আমাদের দেশে বিশেষ করে শহর ও আধাশহর অঞ্চলে। প্রাথমিক শিক্ষার জন্য বিভিন্ন ধরনের শিক্ষালয়ের প্রচলন হয়েছে।
দার্শনিক এবং শিক্ষাবিদ রুশাে, পেস্তালৎসি, ফ্রয়েবেল প্রমুখের চিন্তাধারা দ্বারা প্রভাবিত হয়ে মাদাম মন্তেসরি এক নতুন ধরনের শিক্ষাপদ্ধতি প্রচলন করেন। মাদাম মন্তেসরি তাঁর শিক্ষাপদ্ধতিতে শিশুদের ইন্দ্রিয় প্রশিক্ষণের ওপর বিশেষ জোর দেন। এখানে যান্ত্রিক পদ্ধতির সহায়তায় শিক্ষাদানের ব্যবস্থা করা হয়। যান্ত্রিক কৌশল বা পদ্ধতিগুলিকে বলা হয় ‘ডাইড্যাকটিক অ্যাপারেটার্স। মন্তেসরি শিক্ষাপদ্ধতির উদ্দেশ্য হল বিভিন্ন ধরনের জ্ঞানলাভে শিশুদের উৎসাহ দেওয়া। এই বিদ্যালয়ে যেসব শিক্ষাকার্যের ওপর জোর দেওয়া হয় সেগুলি হল一
(১) আত্মসক্রিয়তা: মন্তেসরি শিক্ষাপদ্ধতিতে শিশুর আত্ম-সক্রিয়তার ওপর খুব বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়। এখানে শিশু বিভিন্ন কাজে যুক্ত হয়ে বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের সুযােগ পায়।
(২) স্বাধীন ইচ্ছা: এই পদ্ধতিতে শিশুদের স্বাধীনতা দেওয়া হয়, যার ফলে তারা ছােটো থেকেই আত্মপ্রত্যয়ী হয়ে ওঠার সুযােগ পায়।
(৩) ইন্দ্রিয়ের বিকাশ: এখানে শিশুর ইন্দ্রিয়ের বিকাশের প্রতি বিশেষ নজর দেওয়া হয়। শিশুরা তাদের ইন্দ্রিয়গুলিকে যাতে সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারে, সে বিষয়ে তাদের উপযুক্ত প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
(৪) চরিত্রগঠন: এই বিদ্যালয়ে শিশুর চরিত্র গঠনের প্রতিও বিশেষ নজর দেওয়া হয়| চরিত্রগঠনের মধ্য দিয়ে তাদের ব্যক্তিত্বের বিকাশ ঘটে।
(৫) সাধারণ জীবনযাত্রার অনুশীলন: মাদাম মন্তেসরি তাঁর বিদ্যালয়ে সাধারণ জীবনযাত্রার সাথে জড়িত কিছু কাজের অনুশীলনেরও প্রচলন করেন। যেমন কাপড় কাচা, ঘর পরিষ্কার করা, ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য দাঁত মাজা, নখ কাটা, জুতা পরিষ্কার করা ইত্যাদি।
(৬) ব্যায়াম: সুসামঞ্জস্য দৈহিক বিকাশের জন্য বিদ্যালয়ে বিভিন্ন ধরনের ব্যায়াম অনুশীলনের ওপর জোর দেওয়া হয়।
(৭) অন্যান্য কাজ: মন্তেসরি বিদ্যালয়ে ইন্দ্রিয়ের উৎকর্ষের জন্য প্রকৃতি পর্যবেক্ষণ, গান গাওয়া, বাগান করা, হাতের কাজ, লিখন, পঠন প্রভৃতির ওপরও বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়।
Leave a comment