পড়া সঠিকভাবে মনে রাখা আল্লাহর বড় একটি নেয়ামত। আর এই নিয়ামত লাভ করতে হলে
পড়া মনে রাখার ইসলামিক উপায় – পড়া মনে রাখার ১০ টি উপায়
সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। আমি পড়া মনে রাখার ইসলামিক উপায়
– পড়া মনে রাখার ১০ টি উপায় নিয়ে আলোচনা করেছি। সঠিকভাবে পড়া মনে
রাখার ইসলামিক উপায় – পড়া মনে রাখার ১০ টি উপায় জানতে আমার
আর্টিকেলটি পড়ুন।
আল্লাহর সাহায্য ছাড়া আমাদের কোন কাজে সফলতা অর্জন করা সম্ভব নয়। এজন্য আমাদের
উচিত সবসময় আল্লাহর কাছে দোয়া করা যেন তিনি আমাদের স্মৃতিশক্তি বাড়িয়ে দেন।
এবং আমাদের সার্বিক কল্যাণ দান করেন।পড়া মনে রাখার ইসলামিক উপায়
– পড়া মনে রাখার ১০ টি উপায় নিয়ে নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।-
পোস্ট সূচিপত্রঃ পড়া মনে রাখার ইসলামিক উপায় – পড়া মনে রাখার
১০ টি উপায়
পড়া মনে রাখার ইসলামিক উপায়-পড়া মনে রাখার ১০ টি উপায়
স্মরণশক্তি বা মুখস্ত করার যোগ্যতা বা কোন কিছু মনে রাখতে পারাকে স্মৃতিশক্তি
বলে। মানুষ ইচ্ছে করলে সব কিছু মনে করে রাখতে পারেনা বা কোন কিছু মুখস্ত করতে
পারে না। স্মরণ শক্তি বা স্মৃতিশক্তি প্রখর হলে মানুষ কত ধরনের কল্যান বা
সুবিধা লাভ করে এর কোন শেষ নেই। কোন কিছু মনে রাখার জন্য আমরা আল্লাহর কাছে
সাহায্য প্রার্থনা করব।যুগ যুগ ধরেই মানুষ ছোট থেকে বড় পর্যন্ত সবাই কুরআনুল
কারীম মুখস্ত করেছেন।
বড় পীর হযরত আব্দুল কাদির জিলানী মায়ের গর্ভে থাকাকালীন অবস্থায় ৪ পারা কোরআন
মুখস্ত করেছেন। এছাড়া ইমাম শাফি রহমাতুল্লাহ আলাইহি থেকে শুরু করে অনেক কম বয়সী
বাচ্চারাও কোরআন মুখস্ত করেছেন। কেউ হয়েছে ইংরেজিতে পারদর্শী আবার কেউ হয়েছে
অংকে পারদর্শী। আর এসব কিছুই হয়েছে মহান আল্লাহতালার নেয়ামতের জন্য।
কোরআন ও হাদিসে জ্ঞান বৃদ্ধির অনেক দোয়া ও হাদিস রয়েছে। আর এসব দোয়া
পড়লে বা আমল করলে আল্লাহতালা জ্ঞান বৃদ্ধি করে দেন। মানুষের জন্য
কল্যাণকর ইলম বা জ্ঞান দান করেন। তাই প্রত্যেক মুসলিমের উচিত বেশি বেশি করে
এসব দোয়া পড়া ও তার ওপর আমল করা।মহান আল্লাহ তাআলা আমাদের প্রিয় নবী হযরত
মুহাম্মদ (সাঃ) কে কোরানুল কারীম মুখস্ত করার কৌশল বা স্মরণশক্তি বাড়াতে দোয়া
শিখিয়েছেন ও নসিহত করেছেন।
