহু-দলীয় ব্যবস্থায় স্থায়ী ও শক্তিশালী সরকার গঠন করা সম্ভব হয়। না। দেশে বহু রাজনীতিক দল থাকে। তাই কোন দলই এককভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারে না। তার ফলে কোন দল এককভাবে সরকারও গঠন করতে পারে না। ফলে বহুদলের সম্মিলিত সরকার গঠিত হয়। এই সম্মিলিত সরকার প্রকৃতিগতভাবেই দুর্বল ও অস্থায়ী। এই সরকার সুনির্দিষ্ট কার্যক্রমের ভিত্তিতে জনগণের কোন স্থায়ী মঙ্গলসাধন করতে পারে না।
(খ) বৈদেশিক ক্ষেত্রে মর্যাদার হানি: বহু-দলীয় সরকারের এই দুর্বলতার জন্য আন্তর্জাতিক সন্ধি ও চুক্তি, পররাষ্ট্রনীতি প্রভৃতি ক্ষেত্রে বিরূপ Fয়ার সৃষ্টি হয়। সরকার দৃঢ়তার সঙ্গে এই সকল বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে এবং তা কার্যকর করতে পারে না। তার ফলে বৈদেশিক ক্ষেত্রে দেশের মর্যাদা ক্ষুণ্ন হয়।
(গ) প্রার্থী বাছাইয়ে অসুবিধা : বহুদলীয় ব্যবস্থায় জনসাধারণের মধ্যে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়। কারণ বিভিন্ন দলের মধ্যে কোন দলকে সমর্থন করবে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা জনগণের পক্ষে কষ্টকর হয়ে পড়ে।
(ঘ) রাজনীতিক দলত্যাগ : বহু-দলীয় ব্যবস্থায় বিভিন্ন ধরনের দুর্নীতিও দেখা যায়। এই ব্যবস্থায় সুবিধাবাদী ও স্বার্থান্বেষী ব্যক্তিগণ নির্বাচিত হওয়ার পর ব্যক্তিগত স্বার্থসাধনের জন্য ঘন ঘন দল পরিবর্তন করেন। এতে রাজনীতিক সুবিধাবাদ প্রশ্রয় পায়। ফলে দেশের রাজনীতিক আবহাওয়া ও পরিবেশ দূষিত হয়ে পড়ে।
(ঙ) শক্তিশালী বিরোধী দল থাকে না: বহু-দলীয় ব্যবস্থায় শক্তিশালী বিরোধী দল থাকে না। ফলে সরকারের স্বৈরাচারী হওয়ার আশঙ্কা থাকে। বহু-দলীয় ব্যবস্থায় রাজনীতিক দলগুলির মধ্যে নীতি, মতাদর্শ ও কর্মসূচীগত পার্থক্য ও বিরোধ দেখা দেয়। তার ফলে কোন সুসংহত ও শক্তিশালী বিরোধী দল গড়ে উঠে না। অথচ গণতন্ত্রের সাফল্যের জন্য একটি শক্তিশালী বিরোধী দলের অস্তিত্ব অপরিহার্য বিবেচিত হয়।
(চ) অনৈক্য ও বিশৃঙ্খলা অনেকগুলি দলের অস্তিত্বহেতু দেশে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়: অযথা অশান্তি ও উত্তেজনা দেখা দেয়। প্রতিটি রাজনীতিক দল দলীয় স্বার্থ সাধনের জন্য মিথ্যাচার ও দুর্নীতির আশ্রয় গ্রহণ করতে দ্বিধা করে না। তার ফলে জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়। বিভিন্ন দলের সভ্য-সমর্থকদের মধ্যে অবাঞ্ছিত অনৈক্য ও উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। তার ফলে সমাজজীবনে ব্যাপক বিশৃঙ্খলা দেখা দেয় এবং এক অসুস্থ পরিবেশ গড়ে উঠে।
Leave a comment