পদার্থবিজ্ঞান কাকে বলে? পদার্থবিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখা । Branches Of Physics
Image by Wisilife

পদার্থবিজ্ঞান কাকে বলে?

বিজ্ঞানের যে শাখায় পদার্থ এবং শক্তির মিথস্ক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করা হয় তাকে পদার্থবিজ্ঞান বলে।পদার্থবিজ্ঞান একটি প্রাকৃতিক বিজ্ঞান যা শক্তি এবং বলের মতো ধারণার পাশাপাশি স্থান ও কাল সাপেক্ষে পদার্থের গতি নিয়ে আলোচনা করে থাকে। সংক্ষেপে বললে, মহাবিশ্ব কীভাবে আচরণ করে তা বোঝার প্রয়াসে এটি একটি প্রাকৃতিক অধ্যয়ন।

পদার্থবিজ্ঞান (Physics) শব্দটি এসেছে মূলত গ্রিক শব্দ ‘ফুসিকে (Fusiky)’ থেকে, যার অর্থ– ‘প্রকৃতি সম্পর্কিত জ্ঞান

পদার্থবিজ্ঞান  শক্তি এবং পদার্থ সম্পর্কিত মৌলিক নীতিগুলি উদঘাটন করতে এবং এই নীতিগুলোর প্রভাব আবিষ্কার করতে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি ব্যবহার করে। এটি ধরে নেওয়া হয় যে এমন কিছু নিয়ম রয়েছে যার দ্বারা মহাবিশ্ব পরিচালিত হয় এবং সেই নিয়মগুলোর খুব সামান্য অংশ মানুষ বুঝতে পারে। 

সাধারণত বিশ্বাস করা হয়ে থাকে যে, যদি আমরা শক্তি ও পদার্থের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে সম্পূর্ণ ধারণা অর্জন করতে পারি, তাহলে সে জ্ঞান কাজে লাগিয়ে আমরা ভবিষ্যতে বিশ্বজগত কেমন আচরণ করবে তার পূর্বাভাস পেতে পারব। আর এই পথে পদার্থবিজ্ঞান সবচেয়ে বড় সহায়ক। 

পদার্থবিজ্ঞানের লক্ষ্য হল চার্জ-যুক্ত ক্ষুদ্র কণার চলাচল থেকে শুরু করে মানুষ, গাড়ি, এমনকি বৃহৎ কোন কিছু সহ সমস্ত কিছুর গতির বর্ণনা দেওয়া। প্রকৃতপক্ষে, আমাদের চারপাশের প্রায় সমস্ত কিছুই পদার্থবিদ্যার আইন দ্বারা সঠিকভাবে বর্ণনা করা যেতে পারে। আপনার হাতের স্মার্ট-ফোনটি কিভাবে কাজ করে, এর ভেতরে সার্কিটগুলি কিভাবে যোগাযোগ করে, কিভাবে আপনার সামনে ভেসে উঠছে আপনার কাঙ্ক্ষিত চিত্রটি, কিংবা কিভাবেই বা মুহূর্তেই দূর দূরান্তে যোগাযোগ করতে পারছেন, এ সব কিছুই পদার্থ বিদ্যার নিয়ম মেনে চলছে। 

পদার্থবিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখা 

পদার্থবিজ্ঞানের প্রধান দুটি শাখা রয়েছে, চিরায়ত পদার্থবিজ্ঞান (Classical Physics) এবং আধুনিক পদার্থবিজ্ঞান (Modern Physics)।  

১। চিরায়ত পদার্থবিজ্ঞান বা শাস্ত্রীয় পদার্থবিজ্ঞান (Classical Physics): চিরায়ত বলবিজ্ঞান হল পদার্থ বিজ্ঞানের বিভিন্ন সূত্রের সমন্বয় যা আধুনিক, স্বয়ংসম্পূর্ণ এবং ব্যাপকভাবে প্রচলিত সূত্রগুলোর পূর্বনির্দেশ করে। 

২। আধুনিক পদার্থবিজ্ঞান (Modern Physics): কোয়ান্টাম পদার্থবিজ্ঞান ও আপেক্ষিকতত্ত্ব কে কেন্দ্র করে যে পদার্থবিজ্ঞান গড়ে উঠেছে তাকে আধুনিক পদার্থবিজ্ঞান বলে। 

