সূচনা
-
টপােশিট রেফারেন্স নং 73 J/8।
-
ভৌগােলিক অবস্থান(i) 22°0′ উত্তর-22°15′ উত্তর ও ৪6°15′ পূর্ব-৪6°30′ পূর্ব। (ii) জেলা-ময়ূরভঞ্জ (ওডিশা)।
-
মানচিত্রের স্কেল-1: 50,000।
-
মানচিত্রের ক্ষেত্রমান-প্রায় 708 বর্গকিমি।
-
সমােন্নতি রেখার ব্যবধান—20 মিটার।
-
চৌম্বক নতি—প্রায় 45 পশ্চিম (1975) ।
-
জরিপ কাজের বছর—1979-80।
-
মানচিত্রের প্রকাশনা—প্রথম সংস্করণ, 2003।
-
তত্ত্বাবধায়ক সার্ভেয়র জেনারেল অব ইন্ডিয়া।
প্রদত্ত টপােশিট প্রদর্শিত অঞ্চলকে ঢালের বিচ্যুতি অনুসারে প্রধান দুটি ভূপ্রাকৃতিক বিভাগে ভাগ করা যায়। যথা- ব্যবচ্ছিন্ন মালভূমি এবং নদীগঠিত সমভূমি।
(1) ব্যবচ্ছিন্ন মালভূমি : এই মালভূমিটি সিমলিপাল উচ্চভূমির অংশবিশেষ। এই মালভূমিটি সর্বোচ্চ 933 মিটার (দরবারমেলা পর্বত, A3) থেকে সর্বনিম্ন 200 মিটার (বুড়াবালঙ্গা সমভূমি) উচ্চতাবিশিষ্ট। এটি মানচিত্রের অধিকাংশ স্থান জুড়ে বিস্তৃত। ভূমিরূপগত দিক থেকে মালভূমিটি দুটি অংশে বিভক্ত-
-
দক্ষিণের খাড়া ভৃগুসমন্বিত পর্বতময় উচ্চভূমি : দক্ষিণভাগের এই উচ্চভূমি বুড়াবালঙ্গা ও তার উপনদী দ্বারা ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে পৃথক হয়েছে। এই নদী দুটি শৈলশিরার মাঝে একটি সংকীর্ণ উপত্যকা গঠন করেছে।
এই অংশে উচ্চভূমিটি প্রায় 900 মিটার থেকে 200 মিটার পর্যন্ত খাড়া ঢাল সমন্বিত। কিন্তু উচ্চভূমির উত্তরাংশের ঢাল মােটামুটি 600 মিটার থেকে 300 মিটার পর্যন্ত বিস্তৃত। দক্ষিণভাগে এই উচ্চভূমি অসংখ্য ভূগুতে পরিপূর্ণ। ভূগুগুলি 100 মিটার থেকে 200 মিটার উচ্চতা পর্যন্ত খাড়াভাবে বিস্তৃত এবং অধিকাংশ স্থানে পর্বতের ভৃগুঢ়াল 800-400 মিটার পর্যন্ত প্রসারিত। ভৃগু ঢালকে অনুসরণ করে অসংখ্য নদী প্রবাহিত হয়েছে। নদীগুলি এই অংশে খাড়া T আকৃতির গিরিখাত সৃষ্টি করেছে। সবচেয়ে বড় গিরিখাত তৈরি করেছে সানাকাছা নদী। এই ভূমিরূপ সম্ভবত এ অঞ্চলের ডাইক ও চ্যুতি ভূতাত্ত্বিক গঠন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। মালভূমির এই অংশের শৈলশিরা অসংখ্য শঙ্কু আকৃতির পর্বতচূড়ায় পরিপূর্ণ।
-
