❋ বরেণ্য মুক্তিযোদ্ধার সংবর্ধনা উপলক্ষ্যে একখানি অভিনন্দনপত্র রচনা কর।

দেশবরেণ্য মুক্তিযােদ্ধা মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম 

বীর-উত্তম-এর আগমন উপলক্ষ্যে আমাদের

প্রাণঢালা শ্রদ্ধাঞ্জলি 

হে মহান অতিথি 
একদিন যে বাংলা মায়ের স্বাধীনতার জন্য প্রাণকে তুচ্ছ ভেবে নিজেকে সমর্পণ করে কাঙ্ক্ষিত বিজয় ছিনিয়ে এনেছিলে, আজ এ বাংলা মায়ের নবীন সন্তানরা তােমায় তাদের মধ্যমণি হিসাবে বরণ করে নিল। আমরা আজ উচ্ছ্বসিত, উদ্বেলিত। তােমার আগমনে এখানকার মাটি, মানুষ আর প্রকৃতি পেয়েছে নতুনত্বের পরশ। তুমি হাসিমুখে আমাদের প্রাণঢালা শ্রদ্ধাঞ্জলি গ্রহণ কর। 

হে বীরযােদ্ধা 
তুমি তাে শুধু যুদ্ধের জন্যই অস্ত্র হাতে নাওনি, তােমার স্বপ্নে ছিল নতুন এক দেশ। যে নতুন স্বাধীন দেশের গরিব-দুঃখীরা অল্প হলেও দুবেলা দুমুঠো অন্নের নিশ্চয়তা পাবে। তােমার অসীম সাহস তােমাকে দিয়েছে মরণকে জয় করার ক্ষমতা । তােমার এ ঋণ আমরা কখনাে শােধ করতে পারব না। 

হে মৃত্যুঞ্জয়ী সৈনিক 
মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে তুমি ছিলে অকুতােভয় বীর সেনানী । তােমার ওই মৃত্যুঞ্জয়ী ভূমিকা আমাদের দিয়েছে মুক্তির স্বাদ। একদিন এ বাংলার আকাশে যে মেঘ দানা বেঁধেছিল, তা সরিয়ে তােমরাই জ্বালিয়েছিলে সূর্যের আলাে । তাইতাে তুমি মহৎ। কর্মগুণে হয়েছ মৃত্যুঞ্জয়ী। মৃত্যু কখনাে তােমাকে আমাদের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করতে পারবে না। 

হে বীর-উত্তম 
তােমার অবদানকে কোনাে মাপকাঠিতে মাপা অসম্ভব । তারপরও স্বাধীনতা-উত্তর সরকার তােমাকে দিয়েছে বীর-উত্তম’ খ্যাতির দুর্লভ সম্মান। এ গৌরব শুধু তােমার একার নয়, তুমি এতদঞ্চলের সন্তান হওয়ায় এ গৌরব আমাদেরও। তােমার নেতৃত্বই আমাদের দিয়েছে আজকের এ মাতৃভূমিতে মুক্তভাবে চলা ও প্রাণ খুলে কথা বলার অধিকার । সেজন্য তােমাকে জানাই আন্তরিক কৃতজ্ঞতা। 

হে মহান দেশপ্রেমিক 
তুমিই তাে সত্যিকারের দেশপ্রেমিক । তােমার দেশপ্রেম আজ আমাদের দিয়েছে সত্য বলার ক্ষমতা । তুমি এদেশের মুক্তিকামী তরুণদের এক লৌহকঠিন শপথে দীপ্ত করে তুলেছিলে দেশমুক্তির মহান মন্ত্রে। এদেশ তােমার দানে অনেক ভারী। তাই তাে পাকিস্তানি দস্যুরা যখন এদেশের মানুষের বুকের রক্তে শ্যামল প্রান্তর রাঙিয়ে তুলেছিল, তখন তুমি জীবনের মায়া ত্যাগ করে পশুশক্তি দমনে ছিলে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। তােমার দেশপ্রেমের জন্যই আমাদের মুখে মুক্তির হাসি ফুটেছে। তুমি আমাদের হৃদয়। উৎসারিত সংগ্রামী অভিনন্দন গ্রহণ কর। 

হে আপসহীন সংগ্রামী 
আজ এ গৌরবের দিনে তােমাকে সম্মান জানানাের ভাষা আমাদের জানা নেই। তােমার সংগ্রামী ঐতিহ্য আমাদের চেতনায় রােপিত। তাইতাে উপহার কিংবা উপঢৌকন দিয়ে তােমাকে ক্ষুদ্র গণ্ডিতে বাঁধার সাহস আমাদের নেই বলে এ আনন্দঘন মুহূর্তে আমরা তােমায় বরণ করি প্রাণের কোমল উষ্ণতায় । তুমি সুখী হও, পরম করুণাময় স্রষ্টা তােমায় সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু দান করুন, এ আমাদের আন্তরিক প্রার্থনা। 
২৬ মার্চ ২০২১

তােমার শুভাকাক্ষী          

শাহরাস্তি উপজেলাবাসী, চাঁদপুর।