হযরত জিব্রাইল আলাই সালাম যখন ওহী নিয়ে আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি সালামের কাছে আসতেন, ওহী নাযিল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই রাসুল
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা মুখস্ত করার চেষ্টা করতেন। আর এটা বিশ্ব নবীর
জন্য ছিল অনেক কষ্টসাধ্য কাজ। তখন মহান আল্লাহ তায়ালা কুরআনুল কারীমে এ সম্পর্কে
একটি আয়াত নাজিল করে রাসূল সালামকে উপদেশ দিলেন এবং দোয়া শিখিয়ে দিলেন।
আরো পড়ুনঃ ২১ শে/একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস সম্পর্কে জানুন
আর এ নসীহত ও দোয়ার বরকতেই রাসুল (সাঃ) এর কষ্ট দূর হয়েছিল। আর এ দোয়া পাঠ
করলেই মানুষের স্মরণ শক্তি বেড়ে যায়। আল্লাতালা রাসূল (সাঃ) কে উদ্দেশ্য করে
বলেন –
فَتَعَالَى اللَّهُ الْمَلِكُ الْحَقُّ وَلَا تَعْجَلْ بِالْقُرْآنِ مِن
قَبْلِ أَن يُقْضَى إِلَيْكَ وَحْيُهُ
অর্থঃ “সত্যিকারের মালিক হলেন মহান আল্লাহ তায়ালা। আপনার কাছে আল্লাহর ওহী
সম্পন্ন হওয়ার আগে আপনি কুরআন আয়াতের জন্য তাড়াহুড়া করবেন না”।
“এই আয়াতের প্রথম অংশে রাসুল সাঃকে ওহী আসার পর তা মুখস্ত করার বিষয়ে
তাড়াহুড়ো করতে নিষেধ করেছেন। বরণ ধীরস্থিরতা অবলম্বনের উপদেশ
দিয়েছেন”।
স্মরণ শক্তি বৃদ্ধি হওয়ার আরেকটি দোয়া হলো-
ﺳُﺒْﺤَﺎﻧَﻚَ ﻻَ ﻋِﻠْﻢَ ﻟَﻨَﺎ ﺇِﻻَّ ﻣَﺎ ﻋَﻠَّﻤْﺘَﻨَﺎ ﺇِﻧَّﻚَ ﺃَﻧﺖَ
ﺍﻟْﻌَﻠِﻴﻢُ ﺍﻟْﺤَﻜِﻴﻢُ
বাংলা উচ্চারণঃ “সুবহানাকা লা ইলমা লানা ইল্লা মা আল্লামতানা, ইন্নাকা
আনতাল আলিমুল হাকিম”।
অর্থঃ “হে আল্লাহ ! আপনি পবিত্র। আমরা কোন কিছুই জানিনা, তবে আপনি আমাদিগকে যা
শিখিয়েছেন সেগুলো ব্যতীত। নিশ্চয়ই আপনি প্রকৃত জ্ঞান সম্পন্ন হেকমতওয়ালা”।
পড়া মনে রাখার ইসলামিক কৌশল/উপায় – পোড়া মনে রাখার ১০ টি উপায়
আলোচনা করা হলো-
জিকির করা ও দোয়া করা
আল্লাহর সাহায্য ছাড়া আমাদের কোন কাজে সফলতা অর্জন করা সম্ভব নয়। এজন্য আমাদের
উচিত সবসময় আল্লাহর কাছে দোয়া করা যেন তিনি আমাদের স্মৃতিশক্তি বাড়িয়ে দেন।
এবং আমাদের সার্বিক কল্যাণ দান করেন। জ্ঞান বৃদ্ধির আরও একটি দোয়া হলো-
رَّبِّ
زِدْنِي عِلْمًا
রাব্বি জিদনি ইলমা
অর্থঃ “হে আমার প্রতিপালক আমার জ্ঞান বৃদ্ধি করুন”। (সূরাঃ ত্বহা, আয়াতঃ
১১৪)।
এ ছাড়া বেশি বেশি আল্লাহর জিকির করলেও স্মরণশক্তি বৃদ্ধি পায়। আল্লাহতালা বলেন,
“যখন ভুলে যান তখন আপনার পালনকর্তাকে স্মরণ করুন”। (সূরা কাহাফ, আয়াতঃ ২৪)।
