প্রাচীনকালে মৌলসমূহের ধর্মের সাদৃশ্য সম্পর্কে মানুষের জানা ছিল না বলে প্রতিটি মৌলের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্ম আলাদাভাবে জানা হতো। কিন্তু পরবর্তীতে বিজ্ঞানীগণ দেখলেন যে মৌলসমূহের ধর্মের মধ্যে সম্পর্ক বিদ্যমান। এ থেকে পরবর্তীতে পর্যায় সারণি আবিষ্কার করা হয়।
পর্যায় সারণিঃ একই ধর্ম বিশিষ্ট মৌল সমূহকে একই শ্রেণিতে রেখে এবং আবিষ্কৃত সকল মৌলকে স্থান দিয়ে বর্তমানে যে সারণি প্রচলিত আছে তাকে পর্যায় সারণী বলে।
পর্যায় সারণির উদ্দেশ্যঃ
১. আবিষ্কৃত সকল মৌলসমূহের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্ম সহজে জানা যায়।
২. মৌলের সুশৃংখল শ্রেণীকরণ করা যায়।
৩. নতুন মৌলের আবিষ্কার সম্পর্কে পূর্বাভাস।
৪. শিল্প গবেষণার পথ নির্দেশ করা।
৫. পরমাণুর গঠন রহস্যের সমাধান করা।
৬. বিভিন্ন মৌল সম্পর্কে সহজে পরিচিতি লাভ করা।
৭. রসায়ন পাঠ সহজীকরণ।
পর্যায় সারণির পটভূমিঃ
পর্যায় সারণী হচ্ছে, যেখানে মৌল সমূহের ধর্মের সাদৃশ্য বিদ্যামান রেখে মৌল সমূহের শ্রেনিকরণ। বিভিন্ন বিজ্ঞানি বিভিন্ন সময়ে অনেক পরিশ্রমের মাধ্যমে পর্যায় সারণি আবিষ্কার করে।
সর্বপ্রথম ল্যাভয়সিয়ে 1789 খ্রিস্টাব্দে মৌলসমূহকে ধাতু ও অধাতু দুই ভাগে ভাগ করেন।
পরবর্তীতে ডোবেরাইনার ( J. W. Dobereiner) 1829 খ্রিস্টাব্দে একই ধর্ম বিশিষ্ট মৌলসমূহকে পারমাণবিক ভর অনুসারে তিনটি করে মৌলের একটি শ্রেণীতে ভাগ করেন। একে তাঁর ত্রয়ী সূত্র বা ট্রায়াড বলে। এ ক্ষেত্রে দেখা যায় প্রথম ও তৃতীয় মৌলের পারমাণবিক ভরের গড় মান হচ্ছে, দ্বিতীয় মৌলের পারমাণবিক ভরের সমান বা প্রায় সমান হয়ে থাকে। যেমনঃ
প্রথম ট্রায়াড Cl 35.5
= (35.5+ 126.91)/ 2
Br 79.92 = 81.2
I 126.91
দ্বিতীয় ট্রায়াড Fe 55.85
= ( 55.85+58.71)
Co 58.94 = 57.28
Ni 58.71
এরপর, ফরাসি বিজ্ঞানী ভিসা ডি স্যাঁ কোর্টোয়া (De Chan Courtois) 1862 খ্রিস্টাব্দে একটি খাড়া সিলিন্ডারে ঘুরানোভাবে মৌলগুলিকে এমন ভাবে সাজানো হয়, যেখানে একই ধর্ম বিশিষ্ট মৌলসমূহ পরস্পরের ঠিক উপর নিচে অবস্থান করে। মৌলের এ ধরনের বিন্যাসকরণ টেলুরিক স্ক্রু নামে পরিচিত। একে আধুনিক পর্যায় সারণি প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
