‘পুতুল নাচের ইতিকথা’ উপন্যাসে শশী-কুসুম আখ্যানটি প্রধান আখ্যান। শশী এই উপন্যাসের নায়ক, তাকে ঘিরেই অন্যান্য চরিত্রের আবর্তন-বিবর্তন। কিন্তু শশী ও কুসুমের সম্পর্কই এই উপন্যাসের প্রধান বিষয়বস্তু। এই সার্থক বিন্যাসের মধ্যে দিয়ে উপন্যাসের জটিলতা, লেখকের জীবনবোধ সবই পরিস্ফুট হয়েছে। উপন্যাসের সূত্রপাত থেকেই কুসুমের সঙ্গে শশীর সম্পর্ক এবং কুসুমের দেশত্যাগের পর শশীর জীবনে নানা জটিলতা ও পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে উপন্যাসের শেষ।
কুসুম হাস্যে-লাস্যে-চঞঞ্চলতায় পূর্ণ এক তরুণী। বাপের ঘরে আদরে মানুষ হয়ে শেষ পর্যন্ত পরানের বাড়িতে বৌ হয়ে তার জীবনে অনেক দুঃখকষ্ট ও বাক্যযন্ত্রণা সহ্য করতে হয়। তাই সে সংসার থেকে সরে এসে খিড়কির দরজা দিয়ে বেরিয়ে আসে ও তালপুকুরের ধারে মাটিতে লুটানো তালগাছের গুঁড়িতে চুপচাপ বসে থাকে। লোকে তাকে পাগলাটে ভাবে। তার শাশুড়ী মোক্ষদা জোর দিয়ে বলে “বেশ পাগল—পাগলের বংশ যে।” শশী মতিকে দেখতে আসে। মতির প্রতি শশীর বাৎসল্য মেশানো স্নেহকে নিয়ে সে ঈর্যা করে। তার মনের নানা স্তর, নানা পর্যায় এই উপন্যাসে ফুটে উঠেছে। বেগুনখেতের বেড়ার ওপার থেকে কুসুম শশীকে ডাক দেয়। শশী তাকে সাবধান করে দেয় এই বলে যে তাকে সাপে কামড়াতে পারে। এর উত্তরে কুসুম বলে “সাপে আমাকে কামড়াবে না ছোটবাবু, আমার অদৃষ্টে মরণ নেই।” এইভাবে কুসুম-শশীর সম্পর্ক গড়ে ওঠে নানা স্তরে। কুসুম তালপুকুরের ধারে এসে শশীর সঙ্গে দেখা করে। পরান এ-সব বিষয়ে উদাসীন। কুসুম পরানকে ভর্ৎসনা করে—”মেয়ে মানুষের আঁচল ধরা পুরুষকে সে দুচোখে দেখতে পারে না।” কুসুমের বাক্যবাণ, তার ব্রোধ, তার অভিমান সবই তার চরিত্রের আকর্ষণ বাড়িয়ে দেয়। সে তার হৃদয়ানুরাগকে নানা মধুর ভঙ্গিতে প্রকাশ করে। কিন্তু শশী এসব ব্যাপারে নির্বিকার থাকে। শশী কর্তব্যপরায়ণ মানুষ। সে গ্রামের লোকের চিকিৎসা নিয়ে ব্যস্ত থাকে। যখন যে ডাকে সে বিদ্যুৎগতিতে ছুটে যায়। মতি, কুসুম, সেনদিদি সকলের ডাকে সে ছুটে যায়। শশী চরিত্রের দুটো দিক আছে, একটা তার সামাজিক অহৎ, অন্যটি তার ব্যক্তিগত দিক, যে দিক নিভৃত। এই নিভৃত দিকটা তার কল্পনার দিক। এই অংশটি গোপন ও মুক। এই নিভৃত কল্পনার কেন্দ্রেই বসেছিল কুসুম তার নিত্যনারীসত্তা নিয়ে। তাই শশীর জীবনে