জাতীয় সাক্ষরতা অভিযানের কার্যকরী পদক্ষেপ হল পূর্ণ সাক্ষরতা অভিযান। কেরল রাজ্যের এর্নাকুলাম জেলার পূর্ণ সাক্ষরতা অর্জনকে লক্ষ রেখে পূর্ণ সাক্ষরতা অভিযান শুরু হয়। এর উদ্দেশ্য হল সমগ্র জনগণকে শামিল করে শিক্ষার্থীদের কাছে শিক্ষার সুযোগ পৌছে দেওয়া। ভারতবর্ষে ১৯৯০ খ্রিস্টাব্দে UNESCO-র সহযোগিতায় পূর্ণ সাক্ষরতা অভিযানের কাজ শুরু হয়। এই প্রকল্পে বিভিন্ন বিষয়ের উপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়। সেগুলি হল—

(১) বয়স্ক বা সামাজিক শিক্ষা: এই প্রকল্পে বয়স্ক বা সামাজিক শিক্ষার উপর বিশেষভাবে গুরুত্ব আরোপ করা হয়। বয়স্কদের শিক্ষার প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হয়।

(২) বিশেষ পদ্ধতি গ্রহণ : দেশের স্বার্থে বয়স্ক ব্যক্তিদের সাক্ষর করে তােলার জন্য বিশেষ পদ্ধতি গ্রহণ করা হয়।

(৩) প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা : কর্মে নিযুক্ত বয়স্ক ব্যক্তিদের দক্ষতা বাড়ানাের জন্য প্রয়ােজনীয় প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।

(৪) শিক্ষা-উপকরণের ব্যবসা : শিক্ষা সহায়ক বিভিন্ন শিক্ষা সহায়ক উপকরণের ব্যবস্থা করতে হবে।

(৫) তহবিল গঠন : কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে সাক্ষরতা প্রসারের জন্য উপযুক্ত পরিমাণ তহবিল গঠন করা প্রয়োজন।

(৬) অন্যান্য কর্মসূচি : পরিবেশ সংরক্ষণ, টীকাদান, পরিবার পরিকল্পনা, শিশুর প্রতি যত্ন, মাতৃত্বকালীন পরিষেবা ইত্যাদি কর্মসূচি মানুষের মধ্যে অধিকার সচেতনতা, স্বাস্থ্য বিষয়ে সচেতনতা বোধ গড়ে তুলতে সহায়ক।

ব্যবস্থাপনা : পূর্ণ সাক্ষরতা অভিযান কর্মসূচি জেলা পরিষদের তত্ত্বাবধানে জেলা শাসকের নেতৃত্বে নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট এলাকা ভিত্তিক ২ হয়ে থাকে। বস্তুতপক্ষে জেলা, ব্লক, পঞ্চায়েত, গ্রামসভা এরকম পর্যায় 3 অনুযায়ী কাজ সংঘটিত হয়। এই কর্মসূচি রূপায়ণের জন্য প্রতিটি 3 পর্যায়ের পারস্পরিক সংযোগ স্থাপিত হয়।

জনগণের প্রচেষ্টা ও উদ্যোগ ছাড়া কখনােই এই কর্মসূচি রূপায়ণ  সম্ভব নয় নিখুঁতভাবে। ২০০০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে ভারতে পূর্ণ সাক্ষরতা অভিযান সফল করার পরিকল্পনা থাকলেও তা সাফল্য লাভ করতে পারেনি সেভাবে।