1864 খ্রিস্টাব্দে জন নিউল্যান্ডস (John Newlands) তৎকালীন জ্ঞাত সকল মৌলগুলিকে তাদের পারমাণবিক ভরের ছোট থেকে বড় অনুসারে সাজিয়ে দেখেন যে, প্রতি প্রথম মৌলের ধর্মের সাথে প্রতি অষ্টম মৌলের ধর্মের সাদৃশ্য বিদ্যমান। এটি নিউল্যান্ডের অষ্টক সূত্র নামে পরিচিত। যেমনঃ
১ম অষ্টকঃ H Li Be B C N O
২য় অষ্টকঃ F Na Mg Al Si P S
এর পরবর্তীতে মেন্ডেলিফ ও লুথার মেয়ার ( Lother Meyr) দুইজন আলাদাভাবে মৌলসমূহের ধর্মাবলি নিয়ে পর্যালোচনা করে পর্যায় সারণি আবিষ্কার করেন। লুথার মেয়ার ভৌত ধর্মের উপর ভিত্তি করে মৌলসমূহকে শ্রেণীভূক্ত করেন। পর্যায় সারণি আবিষ্কারের ক্ষেত্রে লুথারের অবদান বেশ গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু রাশিয়ান বিজ্ঞানী দিমিত্রি মেন্ডেলিফ (Dmitri Mendeleev) রাসায়নিক ধর্মের উপর ভিত্তি করে মৌলগুলিকে একই ধর্ম ভুক্ত করে সাজান। তবে লুথার মেয়ারের চেয়ে মেন্ডেলিফের অবদান অনেক বেশি হওয়ায় মেন্ডেলিফকে পর্যায় সারণি জনক বলা হয়। 1869 খ্রিস্টাব্দে মেন্ডেলিফ মৌলসমূহকে তাদের ক্রমবর্ধমান পারমাণবিক ভর অনুসারে সাজান। মেন্ডেলিফ মৌলগুলির সাদৃশ্য বজায় রেখে আটটি গ্রুপ ও বারোটি পর্যায়ে বিভক্ত করেন। মেন্ডেলিফ 67 টি মৌলের সমন্বয়ে পর্যায় সারণি তৈরি করেন। তার মধ্যে 63 টি মৌল জানা ছিল এবং চারটি মৌল সম্পর্কে তিনি ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন। এ চারটি মৌল হল স্ক্যানডিয়াম(Sc), গ্যালিয়াম(Ga), জার্মেনিয়াম(Ge), টেকনেসিয়াম(Tc).
মেন্ডেলিফের পর্যায় সূত্রঃ মৌলসমূহের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মাবলি, তাদের পারমাণবিক ভর বৃদ্ধির সাথে ক্রমান্বয়ে আবর্তিত হয়।
পরবর্তীতে মেন্ডেলিফের পর্যায় সারণির কিছু ত্রুটি পাওয়া যায়। এর মধ্যে একটি হচ্ছে তিন জোড়া মৌলের অবস্থানগত সমস্যা। যেমনঃ ⁴ºAr ও ³⁹K ; ⁵⁸’⁹Co ও ⁵⁸’⁶Ni ; ¹²⁷Te ও ¹²⁶I. আর্গন ও পটাশিয়ামের ক্ষেত্রে দেখা যায়, পটাশিয়ামের ভর 39 আর্গনের ভর 40 থেকে কম। কাজেই পটাশিয়ামের অবস্থান আর্গনের পূর্বে হওয়া উচিত। কিন্তু সে ক্ষেত্রে ক্ষার ধাতু পটাশিয়াম নিষ্ক্রিয় গ্যাসের সাথে এবং নিষ্ক্রিয় গ্যাসের অবস্থান ক্ষার ধাতুর সাথে হয়ে থাকে। এতে পর্যায় সারণির মূল উদ্দেশ্য ব্যাহত হয়।
