অথবা, পুরােপলীয় যুগ বলতে কী বুঝ?
অথবা, পুরােপলীয় যুগের সংজ্ঞা দাও।
ভূমিকাঃ আধুনিক সভ্য জগৎ একদিন বা এক বছরে সৃষ্টি হয়নি। যুগে যুগে নানা পরিবর্তনের ধারাবাহিকতায় আধুনিক সভ্য জগতের অভ্যুদয় ঘটেছে। বিভিন্ন গবেষণা চালিয়ে বিভিন্ন যুগের নিদর্শন আবিষ্কার করেছেন। প্রত্নতাত্ত্বিকগণ খননকাজ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে প্রত্নতাত্ত্বিকরা প্রাগৈতিহাসিক কালকে প্রাচীন প্রস্তর যুগ, নব্য প্রস্তর যুগ, ব্রোঞ্জ যুগ, লৌহ যুগ ইত্যাদি কতিপয় সুনির্দিষ্ট যুগে বিভক্ত করেছেন। প্রত্নতাত্ত্বিকরা প্রাগৈতিহাসিক যুগের সংস্কৃতির কথা বলতে গিয়ে মানুষ সে সময় যেসব পাথরের অস্ত্র ব্যবহার করেছেন তার এবং মানবসমাজের বিকাশে পাথরযুগের বিশেষ গুরুত্বের কথা বর্ণনা করেছেন।
পুরােপলীয় যুগঃ পুরােপলীয় যুগ বা Paloeolithic age (Palaious> পুরাে > পুরাতন; Lithas > উপল> পাথর) কে সরল শব্দে বলা যায় প্রাচীন পাথরের যুগ। এটি ছিল প্রস্তর যুগের প্রাথমিক পর্যায়। এ সময় অন্যান্য সহজ দ্রব্যাদির পাশাপাশি মানুষ ব্যাপক হারে সমার্জিত, স্কুল এবং অমসৃণ পাথুরে অস্ত্র ব্যবহার করতাে বলে যুগটির এরূপ নামকরণ করা হয়েছে। পুরােপলীয় যুগ ছিল প্রস্তর যুগের দীর্ঘস্থায়ী কাল। প্রাথমিকভাবে দশ লাখ থেকে পনের লাখ খ্রিস্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত সময়কাল পুরােপলীয় যুগ হিসেবে নির্ধারিত, কারণ আফ্রিকায় প্রায় দশ লাখ বছর পূর্বে ব্যবহৃত পাথুরে অস্ত্র পাওয়া যায়।
পরিশেষঃ মানবসভ্যতার ইতিহাস সম্ভবত প্রস্তরযুগেই শুরু হয় এবং তা পুরােপলীয় প্রস্তর যুগে। প্রয়ােজনের তাগিদে মানুষ তার বুদ্ধিবৃত্তি প্রয়ােগের মাধ্যমে টিকে থাকার জন্য লড়াই করেছে। প্রস্তর যুগেই মানুষ শিকার, মাছ ধরা, ফলমুল সংগ্রহ ইত্যাদির মাধ্যমে জীবনধারণ করেছে। পাথরের অস্ত্রের মাধ্যমে হিংস্র জানােয়ারের কবল থেকে রক্ষা পাবার প্রয়াস পেয়েছে। প্রতিকূল পরিবেশ থেকে রক্ষা পেতে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধান পেয়েছে মানুষ এ যুগেই।
Leave a comment