কুসুমের স্থান ছিল গভীরশায়ী। “শশীর চরিত্রে দুটি সুস্পষ্ট ভাগ আছে। একদিকে তাহার মধ্যে যেমন কল্পনা, ভাবাবেগ ও রসবোধের অভাব নাই, তেমনি সাংসারিক বুদ্ধি ও ধনসম্পত্তির প্রতি মমতাও তাহার যথেষ্ট। তাহার কল্পনার অংশটুকু গোপন ও মুক। অত্যন্ত ঘনিষ্ঠভাবে তাহার সঙ্গে না মিশিলে একথা কেহ টের পাইবে না যে তাহার ভিতরের জীবনের সৌন্দর্য ও শ্রীহীনতায় একটা গভীর সহানুভূতিমূলক বিচার পদ্ধতি আছে।” কিন্তু কাজ পাগল শশী প্রথম থেকেই কুসুমের ডাকে নির্লিপ্ত ও নির্বিকার। প্রথম থেকে কুসুম ঈর্ষাদিগ্ধ ভঙ্গিতে শশীকে রোজ তাদের বাড়িতে আসতে বলে, “রোজ একবার এলেই হয়। জ্বরে ভুগছে মেয়েটা, দেখে তো যাওয়া উচিত?” শশীর কুসুমের কথা শোনার সময় নেই, তার কাজ আছে। কুসুম ডাকে উত্তরে বলে, ‘মিছে কথা নয়, সত্যি মিছে নয়, ছোটবাবু।’ শশী চলে যায়। অন্ধকারে বেগুনখেতে দাঁড়িয়ে কুসুম একটু হাসে। গাছের মাথায় আলো পড়েছে। কুসুম জানে ওখানে চাঁদ উঠবে। চাঁদ ওঠার আভাস দেখলে কুসুম যেন শুনতে পায়—ভিনদেশি পুরুষ দেখি চাঁদের মতন/লাজরক্ত হইলা কন্যা পরথম্ যৌবন। কুসুমের পূর্বরাগের এই পরিচয় তার প্রেমের রোমান্টিক বর্ণাভ। কিন্তু সমগ্র উপন্যাসে এই প্রেম সোচ্চার নয়। তা নারীর হৃদয়ের নীরব প্রকাশ হিসেবেই ধরা দিয়েছে। তাই এসেছে অকারণ ক্রোধ, বিতর্ক ও মতান্তর। কিন্তু এ-সব তার গভীর অনুরাগের দ্যোতনাই বহন করে আনে। কুসুমের শশীর প্রতি অনুরাগের ব্যঞ্জনাময় প্রকাশ এই উপন্যাসের রোমান্টিক আকর্ষণ। শশী-কুসুম প্রণয় সম্পর্কের গতি পরিবর্তন এইভাবেই বিচার্য। উপন্যাসের প্রথম দিকের কুসুমের প্রণয় সম্ভাষণ শশীর কর্মব্যস্ত, নীতিশাসিত জীবনে কোনো সাড়া তোলেনি। তাই উপন্যাসের পঞ্চম অধ্যায়ে কুসুমের চরিত্রের ক্রোধ ও অভিমান শশীকে চকিত করে তোলে। ঘটনাটা এইরকম। রাতে একদিন কুসুমের পেট ব্যথা হয়। সাধারণত শশী রাতে রোগী দেখতে চায় না। কিন্তু কুসুমের ব্যথার গুরুত্ব দেখে শশী বাড়ি গিয়ে ওষুধ দেয়। পেটের ব্যথা রহস্যময় অসুখ। পরানকে আড়ালে ডেকে সে কিছু প্রশ্ন করেছিল। নিজে আর ফিরে যায়নি। পরদিন খবর নিতে গিয়ে কুসুমের অগ্নিশর্মা মূর্তি দেখে শশী অবাক ও বিমূঢ়। ওষুধ খেয়ে ব্যথা কমেছিল, তবু কুসুমের মন ওঠেনি। তারপর কুসুম শশীকে গলায় ছুরি বসানো ডাক্তার ইত্যাদি বলে বিদ্ধ করে। শশীর স্বভাবের