এরপর 1913 সালে মোসলে পারমাণবিক সংখ্যা আবিষ্কার করলে মৌল গুলিকে তাদের পারমাণবিক সংখ্যা অনুসারে সাজানো হয়। পারমাণবিক সংখ্যা হচ্ছে এমন একটি সংখ্যা যা ঐ মৌলের প্রোটন সংখ্যার সমান। পারমাণবিক সংখ্যা একটি ক্রমিক সংখ্যা হাওয়ায় প্রথম পর্যায়ে দুটি মৌল, দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যায়ে আটটি করে মৌল, চতুর্থ ও পঞ্চম পর্যায় 18 টি মৌল এবং ষষ্ঠ ও সপ্তম পর্যায়ে 32 টি মৌলের অবস্থানের ব্যাখ্যা পারমাণবিক সংখ্যা দিতে পারেনা।
পারমাণবিক সংখ্যা আবিষ্কারের পর পর্যায় সূত্র পরিবর্তন করা হয়। পরিবর্তিত পর্যায় সূত্রটি হচ্ছেঃ মৌলসমূহের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মাবলি, তাদের পারমাণবিক সংখ্যা বৃদ্ধির সাথে ক্রমান্বয়ে আবর্তিত হয়। এটিকে আধুনিক পর্যায় সূত্রও বলে।
এরপর ইলেকট্রন বিন্যাস আবিষ্কার হলে, মৌলগুলিকে ইলেকট্রন বিন্যাস অনুসারে সাজানো হয়। ইলেকট্রন বিন্যাস থেকে পর্যায় সারণির অনেক ত্রুটি দূর করা সম্ভব হয়েছে।
মেন্ডেলিফের পর্যায় সারণির ত্রুটিঃ
১. মেন্ডেলিফের পর্যায় সারণিতে হাইড্রোজেনের অবস্থানগত সমস্যা রয়েছে। হাইড্রোজেনের ধর্ম ক্ষার ধাতুর সাথে সামঞ্জস্য, আবার হ্যালোজেনের ধর্মের সাথেও সাদৃশ্যপূর্ণ। এজন্য হাইড্রোজেনের সঠিক অবস্থান সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়নি।
২. পর্যায় সারণির ষষ্ঠ পর্যায়ের অবস্থিত ল্যান্থানাম এবং এর পরবর্তী 14 টি মৌলকে অর্থাৎ ল্যান্থানাম সহ 15 মৌল ল্যান্থানাম(La) থেকে লুটেসিয়াম(Lu) এদেরকে পর্যায় সারণির নিচে ল্যান্থানয়ড সিরিজে স্থান দেওয়া হয়েছে। একইভাবে সপ্তম পর্যায়ে অবস্থিত অ্যাকটিনিয়াম এবং এর পরবর্তী 14 মৌল কে পর্যায় সারণির নিচে অ্যাকটিনয়ড সিরিজে স্থান দেওয়া হয়েছে।
৩. মেন্ডেলিফের পর্যায় সারণিতে অষ্টম শ্রেণীতে একই পর্যায়ে তিনটি করে মৌলের স্থান দেওয়া হয়েছে। যেমনঃ অষ্টম শ্রেণীতে চতুর্থ পর্যায়ে আয়রন, কোবাল্ট, নিকেলকে একই সাথে রাখা হয়েছে।
৪. মেন্ডেলিফের পর্যায় সারণি ক্রমবর্ধমান পারমাণবিক ভর অনুযায়ী সাজানো হয়েছে। এ ক্ষেত্রে দেখা যায় তিন জোড়া মৌলের অবস্থানগত ত্রুটি রয়েছে। যেমনঃ আর্গন ও পটাশিয়াম ( ⁴ºAr ও ³⁹K ) ; কোবাল্ট ও নিকেল (⁵⁸’⁹Co ও ⁵⁸’⁶Ni) এবং টেলুরিয়াম ও আয়োডিন( ¹²⁷Te ও ¹²⁶I).