তাই আমাদের উচিত নিয়মিত আল্লাহর জিকির করা এবং তাসবিহ, তাহমিদ, তাহালিল ও তাকবীর
পাঠ করা অর্থাৎ সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহু আকবার, লা ইলাহা
ইল্লাল্লাহ এবং আল্লাহু আকবার পাঠ করা।
পাপ থেকে দূরে থাকা
যারা পাপ কাজ করে তারা বেশি বাজে চিন্তায় লিপ্ত থাকে। আর বাজে চিন্তা স্মরণশক্তি
ধ্বংস করে দেয়। কারণ জ্ঞানের আলো এবং পাপের অন্ধকার কখনো একসাথে থাকতে পারে না।
ইমাম শাফেয়ি (রহঃ) বলেন, “আমি (আমার শায়েখ) ওয়াকিকে আবার দুর্বল বা খারাপ
স্মৃতি শক্তির ব্যাপারে অভিযোগ করেছিলাম এবং তিনি আমাকে শিখিয়েছিলেন আমি যেন পাপ
কাজ থেকে নিজেকে দূরে রাখি। তিনি আরো বলেন, আল্লাহর জ্ঞান হলো একটি আলো এবং
আল্লাহর এই আলো কোন পাপাচারিকে দান করা হয় না।”
ইয়াহইয়া বিন ইয়াহইয়া বলেন, “এক ব্যক্তি মালিক বিনআনসার কে প্রশ্ন করেছিলেন,
হে আবদ আল্লাহ, আমার স্মৃতিশক্তিকে শক্তিশালী করে দিতে পারে এমন কিছু কি আছে !
তিনি বলেন, যদি কোন কিছু স্মৃতি শক্তিশালী করতে পারে তা হল পাপ করা ছেড়ে
দেওয়া”। (আল-জামি ২/৩৮৭)।
উপরোক্ত আয়াতগুলো এবং আলোচনা গুলো থেকে আমরা বুঝতে পারি মানুষ যখন কোন পাপ কাজ
করে বা করার জন্য মনস্থির করে তখন তার স্মৃতিশক্তি কমে যায়। কল্যাণকর কাজ থেকে
সে দূরে সরে পড়ে। তাই জ্ঞান বৃদ্ধি করতে হলে পাপ কাজ থেকে দূরে থাকতে হবে।
আন্তরিকতা বা ইখলাস
ইখলাস বা আন্তরিকতার সাথে কোন কাজ না করলে সফলতা অর্জন করা যায় না। আর এই
ইখলাসের মূল ভিত্তি হলো সঠিক নিয়ত। আর এই সঠিক নিয়তের ব্যাপারে ওস্তাদ খুররাম
বলেন, উদ্দেশ্য বা নিয়ত হল আমাদের আত্মার মতো অথবা বীজের ভিতর থাকা প্রাণশক্তির
মত। বেশিরভাগ বীজ দেখতে মোটামুটি একই রকম হয় কিন্তু লাগানোর পর বীজগুলো যখন চারা
গাছ হয়ে বেড়ে ওঠে আর ফল দেওয়া শুরু করে তখন আসল পার্থক্যটা পরিষ্কার হয়ে
যায়।
আরো পড়ুনঃ
সিজিপিএ (CGPA) ও জিপিএ (GPA) সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন
আমাদের কাছে একইভাবে নিয়ত যত বিশুদ্ধ হবে আমাদের কাজের ফলও তত ভালো হবে।এ
প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ তাআলা বলেন, “তাদের ছাড়া কোন নির্দেশ করা হয়নি যে, তারা
খাটি মনে এক নিষ্ঠভাবে আল্লাহর ইবাদত করবে, নামাজ কায়েম করবে এবং যাকাত দেবে
এটাই সঠিক ধর্ম”। (সূরা আল বানিয়া, আয়াতঃ ৫)। তাই আমাদের স্মৃতি শক্তি বাড়াতে
