প্রাথমিক শিক্ষা হল শিক্ষার সেই স্তর যেখানে শিশুকে প্রথাগত প্রাথমিক শিক্ষার উপযােগী করে তােলার ব্যবস্থা করা হয়। প্রাকৃপ্রাথমিক শিক্ষার উদ্দেশ্যগুলি হল一
(১) অভ্যাস গঠন: প্রাকপ্রাথমিক শিক্ষার উদ্দেশ্য হল শিশুদের মধ্যে সু-অভ্যাস গঠনে সহায়তা করা।
(২) সামাজিক বিকাশ: প্রাথমিক শিক্ষার আর-একটি উদ্দেশ্য হল শিশুদের মধ্যে সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তােলা।
(৩) প্রাক্ষোভিক বিকাশ: প্রাথমিক শিক্ষার মাধ্যমে শিশুদের অনিয়ন্ত্রিত প্রক্ষোভগুলিকে নিয়ন্ত্রিতভাবে বিকশিত হওয়ার ব্যবস্থা করা হয়।
(৪) নান্দনিক বিকাশ: প্রাকৃপ্রাথমিক শিক্ষার অন্যতম উদ্দেশ্য হল শিশুদের মধ্যে নান্দনিক বিকাশ ঘটানাে। শিশুরা যাতে ছােটো থেকেই নাচ, গান, নাটক, ছবি আঁকা প্রভৃতি বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করতে পারে, সে বিষয়ে তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া প্রয়ােজন।
(৫) মানসিক বিকাশ: প্রাথমিক শিক্ষার মাধ্যমে শিশুদের মানসিক বিকাশ ঘটানাের জন্য বিভিন্ন খেলাধুলাে শেখানাে, ছড়া, গল্প শােনানাে, ছবি আঁকা ইত্যাদির ব্যবস্থা করা হয়।
(৬) কৌতূহলের বিকাশ: প্রাকৃপ্রাথমিক শিক্ষার আর-একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য হল শিশুদের নানারকম প্রশ্নের উত্তর দিয়ে তাদের কৌতুহল চাহিদার বিকাশ ঘটানাে।
(৮) সৃজনশীলতার বিকাশ: প্রাকৃপ্রাথমিক শিক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য হল সৃজনশীলতার বিকাশ অর্থাৎ মাটির কাজ, কাঠের কাজ, অঙ্কন, নাচ, গান ইত্যাদির মাধ্যমে সৃজনশীলতার বিকাশ ঘটানাের ব্যবস্থা করা।
প্রাথমিক শিক্ষার লক্ষ্যপূরণের জন্য এই স্তরের পাঠক্রমে যেসব বিষয়কে স্থান দেওয়া হয় সেগুলি হল一
(১) দৈহিক কার্যাবলি: দৈহিক বিকাশের জন্য বিভিন্ন ধরনের খেলাধুলাের ব্যবস্থা করা হয়। এ ছাড়া ব্যায়াম, নাচ, গান, বাগান তৈরি ইত্যাদির ব্যবস্থা করা হয়।
(২) স্বাস্থ্য সচেতনতা-সংক্রান্ত কার্যাবলি: শিশুদের মধ্যে সুস্বাস্থ্যের অভ্যাস গড়ে তােলার জন্য দেহের বিভিন্ন অঙ্গ পরিষ্কার রাখা, নিয়মিত দাঁতমাজা, সময়মতাে উপযুক্ত স্থানে মলমূত্র ত্যাগ করা, পােশাক পরিচ্ছদ পরিষ্কার রাখা প্রভৃতি বিষয়ে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়।
(৩) বিদ্যালয়ের পরিবেশ-সংক্রান্ত কার্যাবলি: পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখার শিক্ষা দেওয়ার জন্য পাঠক্রমে। শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষ পরিষ্কার রাখার বিষয়টিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
(৪) সৃজনশীল কার্যাবলি: শিশুদের মধ্যে সৃজন- শীলতার বিকাশ ঘটানাের জন্য পাঠক্রমে ছবি আঁকা, মাটির কাজ, কাগজের কাজ, ছবি সংগ্রহ, বিভিন্ন জিনিস তৈরি করা প্রভৃতি বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
(৫) প্রকৃতি পর্যবেক্ষণ-সংক্রান্ত কার্যাবলি: শিশুদের মধ্যে বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তােলার জন্য এবং সৌন্দর্যবােধের বিকাশ ঘটানাের জন্য প্রকৃতি পর্যবেক্ষণে অনুপ্রাণিত করা হয়।
(৬) ভাষাবোধ সম্পর্কিত কার্যাবলি: শিশুদের মধ্যে ভাষাবােধের বিকাশ ঘটানাের জন্য অক্ষর পরিচয়, লিখতে এবং পড়তে শেখানাের সঙ্গে সঙ্গে গল্প বলা, গল্প শােনা, অভিনয় করা প্রভৃতির অভ্যাস গড়ে তােলা হয়।
(৭) শিক্ষা-সংক্রান্ত কার্যাবলি: শিশুর মধ্য চিন্তাশক্তি এবং যুক্তিবােধের বিকাশ ঘটানাের জন্য পাঠক্রমে সরল গণিত শিক্ষাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
Leave a comment