৫. মেন্ডেলিফের পর্যায় সারণিতে ধাতু ও অধাতুর মধ্যে কোন পার্থক্য দেখানো হয়নি।
৬. মেন্ডেলিফের পর্যায় সারণিতে ক্ষার ধাতু ও মুদ্রা ধাতু একই শ্রেণীতে রাখা হয়েছে। যদিও ক্ষার ধাতু ও মুদ্রা ধাতুর মধ্যে ধর্মের অনেক পার্থক্য রয়েছে। মেন্ডেলিফের পর্যায় সারণিতে এক নম্বর ও 11 নম্বর গ্রুপকে এক নম্বর ; দুই নম্বর ও 12 নম্বর গ্রুপকে 2 নম্বর ; তিন নম্বর ও 13 নম্বর গ্রুপকে 3 নম্বর ; 4 নম্বর ও 14 নম্বর গ্রুপকে 4 নম্বর ; 5 নম্বর ও 15 নম্বর গ্রুপকে 5 নম্বর ; 6 নম্বর ও 16 নম্বর গ্রুপকে 6 নম্বর ; 7 নম্বর ও 17 নম্বর গ্রুপকে 7 নম্বর ; এবং 8, 9, 10 নম্বর গ্রুপকে একত্রে অষ্টম গ্রুপে রাখা হয়েছিল।
মেন্ডেলিফের পর্যায় সারণির সফলতাঃ
১. মেন্ডেলিফ একই ধর্ম বিশিষ্ট মৌলসমূহকে একই শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত করায়, রসায়ন বিজ্ঞানে মৌলের ধর্ম সম্পর্কে সহজে ধারণা পাওয়া যায়।
যেমনঃ যে কোন গ্রুপের একটি মৌলের ধর্ম সম্পর্কে জানা থাকলে ঐ গ্রুপের সকল মৌলের ধর্ম সম্পর্কে ধারণা থাকে।
২. মেন্ডেলিফের পর্যায় সারণি কিছু মৌলের পারমাণবিক ভর সম্পর্কে ভুল ধারণা সংশোধন করে।
৩. নতুন আবিষ্কৃত মৌলের সম্ভাব্য অবস্থান পর্যায় সারণিতে কোথায় হবে তার সুস্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায়। নতুন আবিষ্কৃত মৌলটির ধর্ম সম্পর্কেও আগাম ধারণা পাওয়া যায়।
৪. মেন্ডেলিফের সময় নিষ্ক্রিয় গ্যাস আবিষ্কৃত হয়েছিল না বলে, পর্যায় সারণিতে নিষ্ক্রিয় গ্যাসের কোন অবস্থান ছিলনা। কিন্তু পরবর্তীতে যখন নিষ্ক্রিয় গ্যাস আবিষ্কৃত হয় তখন পর্যায় সারণির শূণ্য গ্রুপে বর্তমানে 18 নম্বর গ্রুপে তাদের স্থান দেওয়া হয়েছে। মেন্ডেলিফের পর্যায় সারণি নিষ্ক্রিয় গ্যাস আবিষ্কারের ক্ষেত্রে সহায়তা করেছিল।
৫. মেন্ডেলিফের পর্যায় সারণি থেকে অনাবিষ্কৃত মৌল সম্পর্কে ভবিষ্যৎ বাণী করা যায়। যেমনঃ 119 নম্বর মৌলটির অবস্থান, যোজনী, ভৌত ও রাসায়নিক ধর্ম ইত্যাদি সম্পর্কে আগাম ধারণা পাওয়া সম্ভব।
আধুনিক পর্যায় সূত্রঃ মৌলসমূহের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মাবলি, তাদের পারমাণবিক সংখ্যা বৃদ্ধির সাথে ক্রমান্বয়ে আবর্তিত হয়।
আধুনিক পর্যায় সারণির বৈশিষ্ট্যঃ
১. আধুনিক পর্যায় সারণিতে 7 টি পর্যায় এবং 18 গ্রুপ আছে।
২. প্রথম পর্যায় ছাড়া প্রতিটি পর্যায়ে বামদিকে ক্ষার ধাতু ও ডানদিকের শেষে নিষ্ক্রিয় গ্যাস বিদ্যমান থাকে।
