প্রাথমিক শিক্ষা হল ব্যক্তির পক্ষে ন্যূনতম আবশ্যিক শিক্ষা যা তাকে গণতন্ত্রের উপযুক্ত নাগরিক হয়ে উঠতে সাহায্য করে। প্রাথমিক শিক্ষার উদ্দেশ্যগুলি হল一
(১) দৈহিক বিকাশ: শৈশবে শিশুর অঙ্গপ্রত্যঙ্গ অপরিণত অবস্থায় থাকে। শরীরচর্চা, ব্যায়াম, খেলাধুলা প্রভৃতি নানান ধরনের সঞ্চালনমূলক কাজের মাধ্যমে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছেলেমেয়েদের স্বাস্থ্য গড়ে তােলার চেষ্টা করা হয়।
(২) মানসিক বিকাশ: প্রাথমিক শিক্ষার উদ্দেশ্য হল ছেলেমেয়েদের মধ্যে চিন্তাশক্তি, বিচারক্ষমতা, সৃজনশীলতা, কল্পনাশক্তি প্রভৃতির যথাযথ বিকাশে সাহায্য করা।
(৩) স্বাস্থ্য সচেতনতার বিকাশ: প্রাথমিক শিক্ষার আর-একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য হল ছেলেমেয়েদের মধ্যে স্বাস্থ্য-সংক্রান্ত সু-অভ্যাস গড়ে তােলা। যেমন—প্রতিদিন দাঁতমাজা, দাঁত দিয়ে নখ না কাটা, যত্রতত্র থুতু না ফেলা ইত্যাদি।
(৪) সামাজিক বিকাশ: নানান সামাজিক সেবামূলক কাজের মধ্য দিয়ে ছেলেমেয়েদের মধ্যে সামাজিক কর্তব্যবােধ জাগিয়ে তােলা হল প্রাথমিক শিক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য।
(৫) প্রক্ষোভিক বিকাশ: প্রাথমিক শিক্ষার উদ্দেশ্য হল শিশুর নানারকম প্রক্ষোভজনিত আচরণের যথাযথ বিকাশে সহায়তা করা।
(৬) জ্ঞানের বিকাশ: প্রাথমিক শিক্ষার আর-একটি উদ্দেশ্য হল ছেলেমেয়েদের বিজ্ঞান, গণিত, ভাষা, ইতিহাস, ভূগােল প্রভৃতি বিষয়ে জ্ঞানার্জনে সাহায্য করা।
(৭) নাগরিকতার শিক্ষা: শিক্ষার্থীদের মধ্যে নাগরিক জীবনের দায়িত্ব এবং কর্তব্য সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা গড়ে তােলা হল প্রাথমিক শিক্ষার অপর একটি উদ্দেশ্য।
(৮) শ্রমের মর্যাদা বিষয়ে শিক্ষা: ‘কোনাে কাজই ছােটো নয়’—শিক্ষার্থীদের মধ্যে এই বােধ জাগিয়ে তােলা প্রাথমিক শিক্ষার আর-একটি উদ্দেশ্য।
(৯) সৌন্দর্যবােধ গঠনে সহায়তা এবং নান্দনিক বিকাশ: অভিনয় এবং অন্যান্য সূক্ষ্ম ও কারুকার্যমণ্ডিত কাজের মধ্য দিয়ে যথাক্রমে সৌন্দর্যবােধ এবং নান্দনিক বিকাশ গড়ে ওঠে।
(১০) নৈতিক মূল্যবােধের বিকাশ: প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বিভিন্ন আদর্শপরায়ণ মানুষের জীবনীপাঠের ব্যবস্থা করা হয়।
প্রাথমিক শিক্ষা যেহেতু জাতির উন্নয়নের মূলভিত্তি সেজন্য প্রাথমিক শিক্ষার উদ্দেশ্যপূরণে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া প্রয়ােজন। এরই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের মধ্যে জাতীয় ভাবধারার প্রয়ােজনীয় গুণগুলির যথাযথ বিকাশসাধন করা এই শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য।
Leave a comment