প্রেইরি তৃণভূমি অঞ্চলের প্রধান মাটি হল চারননাজেম। এটি একপ্রকার আঞ্চলিক মাটি। প্রায় শুষ্ক ও নাতিশীতোষ্ণ জলবায়ু অঞ্চলে চারনাজেম মৃত্তিকা গড়ে ওঠে। 75 সেমি থেকে 125 সেমি বৃষ্টিপাতযুক্ত নাতিশীতোষ্ণ তৃণভূমি অঞ্চলে এরূপ মৃত্তিকার উৎপত্তি ও বিকাশ ঘটেছে।
অবস্থান : ইউক্রেনের স্তেপ, আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেইরি, মধ্য চিনের সমভূমি, দক্ষিণ কোরিয়া ও মঙ্গোলিয়ার তৃণভূমিতে চারনােজেম মৃত্তিকা দেখা যায়।
উৎপত্তি : (i) শুষ্ক গ্রীষ্মকাল ছাড়া অন্য সময়ে জীবাণুঘটিত কাজের জন্য প্রচুর পরিমাণে জৈব ও অজৈব অম্ল সৃষ্টি হয়। (ii) ধৌত প্রক্রিয়ায় কেবলমাত্র দ্রবীভূত লবণ মাটির নীচের স্তরে চলে যায়। (iii) শুষ্ক ঋতুতে ক্যালশিয়াম কার্বনেট ও জিপসাম মাটির একটি নির্দিষ্ট স্তরে সঞ্চিত হয়। (iv) এর ফলে স্বল্প ক্ষারকীয় অবস্থায় মাটি গঠন প্রক্রিয়া শুরু হয়। (v) এই অবস্থায় হিউমাস ও হিউমাসজাতীয় পদার্থের প্রচুর সঞ্চয় ঘটে। ফলে মাটিতে জৈব পদার্থের পরিমাণ অনেক বেড়ে যায় (প্রায় 15%)। (vi) ক্যালশিয়ামজাতীয় হিউমাস বেশি থাকায় মাটির রং কালাে হয়।
বৈশিষ্ট্য : (i) মন্টমেরােলােনাইটের অবস্থানের জন্য এর জল ধারণক্ষমতা ও উর্বরতা বেশি হয়। (ii) এই মাটির স্বল্প পরিবর্তিত রূপ হল প্রেইরি মৃত্তিকা। (iii) চারনােজেম ও প্রেইরি মৃত্তিকা কৃষিকাজের জন্য আদর্শ। এই মাটিতে গম চাষই প্রধান। এ ছাড়া ভুট্টা ও অন্যান্য পশুখাদ্য উৎপন্ন হয়।
Leave a comment