“বউ গেলে বউ পাইব, কিন্তু আমার ভাই ফাঁসি গেলে আর তো ভাই পাইব না”

উত্তর: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘শাস্তি’ গল্পের দুখিরাম রুই আর ছিদাম রুই দুই ভাই এবং তারা কুরি পরিবারের সন্তান। প্রদত্ত উক্তিটি ছিদাম রুই-এর।

দুখিরাম রুই ও ছিদাম রুইয়ের যৌথ সংসার। সংসারে আছে দুখিরামের একটি দেড় বছরের ছেলে। কিন্তু এ সংসারে দুই বউ মিলে সারাদিন ঝগড়া, ফ্যাসাৎ, হইচই-চ্যাচামেচি করে থাকে। এসব নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। প্রতিদিনই প্রায় ঘটে থাকে। আর এসব ঘটনায় প্রতিবেশীরাও অভ্যস্ত ছিল বরং যেদিন কুরিদের বাড়ি শান্ত থাকত প্রতিবেশীরা কোনো বিপদের আশঙ্কা করত। নিতান্ত অনিচ্ছা সত্ত্বেও দুই ভাই জমিদারের কাছারি থেকে সন্ধ্যায় বাড়িতে আসে। ক্ষুধার্ত দুখিরাম বড় বউ এর কাছে ভাত চায়। আর বড় বউ বলে-“ভাত কোথায় যে ভাত দিব, তুই কি চাল দিয়া গিয়াছিলি। আমি কি নিজে রোজগার করিয়া আনিব।” বিশেষত শেষ কথাটার গোপন ইঙ্গিত বুঝতে পেরে দুখিরাম আর সহ্য করতে পারে না। সে দা নিয়ে বউয়ের মাথায় কোপ দেয়। মুহূর্তেই তার মৃত্যু হয়। অকস্মাৎ রামলোচন খুড়ো বাড়িতে প্রবেশ করে। ঘটনা শুনে কে খুন করেছে জানতে চাইলে ছিদাম চন্দরার নাম বলে ফেলে। আবার চন্দরাকে বাঁচানোর জন্যও ব্যাকুল হয়। রামলোচন তাকে এক বুদ্ধি দেয়- পুলিশ বা অন্যদের কাছে যেন ছিদাম তার ভাইয়ের দোষ দেয়- তাহলে তখন তার বউ বেঁচে যাবে। ছিদাম ভাইয়ের প্রতি মমত্ব দেখিয়ে বলে, “বউ গেলে বউ পাইব, কিন্তু আমার ভাই ফাঁসি গেলে আর তো ভাই পাইব না।”

এক কথায় বলা যায়, ছিদামের কথার মধ্য দিয়ে পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতারই পরিচয় পাওয়া যায়।