হলে সঠিক নিয়ত করতে হবে এবং পাপ কাজ থেকে দূরে থাকতে হবে।
নিয়মিত নামাজ আদায় করা
নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করার মাধ্যমে মানুষের মন প্রফুল্ল থাকে। আর যখন
মন প্রফুল্ল থাকে তখন কোন বিষয় আর কঠিন মনে হয় না। তাই নিয়মিত নামাজ আদায় করে
কঠিন বিষয়গুলো পড়ার চেষ্টা করুন। এতে আপনার পড়া মনে থাকবে “ইনশাল্লাহ”। বিশেষ
করে ফজরের নামাজের পরে বেশি বেশি করে পড়ার চেষ্টা করুন। এতে ভালো ফল পাবেন।
কথায় আছে আর্লি টু বেড অ্যাড আর্লি টু রাইজ মেক এ ম্যান হেলদি, ওয়েলদি এন্ড
ওয়াইজ।
আল কোরআন তেলাওয়াত করা
নিয়মিত আল কোরআন তেলাওয়াত করলে মানুষের স্মরণ শক্তি বা স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি
পায়। আর নিয়মিত কোরআন তেলাওয়াত করলে শয়তান আমাদের কাছ থেকে দূরে থাকে। যার
কারণে মানুষের মনে কু চিন্তার আবির্ভাব হয় না। ফলে আপনি সহজেই পড়া
মনে রাখতে পারবেন।
বিভিন্ন উপায়ে চেষ্টা করা
একটু গভীর ভাবে লক্ষ্য করলে আমরা দেখতে পাই আমাদের সবার পড়ার কৌশল এক নয়। কেউ
আওয়াজ করে পড়ে, কেউ নিরবে পড়ে, কেউ হেঁটে হেঁটে পড়ে আবার কেউ শুয়ে থেকে
পড়ে, কেউ কেউ গভীর রাতে পড়া ভালো মুখস্ত করতে পারে আবার কেউ দিনের বেলাতে ভালো
পড়তে পারে। তাই আমাদের উচিত যার যেভাবে পড়া মুখস্ত হয় তাকে সেভাবেই পড়তে
দেওয়া। আমাদের মনে রাখতে হবে, জোর করে মতের বিরুদ্ধে কোন কিছু চাপিয়ে যেন না
দেওয়া হয়।
কারণ আর যাই হোক না কেন, জোর করে পড়া মুখস্ত করানো যায় না। আর কোরআন মুখস্ত
করার সময় একটি নির্দিষ্ট মুশহাফ বা কোরআনের কপি ব্যবহার করা।কারণ বিভিন্ন ধরনের
মুসহাফে আয়াত ও পৃষ্ঠা বিন্যাস বিভিন্ন রকমের হয়ে থাকে। আর একটি নির্দিষ্ট
মুশহাফ নিয়মিত ব্যবহারের ফলে মস্তিষ্কের মধ্যে তার একটি ছাপ পড়ে যায়
এবং মুখস্তকিত অংশটি মস্তিষ্কে গভীরভাবে গেঁথে যায়। যা আর সে কখনোই
ভুলে যায় না।
হতাশ না হয়ে চেষ্টা করা
পড়াশোনার মাঝে কখনোই হতাশ হওয়া চলবে না। তবে অবশ্যই পড়াশোনা দিয়ে প্রতিযোগিতা
করতে হবে । হতাশ না হয়ে আপনি যতটুকু পারবেন ততটুকুই পড়ার চেষ্টা করুন। আর যদি
চেষ্টা না করে হতাশ হয়ে পড়ে তাহলে কোনদিনই কাঙ্ক্ষিত লক্ষে পৌঁছাতে
পারবেন না। কারন হতাশা মানুষকে ধ্বংস করে দেয়।
মুখস্তকৃত বিষয়ের ওপর চর্চা করা
একথা আমাদের সবারই জানা আছে, কোন একটি বিষয় নিয়ে যত বেশি পড়া হয় তা আমাদের