চারিদিকে শিক্ষা ও সভ্যতার খোলস সে বাঁচিয়ে রেখেছিল, তাতে সে ফাটল ধরিয়েছিল। কুসুমের দেওয়া অপমান সে বিচার করেও এর পেছনে নারীমনের রহস্যকে সে বুঝতে পারেনি। কিন্তু কুসুম চঞ্চলা নারী। দিন চার পর সে চুপি চুপি ক্ষমা চাইতে এসেছিল। “দুপুরবেলা চুপিচুপি চোরের মতো”। বাগান দিয়ে এসে কুসুম শশীকে ফিসফিস করে ডাকে—“ছোটবাবু, শুনুন।” শশী দেখে তার সাধের গোলাপচারাটি কুসুম দুই পায়ে মাড়িয়ে মাটিতে পুঁতে দিয়েছে। গোলাপচারা সে হত্যা করে, কিন্তু কুসুমকে সে ক্ষমাও করে। কুসুম স্বীকার করে চাররাত সে ভালো করে ঘুমোয়নি, কথাটা শশী বিশ্বাস করে। জলভরা চোখে কুসুম কথা কটা বলেছিল। এর সঙ্গে কুসুম শশীকে জানায় সে বাপের বাড়ি চলে যাচ্ছে। শশী কিন্তু নারীমনের এই রহস্যময় আলো-আঁধারি বুঝতে পারে না। শশী চিকিৎসকের দৃষ্টিতে তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে। কিন্তু তার মনের রহস্যকে সে বুঝতে পারে না। কুসুম একাই শশীর ঘর দেখতে আসে। এ ব্যপারে বদনামের ভয় কুসুমের নেই। এই দৃশ্যে কুসুম শশীকে যা বলে তার রহস্যও শশী বুঝতে পারে না। কুসুম বাপের বাড়ি চলে যাবার কথা যেভাবে বলে তাতে পঞ্চম পরিচ্ছেদে কুসুমের অবচেতন মনের এই উৎসুক প্রকাশ শশী বুঝতে পারেনি গভীরভাবে। কিন্তু রহস্যময়ী কুসুম চরিত্র শেষ পর্যন্ত শশীকে কতখানি বিচলিত করেছে, তার পরিচয় উদ্ঘাটিত হয়েছে উপন্যাসের উপাত্ত দৃশ্যে। নায়ক-নায়িকার সম্পর্কের এই বিবর্তনটাই উপন্যাসের প্রধান বিষয়বস্তু। কুসুমের উৎসুক আকাঙ্ক্ষা, কামনা যখন শেষ পর্যন্ত শশীর সামাজিক ‘অহং’-কে ভেঙে এগোতে পারল না তখনই কুসুমের প্রতিশোধ-স্পৃহা জাগ্রত হল। উপন্যাসে চরিত্রমাত্রই পরিবর্তনশীল। ঘটনার স্রোতে সেই পরিবর্তনশীলতার মধ্য দিয়ে চরিত্রগুলো এগিয়ে যায়, রূপান্তরিত হয়। শশী-কুসুমের প্রণয়কাহিনী এই দিক থেকে পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে এগিয়ে গেছে।
ষষ্ঠ অধ্যায়ে শশী-কুসুম সম্পর্কের একটা পর্যায় লক্ষ্য করা যায়। শশীর মধ্যে মাঝে মাঝে গ্রাম ছেড়ে শহরে যাবার প্রবণতা জেগে ওঠে। এই পরিবেশ অসহিষ্ণু মন শশীর মধ্যে বৃহত্তর সত্তার পরিচায়ক। কিন্তু আত্মবিশ্লেষণ করে দেখে যে সে শত ইচ্ছা সত্ত্বেও গ্রামকে ছাড়তে পারছে না, তার পশ্চাতে আছে কুসুমের সংস্পর্শ। “তবু শশীর মনে