৩. প্রথম পর্যায়ে মাত্র দুটি মৌল বিদ্যামান। দ্বিতীয় ও তৃতীয় ৮ করে, চতুর্থ ও পঞ্চম পর্যায় 18 টি মৌল, এবং ষষ্ঠ ও সপ্তম পর্যায়ে 32 টি মৌল বিদ্যামান থাকে।
৪. প্রতিটি পর্যায় গ্রুপ 1 থেকে শুরু করে ডানদিকে গ্রুপ 18 পর্যন্ত বিস্তৃত।
৫. পর্যায় সারণিতে ল্যান্থানয়ড ও অ্যাকটিনয়ড সিরিজের মৌল গুলি যথাক্রমে 6 নম্বর ও 7 নম্বর পর্যায়ের তিন নম্বর গ্রুপের মৌল।
আধুনিক পর্যায় সারণির ত্রুটি বা ব্যতিক্রমঃ
১. আধুনিক পর্যায় সারণিতে হাইড্রোজেনের অবস্থানগত ত্রুটি রয়েছে। অর্থাৎ হাইড্রোজেনের ধর্ম গ্রুপ 1 ও গ্রুপ 17 মৌলের ধর্মের সাথে সাদৃশ্য থাকায় হাইড্রোজেনের সঠিক অবস্থান দেওয়া সম্ভব হয়নি।
২. পর্যায় সারণির নিচে ল্যান্থানয়ড ও অ্যাকটিনয়ড সিরিজের অবস্থানগত সমস্যা রয়েছে।
৩. হিলিয়ামের ইলেকট্রন বিন্যাস ( 1s² ) করলে এর অবস্থান দুই নম্বর গ্রুপে হওয়া উচিত। তবে হিলিয়াম নিষ্ক্রিয় গ্যাস এবং 1s² অরবিটাল ইলেক্ট্রন দ্বারা পূর্ণ হওয়ায় একে 18 নম্বর গ্রুপে রাখা হয়েছে।
পর্যায় সারণির এক নম্বর পর্যায়কে অতিক্ষুদ্র পর্যায় ; 2 ও 3 নম্বর পর্যায় দুটিকে সংক্ষিপ্ত পর্যায় ; 4 ও 5 নম্বর পর্যায় দুটিকে দীর্ঘ পর্যায় এবং 6 নম্বর ও 7 নম্বর পর্যায়ে দুটিকে অতি দীর্ঘ পর্যায় বলে।
পর্যায় সারণিতে কিছু গ্রুপ বা শ্রেণীর বিশেষ নাম রয়েছে। যেমনঃ এক নম্বর গ্রুপকে ক্ষার ধাতু ; ২ নম্বর গ্রুপকে মৃৎক্ষার ধাতু ; 11 নম্বর গ্রুপকে মুদ্রা ধাতু ; 16 নম্বর গ্রুপকে চালকোজেন ; 17 নম্বর গ্রুপকে হ্যালোজেন এবং 18 নম্বর গ্রুপকে নিষ্ক্রিয় গ্যাস বলা হয়।
পর্যায় সারণির সুবিধাঃ
১. পর্যায় সারণি আবিষ্কারের পর মৌলসমূহের ধর্ম সহজে মনে রাখা যায়। এখন পর্যন্ত যে 118 টি মৌল আবিষ্কার হয়েছে, আমরা যদি প্রত্যেকটি মৌলের আলাদাভাবে ভৌত ও রাসায়নিক ধর্ম বিবেচনা করি, তবে 118 টি মৌলের এতগুলো ধর্ম মনে রাখা অসম্ভব। কিন্তু পর্যায় সারণি আবিষ্কারের পর একই ধর্ম বিশিষ্ট মৌলগুলিকে একই গ্রুপে রাখার কারণে, কোন গ্রুপের একটি মৌলের ধর্ম সম্পর্কে জানা থাকলে ঐ গ্রুপের সকল মৌলের ধর্ম সম্পর্কে মোটামুটি ধারণা পাওয়া যায়।
২. নতুন মৌল আবিষ্কারের ক্ষেত্রে পর্যায় সারণি বেশ গুরুত্বপূর্ণ। নতুন মৌলটির অবস্থান কোথায় হবে বা তার ধর্ম কেমন হবে তা পর্যায় সারণি থেকে আগাম ধারণা পাওয়া যায়।
৩. গবেষণা কাজের জন্য পর্যায় সারণির গুরুত্ব অপরিহার্য। যেমনঃ কোন একটি পদার্থ সম্পর্কে গবেষণা করতে চাইলে ঐ পদার্থটির ধর্ম কেমন হবে কিংবা ঐ সকল পদার্থ তৈরি করতে কি ধরনের মৌল প্রয়োজন হবে তার ধারণা পর্যায় সারণি থেকে পাওয়া যায়।
Leave a comment