মস্তিষ্কে তত বেশি দৃঢ়ভাবে গেঁথে যায়। আমরা যদি বাংলা বা ইংরেজি বা পাঠ্য বই
পড়ে থাকি তাহলে আমাদের উচিত যে বিষয়টা আমি পড়েছি অবসরে তা মনে করার চেষ্টা
করা। তাহলে আর ভুলে যাবো না।
আর যদি কোরআন মুখস্ত করি তাহলে আমাদের উচিত যে সূরা বা কেরাত আমরা মুখস্ত করেছি
তা যেন নামাজে বারবার তেলাওয়াত করি। তাহলে মুখস্তকৃত বিষয়টি আমাদের চর্চা হয়ে
যাবে। আর আমাদের স্মৃতিপটে তা গেঁথে যাবে।
অন্যকে শেখান
কোন কিছু মনে রাখার অন্যতম আরেকটি কৌশল হল তা অন্যকে শেখানো। আর অন্যকে শেখাতে
গেলে একই বিষয় বারবার করে আমাদের স্মৃতি পটে ধরা পড়ে। যার কারণে এই পড়া আর
মানুষ ভুলে যায় না।
পরিমিত বিশ্রাম নেওয়া
যেকোনো কাজের মধ্যে যেমন বিশ্রাম নেওয়া জরুরি তেমনি পড়ার মাঝে ও বিশ্রাম নেওয়া
উচিত। আমরা যখন ঘুমায় তখন আমরা যা পড়েছি তা আমাদের স্মৃতি পটে গেঁথে যায়।
এছাড়া ঘুম মস্তিষ্কের গঠন ও ক্লান্তি দূর করার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
ঘুম আমাদের মন ও অনুভূতিকে প্রফুল্ল করে । আর প্রফুল্ল মন প্রশান্তি বয়ে আনে।
বিরতি নেওয়া
পড়াশোনার মাঝে অবশ্যই বিরতি নেওয়া প্রয়োজন। গবেষণায় দেখা গেছে, একটানা
পড়াশোনা না করে যদি বিরতি নিয়ে পড়া যায় তাহলে বেশি উপকার পাওয়া যায়। এতে
আপনার মস্তিষ্ক বিশ্রাম পায় এবং আপনার পড়া মুখস্ত হওয়ার প্রবণতা ও বেড়ে যায়।
তাই পড়ার মাঝে অবশ্যই বিরতি নিতে হবে। তবে এক্ষেত্রে আপনাকে মনে রাখতে হবে বিরতি
যেন শুধুই বিরতি হয়। এক্ষেত্রে আপনি কোন মোবাইল, গান, ফেসবুক দেখতে পারবেন না।
তাহলে আপনার মন অন্যদিকে সরে যাবে। আপনার পড়া মুখস্ত হবে না।
পড়া মনে রাখার খাবার
নিয়মিত ও পরিমিত সুষম খাদ্য গ্রহণ করা জরুরি। কারণ এতে আমাদের মস্তিষ্ক সতেজ
থাকে। অতিরিক্ত খাদ্য গ্রহণ করলে অলসতা বেড়ে যায় আর তা আমাদের অলস করে তোলে।
যার ফলে আমরা জ্ঞান অর্জনের পথ থেকে বিমুখ হয়ে পড়ি। তাছাড়া কিছু খাবার আছে যা
আমাদের মস্তিষ্কের জন্য অত্যন্ত জরুরি। সম্প্রতি ফ্রান্সের এক গবেষণায় দেখা
গিয়েছে, জয়তুনের তেল যাকে আমরা অলিভ অয়েল বলি এটা আমাদের সাবলীলতা বৃদ্ধি
করে।
এছাড়াও যেসব খাদ্য অধিক পরিমাণে ওমেগা থ্রি ফ্যাট রয়েছে সেসব খাদ্য স্মৃতিশক্তি
ও স্মরণশক্তি বাড়াতে খুব বেশি কার্যকর ভূমিকা পালন করে থাকে। এছাড়াও অনেক