হয় চিরকালের জন্য সে মার্কামারা গ্রাম্য ডাক্তার হইয়া গিয়াছে এ গ্রাম ছাড়িয়া কোথাও যাইবার শক্তি নাই। নিঃসন্দেহে এ-জন্য দায়ী কুসুম। শশীর কল্পনার উৎস সে যেন চিরতরে রুদ্ধ করিয়া দিয়াছে।” শশীর কল্পনার কেন্দ্রে যে অসম্ভব মানবী বিদ্যমান ছিল, কুসুম যেন তাকে মিথ্যা করে দিয়েছে। এই অধ্যায়ে শশী চরিত্রের আর এক দিক স্পষ্ট। শশীকে কুসুম ভালবাসে গভীরতা দিয়ে, কিন্তু শশী বোধ হয় তখনও এ ব্যাপারে প্রত্যয়নিষ্ঠ নয়। তাই কুসুমের সঙ্গে মতির সমস্যা সমাধানের জন্য আলোচনা করতে করতে সে একসময় মতিকে বিয়ে করে তাকে রক্ষা করতে চায়। আলোচনা করতে করতে সে কুসুমকে বলে “আমি মতিকে বিয়ে করতে পারি।” এই মানসিকতার জট বুদ্ধিমতী কুসুম কেবল সুকৌশলে ছাড়িয়ে দেয়নি, শেষে নিজের আত্মপ্রকাশকে শশীর কাছে আত্মসমর্পণের ভঙ্গিতে উপস্থাপিত করেছে–“এমনি চাদনি রাতে আপনার সঙ্গে কোথাও চলে যেতে সাধ হয় ছোটবাবু।” কুসুমের এই রোমান্টিক উক্তি শুনে শশীর মনে হয় এ কথা কুসুমের বানানো। সম্পর্কের জটিলতার কথা এইভাবেই ফুটে ওঠে “মতিকে পাছে সে আবার নিজে বিবাহ করিয়া কুমুদের হাত হইতে বাঁচাইতে চায়, তাই কুসুম এই মন রাখা কথা বলিয়াছে।” তবু চাঁদের আলোয় কুসুমের এই স্বপ্ন দেখার মোহাবশে পূর্ণ বলে। মনে হয়। এরপর কুসুম যা বলেছে তা আবেগের তীব্রতায় ও জীবনের উত্তাপে পূর্ণ এক নারীত্বের চিরন্তন আকাঙ্ক্ষা—“আপনার কাছে দাঁড়ালে আমার শশীর এমন কেন করে ছোটবাবু? শরীর শরীর, তোমার মন নাই কুসুম।” এই পর্যন্ত এসে কুসুম-শশী সম্পর্কের এক শীর্ষবিন্দু লক্ষ্য করা যায়।
শশী-কসুমের সম্পর্কের মধ্যে যে উত্থান-পতন তার জন্য দায়ী উভয়ের ব্যক্তিগত পার্থক্য। শশীর সমাজ-সংসার ও দেশ সম্পর্কে আগ্রহ যা দিয়ে তার Social ego গড়ে উঠেছে, তা কুসুমের হাস্য লাস্য-পূর্ণ আত্মবৃত্তের জগতে এসে তৃপ্ত হতে পারেনি বলে দুজনের মধ্যে ব্যবধান এত গভীর। শশী তাকে অভিযোগ করে এই বলে “শুধু আমার আর তোমার নিজের কথা।” কুসুমের কাছে জগতের জগতের অনেক আজে-বাজে কথা আছে যা সীমাহীন—“কত আজে বাজে কথা আছে সীমা তো নেই তার।” দৃষ্টিভঙ্গির এই পার্থক্য দুজনের সম্পর্কের বিবর্তনকে প্রভাবিত করে। তবে কুসুমের দুর্নিবার প্রেম, শশীর নির্ভরতা এই সম্পর্কের যে ভিত্তিভূমি, এ বিষয়ে সন্দেহ নেই। ইতিমধ্যে বর্ষা এলে কুসুমের বাবা