উত্তরের ক্ষয়প্রাপ্ত নাতি-উচ্চ মালভূমি : উত্তর ও উত্তর পূর্বাংশ জুড়ে বিস্তৃত হয়েছে এই মালভূমি একটি বক্ররৈখিক শৈলশিরার অংশবিশেষ। এর প্রান্তদেশ খাড়া ঢাল সমভূমির সঙ্গে মিশেছে। এই অংশের সর্বোচ্চ উচ্চতা হল 744 মিটার (টুংরু পাহাড়, B1) এবং সর্বনিম্ন উচ্চতা হল 300 মিটার। এই অঞ্চলটি নদীর দ্বারা অতিমাত্রায় ক্ষয়প্রাপ্ত হয়েছে। মালভূমির মাঝে মাঝে স্বল্প পরিসরে সমতল ভূভাগ তৈরি হয়েছে। 400 মিটার থেকে 600 মিটার উচ্চতায় ছােটো ছােটো অনেক শঙ্কু আকৃতির পর্বতচূড়া অবস্থিত। এ ছাড়া এই অঞ্চলে কিছু কিছু ক্ষয়প্রাপ্ত পাহাড়েরও উপস্থিতি লক্ষ করা যায়। এদের উচ্চতা 400 মিটার থেকে 500 মিটার।
(2) নদীগঠিত সমভূমি : মানচিত্রে দুটি সমভূমি রয়েছে। একটি হল দক্ষিণের সমভূমি ও অন্যটি হল উত্তরের সমভূমি।
-
দক্ষিণের সমভূমি : দক্ষিণভাগের সমভূমিটি লম্বা সরু ফালির আকারে সিমলিপাল উচ্চভূমির অন্তর্বর্তী অংশে অবস্থিত। এই অঞ্চলটি বুড়াবালঙ্গা নদী ও এর প্রধান উপনদী সানাকাছা ও কুয়াম নদী দ্বারা সৃষ্টি হয়েছে। সমভূমির ঢাল দক্ষিণ-পশ্চিম থেকে উত্তর-পূর্ব দিকে। এই সমভূমি 1,200 মিটার থেকে 200 মিটার উচ্চতায় অবস্থিত। বুড়াবালঙ্গা ও এর উপনদীর ক্ষয় কাজের ফলে এই সমভূমি সৃষ্টি হয়েছে।
-
উত্তরের সমভূমি : দ্বিতীয় সমভূমিটি দক্ষিণে সিমলিপাল উচ্চভূমির উত্তরে অবস্থিত। এটি বাঁকবল নদী ও এর অসংখ্য দ্বারা সৃষ্টি হয়েছে। এই সমভূমি 300 মিটার উঁচুতে অবস্থিত। এর প্রধান ঢাল দক্ষিণ থেকে উত্তরে। তবে পূর্বাংশে এটি পশ্চিম দিকে এবং উত্তরাংশে এটি দক্ষিণ দিকে ঢালু। সমস্ত ঢাল নদী-উপত্যকায় এসে মিশেছে। এই অংশে ভূমিরূপের যেসব বিশেষ উপনদী বৈশিষ্ট্য লক্ষ করা যায় সেগুলি হল -ভূমিভাগ পুনর্যৌবন লাভের ঘটনাকে নির্দেশ করে (i) 300 মিটার উচ্চতায় বিস্তৃত পুরাতন উপত্যকার মধ্যে বাঁকবল নদীর নিম্ন প্রবাহে সংকীর্ণ নদী-উপত্যকা গড়ে উঠেছে যা ভূমিভাগের পুন্যোবন লাভের সাক্ষ্য বহন করেছে এ ছাড়া এখানে, (ii) উপনদীগুলির মস্তকক্ষয় অতি স্পষ্ট। জলবিভাজিকাগুলির শীর্ষদেশ অত্যন্ত ক্ষয়প্রাপ্ত হয়েছে। দু-পাশের নদীগােষ্ঠীর মধ্যে নদীগ্রাসের সম্ভাবনা রয়েছে। শীর্ষদেশে দু-পাশের নদীগুলি পরস্পরের খুব কাছে চলে এসেছে। (iii) মস্তক ক্ষয়ের ফলে কিছু কিছু নদী সরু ফালির আকারে তার উপত্যকাকে মালভূমির অভ্যন্তরভাগ পর্যন্ত বিস্তৃত করেছে। (iv) মানচিত্রের উত্তর-পশ্চিমাংশে পুরাতন উপত্যকায় সর্বাধিক 600 মিটার উচ্চতাবিশিষ্ট কতকগুলি অবশিষ্ট পাহাড় আছে যা প্রথম ক্ষয়চক্রের সাক্ষ্য বহন করে চলেছে।
Leave a comment