আলেমগণ স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির অনেক খাবারের কথা বলেন। এর মধ্যে অন্যতম হলো মধু।
কারণ মধুতে রয়েছে মুক্ত চিনিকোষ যা আমাদের মস্তিষ্ক গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা
পালন করে থাকে। আর এ মধু হল মৌমাছির একটি বিষ।
পবিত্র কোরআনের সূরা আল নাহলে এ মৌমাছি সম্পর্কে বর্ণনা করা হয়েছে। মধু খাওয়ার
নিয়ম হল মধু ডান হাতের তালুতে নিয়ে চেটে চেটে খেতে হবে। আর এভাবেই মধু খাওয়া
হলো “সুন্নাহ”। মধু খাওয়ার ৭ মিনিটের মধ্যেই রক্তে মিশে গিয়ে কাজ শুরু করে
দেয়। তিনি আরো বলেন ,”যে হাদিস মুখস্ত করতে চাই সে যেন কিসমিস খায়”।
জীবনের অপ্রয়োজনীয় কাজ ত্যাগ করা
মস্তিষ্কের কর্ম ক্ষমতা হারিয়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ হলো অপ্রয়োজনীয় বিষয়
নিয়ে বেশি চিন্তা করা। যার কারণে আমরা যে কোন কাজই সঠিকভাবে বা মনোযোগের সাথে
করতে পারি না। বিশেষ করে আমরা একটা বিষয় বুঝতে পারি সালাত আদায়ের সময়।
আরো পড়ুনঃ সাম্প্রতিক বিশ্ব ও বাংলাদেশ রচনা সম্পর্কে জেনে নিন
আমরা এত বেশি বাজে চিন্তা নিয়ে ব্যস্ত থাকি যে, আগের রাকাতে কি পড়েছি তাও
ভুলে যাই। আর এর মূল কারণ হলো বেশি বাজে চিন্তা করা। তাই আমাদের উচিত বাজে চিন্তা
থেকে মুক্ত থাকা। আর এতে আমাদের স্মরণ শক্তি বৃদ্ধি পাবে।
কোন কাজে হাল না ছাড়া
যেকোনো কাজেরই সফলতা অর্জনের একটি অন্যতম উপায় হলো সে কাজ থেকে পিছিয়ে না আসা।
কোন কিছু মুখস্ত করার ক্ষেত্রে হয়তো আমাদের কাছে কঠিন হয়ে যায় তবুও আমাদের
উচিত হাল ছেড়ে না দেওয়া। তাহলে দেখবেন এক সময় মস্তিষ্ক সব কিছুর সাথে মানিয়ে
নিয়েছে । তাই আমাদের সবার উচিত তাওয়াক্কুলের সাথে চেষ্টা করা
।
শেষ কথা
শিক্ষা জাতির মেরুদন্ড এ কথা আমরা সবাই জানি। আর এ এই শিক্ষাকে সঠিকভাবে কাজে
লাগাতে হলে আমাদের উচিত আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে নৈতিকতার দিক থেকে গড়ে তোলা।
আর এই নৈতিক দিক গড়ার মূল লক্ষ্য হলো তাদের সঠিক মানুষ হিসেবে সমাজে প্রতিষ্ঠিত
করা। সঠিকভাবে পড়াশোনা করে এগিয়ে যেতে হলে তাদের পড়া মনে রাখার কৌশল জানা
জরুরী।
আমি পড়া মনে রাখার ইসলামিক উপায় – পড়া মনে রাখার ১০ টি উপায়
নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আমি আশা করি আবার এই আলোচনা আপনাদের অনেক উপকারে
আসবে।
Leave a comment