সকল পদার্থ অতি ক্ষুদ্র কণা দ্বারা গঠিত। এই ধারণা অনেক পূর্বের। পদার্থের এই ক্ষুদ্র কনা সমূহকে ডেমোক্রিটাস প্রথম atom নামকরণ করেন। atom শব্দের অর্থ যা বিভাজ্য নয়। কিন্তু অ্যারিস্টেটোল বলেন পদার্থের ক্ষুদ্রতম কণা সমূহ বিভাজ্য। এরপরে ডালটন মৌলিক পদার্থের ক্ষুদ্রতম কণাকে সরল পরমাণু এবং যৌগিক পদার্থের ক্ষুদ্রতম কণাকে যৌগিক পরমাণু নামকরণ করেন। পরবর্তীতে অ্যাভোগেড্রো মৌলিক পদার্থের ক্ষুদ্রতম কণাকে পরমাণু এবং যৌগিক পদার্থের ক্ষুদ্রতম কণাকে অনু নামকরণ করেন।

পরমাণুঃ মৌলিক পদার্থের ক্ষুদ্রতম অংশ যার স্বাধীন কোন অস্তিত্ব নেই, কিন্তু ক্ষুদ্রতম একক হিসেবে রাসায়নিক বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে পারে তাকে পরমাণু বলে।

পরমাণুকে ভেঙ্গে যেসব কনা আবিষ্কৃত হয়েছে তাদেরকে পরমাণুর মূল কণিকা বলে। 

পরমাণুর মূল কণিকাকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়।  ১. স্থায়ী মূল কণিকা, ২. অস্থায়ী মূল কণিকা, 

৩. কম্পোজিট কণিকা।

স্থায়ী মূল কণিকাঃ যেসব মূল কণিকা পরমাণুতে স্থায়ী ভাবে উপস্থিত থাকে তাদেরকে স্থায়ী মূল কণিকা বলে।

স্থায়ী মূল কণিকা হচ্ছে – ইলেকট্রন, প্রোটন এবং নিউট্রন। 

অস্থায়ী মূল কণিকাঃ যেসব মূল কণিকা পরমাণুতে অস্থায়ীভাবে উপস্থিত থাকে তাদেরকে অস্থায়ী মূল কণিকা বলে।

যেমনঃ মেসন, বোসন, নিউট্রিনো, অ্যান্টি নিউট্রিনো, পজিট্রন, গ্রাভিট্রন, পাইওন, মিউওন, পজিট্রিনো ইত্যাদি।

কম্পোজিট কণিকাঃ স্থায়ী ও অস্থায়ী কণিকা ছাড়াও পরমাণুতে কিছু ভারী কণিকা পাওয়া যায় যাদেরকে কম্পোজিট কণিকা বলে।

যেমনঃ ডিউটেরন কণিকা, আলফা কণিকা ইত্যাদি।

স্থায়ী মূল কণিকা বৈশিষ্ট্য নিম্নরূপঃ

ইলেকট্রন:-

স্যার জে. জে. থমসন ১৮৯৭ খ্রিস্টাব্দে ক্যাথোড রশ্মির পরীক্ষার মাধ্যমে এক ধরনের ঋণাত্মক কণিকা আবিষ্কার করেন। পরবর্তীতে জে. স্টোনি এই ঋণাত্মক কণিকার নাম দেন ইলেকট্রন।

 

ইলেকট্রনের বৈশিষ্ট্যঃ

১. ইলেকট্রনের আধান ঋণাত্মক।

২. এর প্রকৃত ভর 9.11×10-²⁸ g.

৩. ইলেকট্রনের প্রকৃত আধান -1.6×10-¹⁹ C.  

বা,  – 4.8×10-¹º esu.

৪. একটি ইলেকট্রন একটি হাইড্রোজেন পরমাণুর থেকে 1837 গুন হালকা।

৫. এর প্রতীক e.

৬. ইলেকট্রনের চার্জ -1.

৭. ইলেকট্রন পরমাণুর নিউক্লিয়াসের বাহিরে নিদিষ্ট বৃত্তাকার কক্ষপথে থেকে নিউক্লিয়াসকে পরিভ্রমণ করে।

প্রোটন:-

প্রোটন পরমাণুর একটি ধনাত্মক মূল কণিকা। 1886 সালে জার্মান বিজ্ঞানী গোল্ডস্টাইন ক্যাথোড রশ্মির পরীক্ষার নলে এক ধরনের ধণাত্মক আধান আবিষ্কার করেন। এই ধণাত্মক আধান হচ্ছে প্রোটন। 1919 খ্রিস্টাব্দে আর্নেস্ট রাদারফোর্ড প্রোটন পরমাণুর একটি সাধারন উপাদান তা প্রমান করেন। 

প্রোটনের বৈশিষ্ট্যঃ

১. ধনাত্মক চার্জযুক্ত কণিকা।

২. প্রোটনের প্রকৃত ভর 1.673×10-²⁴ g.

৩. এর প্রকৃত আধান +1.6×10-¹⁹ C.

 বা,  +4.8×10-¹º esu.

৪. প্রোটন এর প্রতীক P.

৫. প্রোটন পরমাণুর নিউক্লিয়াসে অবস্থান করে।

৬. প্রোটনের চার্জ +1.

নিউট্রন:-

পরমাণুতে ইলেকট্রন ও প্রোটন ব্যতীত আরও এক ধরনের চার্জ নিরপেক্ষ কণা অবস্থান করে। যা নিউট্রন কণা নামে পরিচিত। 1932 খ্রিস্টাব্দে জেমস চ্যাডউইক প্রথম নিউট্রন কণা সম্বন্ধে ধারণা দেন। 

নিউট্রন এর বৈশিষ্ট্যঃ

১. আধান নিরপেক্ষ কনিকা।

২. এটি পরমাণুর নিউক্লিয়াসে অবস্থান করে।

৩. নিউটনের প্রকৃত ভর 1.675×10-²⁴ g.

৪. এর আধান শূণ্য।

৫.  নিউটনের প্রতীক n.