প্রশ্নঃ ফৌজদারী মামলা তদন্তের ব্যাপারে পুলিশকে অসীম ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছে- আলোচনা কর।
উত্তরঃ কোন ঘটনা তদন্তের ক্ষেত্রে পুলিশের সীমাহীন ক্ষমতা। এই ক্ষমতা আইনই পুলিশকে দিয়াছে। পুলিশ স্বাধীনভাবে তদন্ত করতে না পারলে সুষ্ঠুভাবে তদন্ত পরিচালিত হয় না এবং এতে ব্যত্যয় ঘটলে সঠিক জিনিস সামনে আসে না এবং ন্যায় বিচার ব্যাহত হয় । তদন্ত বলতে সাক্ষ্য-প্রমাণাদি সংগ্রহের উদ্দেশ্যে কোন পুলিশ অফিসার বা কোন ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট হতে ক্ষমতা-প্রাপ্ত অন্য কোন ব্যক্তি (ম্যাজিস্ট্রেট নয়) কর্তৃক পরিচালিত সকল কার্যক্রমকে বুঝাবে। তদন্তের ভার যেহেতু পুলিশের উপর সেইহেতু তাকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে দিতে হয় এবং এতে ঘটনার সঠিক চিত্র বিচারকের সামনে উপস্থাপিত হয়। ফৌজদারি কার্যবিধির ১৫৬(১) ধারায় পাওয়া যায় যে, আমলযোগ্য অপরাধের কেইস পুলিশ অফিসার ম্যাজিস্ট্রেটের আদেশ ছাড়াই তদন্ত করতে পারেন।
জনগণের শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা করার দায়িত্ব পুলিশের। সে কারণ আমলযোগ্য অপরাধের বিষয়টি পুলিশের গোচরীভূত হলেই পুলিশ তদন্ত শুরু করতে পারে। তবে পুলিশের তদন্তে যাতে নিরীহ মানুষ হয়রানির শিকার না হয় সে দিকেও পুলিশকে দৃষ্টি দিতে হবে। ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬০ ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে পুলিশ তদন্তের স্বার্থে যে কাউকে সাক্ষ্য প্রদানের জন্য ডাকতে পারে এবং যাকে ডাকা হয় তিনি পুলিশের নিকট আসতে আইনগতভাবে বাধ্য । তিনি আসলে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬১ ধারার বিধান মতে পুলিশ অফিসার তার জবানবন্দী লিপিবদ্ধ করবেন। কোন বিচারক পুলিশকে তদন্তের দিকনির্দেশনা দিয়ে আদেশ দিতে পারেন না। তারা শুধু এজেন্সী পরিবর্তন কিংবা ভালো তদন্তের স্বার্থে তদন্তকারী কর্মকর্তাকে পরিবর্তনের কথা বলতে পারেন। পুলিশ অফিসার তদন্ত করে যে প্রতিবেদন দাখিল করেন ফৌজদারি কার্যবিধির ১৭৩ ধারার বিধান অনুসারে তাকে পুলিশ রিপোর্ট বলে। এই রিপোর্টে পুলিশ অফিসার কোন আসামীর বিচার প্রার্থনা করতে এবং অন্য আসামীকে অব্যাহতি দিবার প্রার্থনা করতে পারেন। অব্যাহতির প্রার্থনাকে ফাইনাল রিপোর্ট বলে। সকল ক্ষেত্রেই পুলিশ অফিসার স্বাধীন এবং তাদের এই ক্ষমতা দুদৰ্শনীয়। তাই যথার্থই বলা যায়, “ফৌজদারি মামলা তদন্তের ব্যাপারে পুলিশকে অসীম ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছে”।
Leave a comment