পদসোপান নীতির কার্যাবলি (Functions of the Principle of Hierarchy): পদসোপান নীতির কার্যাবলি অশেষ এবং তা অত্যন্ত স্পষ্ট। পদসোপান নীতি প্রশাসনিক সংগঠনের একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য। এর গুরুত্বপূর্ণ কার্যসমূহ নিচে বর্ণনা করা হলোঃ
প্রথমত, পদসোপান নীতি আদেশ প্রদানের প্রধান উপায়। আদেশ সাধারণত ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিকট হতে অধস্তন কর্মকর্তাদের নিকট প্রবাহিত হয় পদসোপানের মাধ্যমে।
দ্বিতীয়ত, পদসোপান নীতি কর্তৃত্ব অর্পণের প্রধান উপায়। পদসোপানের পথ ধরেই কর্তৃত্ব ক্ষমতা প্রশাসনিক সংগঠনের উচ্চতম স্তর হতে নিম্নতম স্তরে এসে পৌঁছায়।
তৃতীয়ত, পদসোপান নীতি যোগাযোগের প্রধান উপায় হিসেবে কাজ করে। পদসোপানের মাধ্যমেই প্রশাসনিক সংগঠনের শীর্ষদেশ হতে পাদদেশে সকল প্রকার বার্তা, তথ্য, উপদেশ, নির্দিষ্ট আদেশ, সাবধান বাণী প্রভৃতি প্রবাহিত হয়। এ ছাড়া পদসোপানের মাধ্যমেই আদেশ-নির্দেশ কেন্দ্রীয় অফিস (Head Quarter) হতে আঞ্চলিক অফিসে (Field Office) গিয়েও পৌঁছায়।
চতুর্থত, পদসোপান নীতি দায়িত্ব এবং বিভিন্ন স্তরের কর্মচারীদের পারস্পরিক সম্পর্ক নির্ণয়ের প্রধান ব্যবস্থাস্বরূপ। পদসোপানের সাহায্যেই সংগঠনের বিভিন্ন স্তরের সম্পর্ক নির্ণীত ও নির্দেশিত হয়ে থাকে।
পঞ্চমত, পদসোপানের অপর একটি গুরুত্বপূর্ণ কার্য প্রশাসনিক সংগঠনের কার্য পরিচালনার তিনটি স্তরের মধ্যে পার্থক্য সৃষ্টি করা। এ তিনটি স্তর হচ্ছে শীর্ষ ব্যবস্থাপনা (Top Management), মধ্যভাগের ব্যবস্থাপনা (Middle Management) এবং নিম্ন ব্যবস্থাপনা (Bottom Management)। এ তিনটি স্তরের মধ্যে পদসোপান নীতি কেবল পার্থক্যই নির্দেশ করে না, এটা তাদের মধ্যে যোগসূত্র বা সেতুবন্ধনও রচনা করে।
ষষ্ঠত, সংগঠনের রাজনৈতিক এবং প্রশাসনিক ক্ষেত্রের মধ্যে যোগসূত্র স্থাপন করাও পদসোপানের অন্যতম আরেকটি কার্য। পদসোপানের মাধ্যমেই রাজনৈতিক আদেশ সংগঠনে এসে পৌঁছায় এবং বিভিন্ন স্তরে নিয়োজিত প্রশাসনিক কর্মকর্তাগণ উক্ত আদেশ বাস্তবায়িত ও সফল করে থাকেন।
সপ্তমত, পদসোপানের মাধ্যমেই সংগঠনের বিভিন্ন স্তরে সিদ্ধান্ত গ্রহণের কেন্দ্র সৃষ্টি হয়। এভাবে এটি সংগঠনের উচ্চস্তরে কাজের চাপ প্রভূত পরিমাণে কমিয়ে দেয়।
অষ্টমত, সমগ্র প্রশাসনিক সংগঠনকে একটি একক কর্মক্ষম সংস্থারূপে বেঁধে দেয়ার প্রধান উপায় হচ্ছে পদসোপান নীতি। পদসোপানের মাধ্যমেই প্রশাসনিক সংগঠনের যাবতীয় কার্যের সুষ্ঠু সমন্বয় সাধন সম্ভব।
Leave a comment