এছাড়াও পদার্থবিজ্ঞান কে অনেকগুলো শাখায় বিভক্ত করা যায়। নিচে পদার্থবিজ্ঞানের শাখাগুলোর নাম দেওয়া হল।

১। বলবিদ্যা (Mechanics)

  • বায়ুগতিবিদ্যা (Aerodynamics)
  • বায়োমেকানিক্স (Biomechanics)
  • চিরায়ত বলবিদ্যা (Classical mechanics)
  • কন্টিনিউয়াম মেকানিক্স (Continuum mechanics)
  • গতিবিদ্যা (Dynamics)
  • ফ্লুইড মেকানিক্স (Fluid mechanics)
  • স্থিতিবিদ্যা (Statics)
  • পরিসংখ্যানিক গতিবিদ্যা (Statistical Mechanics)

২। কোয়ান্টাম পদার্থবিদ্যা (Quantum Physics)

৩। আপেক্ষিকতা (Relativity)

  • সাধারণ আপেক্ষিকতা (General Relativity)
  • বিশেষ আপেক্ষিকতা (Special Relativity)

৪। পারমাণবিক ও আণবিক পদার্থবিজ্ঞান (Atomic and Molecular Physics) 

৫। তাপগতিবিদ্যা (Thermodynamics)

৬। তড়িৎচুম্বকত্ব (Electromagnetism)

৭। তড়িৎ (Electricity)

৮। চুম্বকত্ব (Magnetism)

৯। ভূ-পদার্থবিজ্ঞান (Geo physics)

১০। প্লাজমা পদার্থবিদ্যা (Plasma physics)

১১। আলোক বিজ্ঞান (Optics)

১২। শব্দ ও তরঙ্গ (Sound and oscillation)

১৩। ইলেক্ট্রনিক্স (Electronics)

১৪। রাসায়নিক পদার্থবিদ্যা (Chemical physics)

১৫। প্রকৌশল পদার্থবিদ্যা (Engineering physics)

১৬। কঠিন অবস্থার পদার্থবিজ্ঞান (Solid-state physics)

১৭। কোয়ান্টাম পদার্থবিদ্যা (Quantum physics)

১৮। নিউক্লিয়ার পদার্থবিদ্যা (Nuclear physics)

১৯। কণা পদার্থবিদ্যা (Particle physics)

২০। জীব-পদার্থবিজ্ঞান (Biophysics)

  • চিকিৎসা পদার্থবিজ্ঞান (Medical physics)
  • স্নায়ু পদার্থবিজ্ঞান (Neurophysics)
  • কোয়ান্টাম বায়োলজি (Quantum biology)

২১। জোতির্বিজ্ঞান (Astronomy)

  • জ্যোতির্গতিবিজ্ঞান (Astrodynamics)
  • নভোমিতি বা জ্যোতির্মিতি (Astrometry)
  • সেলেস্টিয়াল মেকানিক্স (Celestial mechanics)
  • ছায়াপথ-বহিঃস্থ জ্যোতির্বিজ্ঞান (Extragalactic astronomy)
  • ছায়াপথ জ্যোতির্বিজ্ঞান (Galactic astronomy)
  • ভৌত বিশ্বতত্ত্ব (Physical cosmology)
  • গ্রহ বিজ্ঞান (Planetary science)
  • নাক্ষত্রিক জ্যোতির্বিজ্ঞান (Stellar astronomy)

২২। জ্যোতিঃ পদার্থবিজ্ঞান (Astrophysics)

২৩। ঘনীভূত পদার্থ পদার্থবিজ্ঞান (Condensed matter physics)

২৪। আবহমণ্ডলীয় পদার্থবিজ্ঞান (Atmospheric physics)

২৫ । পরিগণনামূলক পদার্থবিজ্ঞান (Computational physics)

২৬। গাণিতিক পদার্থবিজ্ঞান (Mathematical Physics)

২৭। সাইকোফিজিক্স (Psychophysics)

২৮। Agrophysics

২৯। Soil physics

৩০। Cryogenics

৩১। Econophysics

৩২। Materials physics

৩৩। Vehicle dynamics

৩৪। Philosophy of physics

কমেন্ট বক্সে লেখাটি সম্পর্কে আপনার মূল্যবান মতামত জানান 

References: