একজন সাধারণ মানুষ তার চারিত্রিক গুণাবলি, সামাজিক ক্রিয়াকলাপে অংশগ্রহণ, চিন্তা-চেতনার বিকাশ, শারীরিক সুস্থতা, এবং উৎকৃষ্ট উৎপাদনশীলতার জন্যই অন্যান্যদের থেকে উচ্চস্তরে অবস্থান করে এবং প্রকৃত মানুষ হয়ে ওঠে।

(১) সুস্থ শারীরিক জীবনযাপন: প্রকৃত মানুষ হওয়ার একটি গুণ হল সুস্থ শরীর। সুস্থ শরীরে সুস্থ মন লুকিয়ে থাকে। সুস্থ শারীরিক জীবন যাপন করে সে সমাজের কল্যাণ সাধন করতে সক্ষম হবে।

(২) যথার্থ মানসিক বিকাশ : প্রকৃত মানুষ হওয়ার জন্য প্রয়ােজন মানসিক গুণগুলির যথার্থ বিকাশসাধন। উক্ত মানুষের অনিন্দ্যসুন্দর ব্যক্তিত্ব ব্যক্তিকল্যাণ তথা সমাজ কল্যাণের সহায়ক।

(৩) সামাজিক সঙ্গতিবিধান : সকলের সঙ্গে সহযােগিতাপূর্ণ পরিবেশে মানিয়ে চলাই হল প্রকৃত মানুষের লক্ষণ। প্রয়ােজনে সে পরিবেশকে নিজের আয়ত্তে আনতে পারবে। সমাজে সকলের সঙ্গে মিলেমিশে থাকতে পারবে।

(৪) উৎপাদন বৃদ্ধিতে সহায়ক : প্রকৃত মানুষ রাষ্ট্রের উৎপাদন বৃদ্ধিতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করবে। এতে রাষ্ট্রের কল্যাণ সাধিত হবে।

(৫) চারিত্রিক বিকাশ : প্রকৃত মানুষ হবেন উদারচেতা চরিত্রের অধিকারী। যেমন পবিত্রতা, সংযমী, নিষ্ঠাবান ও অন্যান্য মানবিক গুণগুলির অধিকারী। তার আধ্যাত্মিক ও নৈতিক মূল্যবােধের যথার্থ বিকাশ-সহ জীবনােপযােগী বিকাশ ঘটে। এ ছাড়াও প্রকৃত মানুষ হবেন দূরদৃষ্টিসম্পন্ন যার ফলে যথাযথ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারবেন।

(৬) সংবিধান-সচেতন : প্রকৃত মানুষ হওয়ার আর-একটি গুণ হল তিনি অবশ্যই সংবিধান-সচেতক হবেন। দেশের সংবিধানের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হবেন। তার মধ্যে জাতীয়তাবাদ ও আন্তর্জাতিকতাবােধের বিকাশ ঘটে।

(৭) ঐতিহ্যের এবং সংস্কৃতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল : প্রকৃত মানুষ ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল হন। শুধু তাই নয়, তিনি এর সংরক্ষণ ও সঞ্চালনে সহায়তা করেন।

(৮) গণতান্ত্রিক আদর্শে বিশ্বাসী : প্রকৃত মানুষের অপর একটি গুণাবলি, তিনি গণতান্ত্রিক আদর্শে বিশ্বাসী হবেন এবং সকল মানুষকে যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করতে পারবেন। জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সকল মানুষকে সমমর্যাদা দানে সম্পন্ন মানুষই প্রকৃত মানুষ।

(৯) কুসংস্কারমুক্ত মানুষ : আদর্শ মানুষ কুসংস্কারমুক্ত হবেন। জাতি, ধর্ম, বর্ণের সংকীর্ণ গণ্ডির বাইরে থাকবেন। সকলের সঙ্গে একাত্ম হয়ে কাজ করবেন।