প্রাচীন মিশরের কৃষক ও ক্রীতদাসরাই ছিল সংখ্যাগরিষ্ঠ। সেখানকার উৎপাদনমূলক কাজপুলিতে নিযুক্ত থাকত মূলত কৃষক ও ক্রীতদাসরাই। নীচে প্রাচীন মিশরের কৃষক ও ক্রীতদাসদের অবস্থাগত পার্থক্য উল্লেখ করা হল-

কৃষক

  • প্রাচীন মিশরের মােট জনসংখ্যার প্রায় ৮০ শতাংশই ছিল কৃষক।

  • কৃষকরা মিশরীয় সমাজব্যবস্থার তৃতীয় শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত ছিল। তাদের সামাজিক অবস্থান ক্রীতদাসদের ওপরে ছিল।

  • কৃষকরা সাধারণত কৃষি উৎপাদনের কাজে নিযুক্ত থাকত। তবে বছরে ৩ মাস বন্যার সময় কৃষিকাজ বন্ধ থাকত বলে তখন তারা সরকারি অট্টালিকা ও প্রাসাদ নির্মাণের কাজে নিযুক্ত হত।

ক্রীতদাস

  • প্রাচীন মিশরে কৃষকদের সংখ্যার তুলনায় ক্রীতদাসদের সংখ্যা অনেক কম ছিল।

  • ক্রীতদাসরা মিশরীয় সমাজ ব্যবস্থায় কৃষকদের নীচে বা বলা যায় সর্বনিম্ন স্তরে অবস্থান করত।

  • ক্রীতদাসরা মিশরের পরিশ্রমসাধ্য বিভিন্ন নির্মাণের কাজে নিযুক্ত থাকত বলে মনে করা হয়। তবে তারা কৃষিকাজেও নিযুক্ত ছিল।

উপসংহার: প্রাচীন মিশরের সব ব্লীতদাসেরই অবস্থা এক রকম ছিল না। দরিদ্র কৃষকদের সঙ্গে সেখানকার বেশিরভাগ ক্রীতদাসদের ব্যবধান অনেক সময় চোখেই পড়ত না। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, প্রাচীন মিশরের পিরামিডগুলি কারা নির্মাণ করেছিল, কৃষকরা না ক্রীতদাসরা সে বিষয়ে বিতর্ক রয়েছে। কেননা, মিশরে মধ্যরাজতন্ত্রের (১০৫০-১৬৫০ খ্রি.পূ.) পূর্বে ক্রীতদাস প্রথার অস্তিত্বের প্রমাণ পাওয়া যায় না। অথচ সেদেশে আদি রাজতন্ত্রের (১৬৮৬-২১৮১ খ্রি.পূ.) সময় থেকেই পিরামিড নির্মিত হচ্ছিল। সেজন্য কেউ কেউ মনে করেন যে, মিশরের ক্রীতদাসরা নয়, মিশরের কৃষকরাই সেদেশের পিরামিডগুলি গড়ে তুলেছিল। তাই বিভিন্ন দিক বিচার করে অনেক ইতিহাসবিদ মনে করেন, গ্রিক ও রােমান ক্রীতদাসদের তুলনায় মিশরের ক্রীতদাসদের অবস্থা অনেক ভালো ছিল।