রামরাম বসুর পরিচয় দাও
ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য ছিল ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিতে কর্মরত কর্মচারীদেরকে বাংলা ভাষা শিক্ষা দান করা। এ উদ্দেশ্যে ১৮০০ সালের মে মাসে কলকাতায় ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ প্রতিষ্ঠা করা হয়। অধ্যক্ষ কেরির অধীনে দুইজন পণ্ডিত এবং রামরাম বসুসহ ছয়জন সহকারী পণ্ডিতও নিযুক্ত হন।
রামরাম বসু (১৭৫৭-১৮১৩) ছিলেন উইলিয়াম কেরির সহযোগী পাঠ্যপুস্তক রচনাকারীদের অন্যতম। তিনি ছিলেন বৈচিত্র্যময় জীবনের অধিকারী। প্রথমে তিনি ফারসি মুনশি পরবর্তীতে ফোর্ট উইলিয়াম কলেজের সহকারী পণ্ডিত ছিলেন। খ্রিষ্টধর্মের প্রচারে প্রভৃত সাহায্য করলেও তিনি কিন্তু নিজের ধর্ম পরিত্যাগ করেননি। নৈতিক অধঃপতনের কারণে বিতাড়িত হলেও দয়াধর্ম, বদান্যতা এবং শাস্ত্রীয় বিচারবুদ্ধির জন্য উইলিয়াম কেরি তাঁর প্রশংসা করেছেন।
রামরাম বসু হলেন প্রথম বাঙালি সাহিত্যিক, যার লিখিত বাংলা গদ্য সর্বপ্রথম মুদ্রিত হয়। বাংলা গদ্যের পুরোভাগে তাঁর অবস্থানের জন্য স্মরণীয় হয়ে আছেন। কেরির অনুরোধে ১৮০১ সালে তিনি ফোর্ট উইলিয়াম কলেজে সহকারী পণ্ডিত হিসেবে যোগদান করেন। তাঁর রচিত গ্রন্থ দুটি হলো ‘রাজা প্রতাপাদিত্য চরিত্র’ এবং ‘লিপিমালা’। ‘রাজা প্রতাপাদিত্য চরিত্র’ ১৮০১ সালে প্রকাশিত হয়। ফারসি থেকে উপকরণ সংগ্রহ করে রচিত হলেও বাংলা গদ্যে মৌলিক পূর্ণাঙ্গ ইতিহাস রচনার প্রথম সার্থক প্রয়াস এ বইটি। ১৮০২ সালে প্রকাশ পায় ‘লিপিমালা’। এটা রামরাম বসুর একটি ভিন্নধর্মী কাল্পনিক পত্রগুচ্ছের সমষ্টি। পত্রাকারে লিখিত কতকগুলো পৌরাণিক, ঐতিহাসিক ও শাস্ত্রীয় বিষয় আছে এ গ্রন্থে। এ গ্রন্থে প্রথম বইয়ের মতো ফারসি শব্দের প্রতুলতা নেই বরং এতে তৎকালীন প্রচলিত গদ্যরীতির ইঙ্গিত পাওয়া যায়। রামরাম বসু রচিত গদ্যগ্রন্থ ফোর্ট উইলিয়াম কলেজের বাংলা বিভাগের গদ্য সাহিত্য প্রচলনের উদ্দেশ্যকে অনেকাংশে সফল ও সার্থক করেছে।
বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ উপরের লেখায় কোন ভুল থাকে তাহলে দয়া করে আমাদেরকে কমেন্ট করে জানাবেন আমরা সেটা ঠিক করে দেওয়ার চেষ্টা করবো, ধন্যবাদ।
Leave a comment