আধুনিক ভারতের শিক্ষা ক্ষেত্রে আমরা বিজ্ঞানসম্মত চিন্তা বা জ্ঞানের বিকাশ তথা প্রয়ােগ দেখতে পাই। ব্যক্তির ব্যক্তিত্বের সামগ্রিক বিকাশের দিকে লক্ষ্য রেখে ভারতের বিভিন্ন সমাজে শিক্ষার রূপরেখা তৈরি করা হচ্ছে।

(1) UGC ও প্রযুক্তিবিদ্যা: UGC (University Grants Commission) ১৯৮৪ খ্রিস্টাব্দের ১৫ আগস্ট ভারতের সমগ্র অঞ্চলে এক দেশব্যাপী শ্রেণিকক্ষ অনুষ্ঠানের প্রচার শুরু করে। যার উদ্দেশ্য ছিল দূরাগত শিক্ষা কি কার্যকরী, ব্যাপক ও ফলপ্রসূ করে তােলা।

(2) প্রতিটি রাজ্য ও প্রযুক্তিবিদ্যা : ভারতের প্রায় প্রতিটি রাজ্যেই State institutes of technology স্থাপিত হয়েছে। ১৯৭৫ খ্রিস্টাব্দের আগস্ট N The Satellite instructional Television Experiment বা SITE উপগ্রহের মাধ্যমে শিক্ষার বিস্তার করার জন্য প্রবর্তন করা হয়।

(3) মহাকাশ গবেষণা ও প্রযুক্তিবিদ্যা : Indian Space Research Organisation (ISRO) বা ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্রের সাহায্যে শিক্ষামূলক উপগ্রহ (INSAT) প্রকল্প রূপায়ণ করা হয়। যার মাধ্যমে দূরদর্শনের বিভিন্ন কর্মসূচির সম্প্রসারণের সাহায্যে দেশের প্রতিটি অঞ্চলে শিক্ষার প্রসার সম্ভব হচ্ছে।

(4) ভাষা পরীক্ষাগার ও প্রযুক্তিবিদ্যা : বর্তমানে বিদেশি ভাষা শিক্ষা অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে। তাই ভারতে ভাষা পরীক্ষাগার বা Language Laboratory-র যথেষ্ট প্রয়ােগ হচ্ছে। এটি একটি স্বশিখন বা আত্মা শিখন পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে শিক্ষার্থী টেপরেকর্ড করা বক্তব্য বা ভাষ্য শােনে এবং একই কায়দায় তা উচ্চারণ করে বলার অভ্যাস করে।

এতৎসত্ত্বেও ভারতবর্ষে উচ্চমানের শিক্ষাপ্রযুক্তির ক্ষেত্রে কতকগুলি বাধা রয়েছে যেমন-

(1) অর্থ ও উদ্যাগের অভাব : ন্যূনতম শিক্ষা উপকরণ দেশের প্রতিটি কোণায় পৌছে দিতে যে পরিমাণ অর্থের প্রয়ােজন, তা ব্যয় করা হয় না। উদ্যোগ ও অর্থের অভাবে এইভাবে শিক্ষক ও শিক্ষার্থী উভয়েই ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

(2) যােগ্য শিক্ষক ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাব : বিদ্যালয়গুলিতে যে ক-টি শিক্ষার উপকরণ রয়েছে তা সঠিকভাবে ব্যবহার করা হয় না। এ ছাড়া রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে সেগুলি নষ্ট হয়ে যায়।

সুতরাং শিক্ষায় প্রযুক্তির ব্যবহার দেশের প্রতিটি কোণায় কোণায় যাতে হতে পারে সেজন্য আর্থিক ব্যয়ের সুপরিকল্পনা গ্রহণ, শিক্ষকদের আবশ্যিক প্রশিক্ষণ, যােগ্য শিক্ষক-শিক্ষিকা নিয়ােগ, বিদ্যালয়ে শিক্ষা সহায়ক উপকরণের জোগান এবং তার ব্যবহার ইত্যাদির প্রয়ােজন।