মেয়েকে নিতে চলে আসেন। বাদল দিনের এক দুপুর বেলায় হাড় ভাঙা ও কোমর ভাঙার ওষুধ নিতে এসে কুসুম তার কাছে বোঝাপড়া করতে আসে। এতদিন শশী কুসুমের প্রতি যে অন্যায় ব্যবহার করে এসেছে তার জন্য লজ্জিত বোধ করে। শশী কুসুমকে বোঝায় ও তার দায়বদ্ধতার কথা জানায়। হাতের ব্যথার ওষুধ নিয়ে এসে কুসুমের ব্যবহার শশীর কাছে দুর্বোধ্য বলে মনে হয়। শশী ভাবে কুসুমের মন গ্রাম্য মন কোনো কিছু বুঝে উঠতে পারে না। কুসুমের আবেগ তখন “গেঁয়ো পুকুরের ঢেউ। জগতে সাগর তরঙ্গ আছে।” এই টানাপোড়েনের মধ্যে দিয়ে কুসুমের প্রতি শশীর নির্ভরতা ও গোপনশায়ী আসক্তির পরিচয় ফুটে ওঠে।
ক্রমে ক্রমে কুসুমের তীব্র আবেগ স্তিমিত হয়ে পড়ে। সে তালবনে আর শশীকে ডাকে না। শশীর জীবনে কাজের চাপ বড়ো বেশি। কুসুম গাঁ ছেড়ে চিরকালের মতো চলে যেতে চায়। শশীর কাছে তার মনের আবেগ করে অকপটে প্রকাশ করতে গিয়ে শেষে শশীকে আঘাত করে কুসুম। কুসুম অনুযোগ করে, চিরসংযত শশী কুসুমকে নিজের সুপ্ত অনুভূতি জানিয়ে দেয়—“আমার সঙ্গে চলে যাবে বৌ কুসুম সঙ্গে জবাব দিল—’না।” এরপর কুসুম থেদের সঙ্গে তার জীবনের ট্র্যাজেডির কথা জানায়-“মানুষ কি লোহার গড়া, চিরকাল সে একরকম থাকবে, বদলাবে না। বলতে এসেছি যখন কড়া করেই বলি, আজ হাত ধরে টানলেও আমি যাব না।” এই উক্তি কুসুমের আত্মাভিমান ও প্রেমের ট্র্যাজেডিকেই প্রকাশ করেছে। শশী স্বীকার করে যে কুসুমের জন্য তার মন কাদবে। শশীর ব্যাকুল উৎসুক মিনতি শেষ পর্যন্ত নিষ্ফল আবেগে ফিরে যায়। কুসুমের পরিবর্তন দেখে শশী অবাক হয়। শশী আবেগে আত্মবিস্মৃত হয়েছিল, কিন্তু জীবনের যুক্তি ও ন্যায়সূত্রকে সে বোঝে—“ঘরে আগুন লাগিলে আগুন নেভে-বাহিরেরও, মনেরও।” কেবল নিজের পরিবর্তন দেখে শশী অবাক হয়ে যায়। কুসুমের প্রেমস্বর্গচ্যুৎ শশীর জীবনের প্রতিক্রিয়া শেষ পর্যন্ত ওকে শূন্যতায় গিয়ে পৌঁছয়। “কুসুম মরিয়া গিয়াছে”—এই বোধ শশীকে নতুন উপলব্ধির প্রান্তে উপনীত করে। কর্মব্যস্ত শশী, লোকসংসারে কল্যাণ কর্মে নিয়োজিত শশী, আর্ত রোগীর আশ্রয় শশী নবরূপে রূপান্তরিত হয় – “এমন দীন ভাব সে কোথায় পাইল, কোথায় শিখিল এমন কাঙালপনা”। কুসুমের অবর্তমানে প্রেমের অবর্তমানে সে শুধু হয়ে থাকবে পূর্বজীবনের কঙ্কালমাত্র। এই ট্র্যাজেডিই শশী-কুসুম সম্পর্কের শেষ কথা।
Leave a comment