শিক্ষা জাতির মেরুদন্ড। আর শিক্ষিত হতে হলে পড়াশোনায় মনোযোগী হওয়ার
২০ উপায় – ব্রেন ভালো হওয়ার দোয়া জানা একান্ত প্রয়োজন কারণ আমাদের
শিক্ষার্থীরা যদি পড়াশোনায় মনোযোগী হওয়ার ২০ উপায় – ব্রেন ভালো হওয়ার
দোয়া না জানে তাহলে পড়াশোনা ধরে রাখতে পারবে না তাই পড়াশোনায় মনোযোগী
হওয়ার ২০ উপায় – ব্রেন ভালো হওয়ার দোয়া যারা পড়াশোনা করতে চান
তাদের জন্য।

স্মৃতিশক্তি হলো আল্লাহর একটি বড় নেয়ামত। যাদের স্মৃতিশক্তি প্রখর তারা সহজেই
পড়াশোনা ধরে রাখতে পারেন। কিন্তু এর পাশাপাশি পড়াশোনায় মনোযোগী হওয়ার
২০ উপায় – ব্রেন ভালো হওয়ার দোয়া জানা প্রয়োজন। নিচে পড়াশোনায়
মনোযোগী হওয়ার ২০ উপায় – ব্রেন ভালো হওয়ার দোয়া আলোচনা করা হলো।

পোস্ট সূচিপত্রঃ পড়াশোনায় মনোযোগী হওয়ার ২০টি  উপায় – ব্রেন ভালো
হওয়ার দোয়া 

পড়াশোনায় মনোযোগী হওয়ার ২০টি উপায়

কোন কিছু মুখস্ত করার যোগ্যতা বা কোন কিছু মনে রাখতে পারাকে স্মরণশক্তি বা
স্মৃতিশক্তি বলা হয় মানুষ ইচ্ছে করলে অনেক কিছু করতে পারে কিন্তু ইচ্ছে করলে
সমস্ত কিছু মুখস্ত করে রাখতে পারে না কত ধরনের সুবিধা লাভ করে তা বলে বোঝানো যাবে
না তাই মহান আল্লাহতালা মানুষকে স্মৃতিশক্তি বাড়াতে দোয়া জিকির এবং বিভিন্ন
কাজের প্রতি উৎসাহ দিয়েছেন কোরআন এবং হাদিসে জ্ঞান বৃদ্ধির অনেক দোয়া এবং আমল
বর্ণিত হয়েছে পড়াশোনায় মনোযোগী হওয়ার ইসলামিক উপায় আলোচনা করা হলো-

আন্তরিকতা বা ইখলাস

কোন কাজের সফলতা অর্জনের প্রধান উপায় হল আন্তরিকতা বা ইখলাস। আর ইখলাসের মূল
উপাদান হলো বিশুদ্ধ নিয়ত কারণ যে কোন কাজের ফলাফল তার নিয়তের উপর নির্ভর করে।
নিয়তের বিশুদ্ধতার গুরুত্ব সম্পর্কে ওস্তাদ খুররাম মুরাদ বলেছেন, “উদ্দেশ্য বা
নিয়ত হল আমাদের আত্মার মতো অথবা নিজের ভিতর থাকা প্রাণশক্তির মত। বেশিরভাগ বীজই
দেখতে মোটামুটি একই রকম কিন্তু লাগানোর পর  বীজগুলো যখন চারা গাছ হয়ে
বেড়ে ওঠে আর ফল দেওয়া শুরু করে তখন আসল পার্থক্যটা পরিষ্কার হয়ে যায় আমাদের
কাছে।

 একইভাবে নিয়ত যত বিশুদ্ধ হবে আমাদের কাজের ফল ও তত ভালো হবে”। আন্তরিকতা
এবং এ ইখলাসের ব্যাপারেও মহান আল্লাহতালা বলেন, “তাদের এ ছাড়া কোন নির্দেশনা করা
হয়নি যে, তারা খাঁটি মনে একনিষ্ঠভাবে ভাবে আল্লাহর ইবাদত করবে, নামাজ কায়েম
করবে এবং জাকাত দেবে। এটাই সঠিক ধর্ম”। (সূরা আল বায়্যিনাহ, আয়াতঃ ৫)। তাই
পড়াশোনায় মনোযোগী হওয়ার ইসলামিক উপায় হল আন্তরিকতা বা ইখলাসের সাথে কাজ করা।

নিয়মিত নামাজ আদায় করা

পড়াশোনায় মনোযোগী হওয়ার ইসলামী উপায় গুলোর মধ্যে অন্যতম উপায় হল নিয়মিত
পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা। কারণ নামাজ আদায় করলে মন প্রফুল্ল থাকে আর মন
প্রফুল্ল থাকলে কোন বিষয়ই আমাদের কাছে কঠিন মনে হয় না। এছাড়াও দীর্ঘ সিজদা
করলে ব্রেন প্রখর হয় আর ব্রেন প্রখর হলে যে কোন জিনিসই মনে রাখা সহজ হয়। বিশেষ
করে ফজর নামাজের গুরুত্ব বেশি দেয়া হয়েছে।

আরো পড়ুনঃ  রচনা – বিশ্ব পরিবেশ দিবস -বিস্তারিত জানুন (৬-১২)

কারন এই সময় পড়াশোনা করলে পড়াশোনা মনে থাকার সম্ভাবনা বেশি থাকে। কারণ মহান
আল্লাহতালা বলেছেন, “তোমরা দিনের আলোতে রিযিক সন্ধান করো”।এ ছাড়াও বলা হয়ে থাকে
“আর্লি টু বেড এন্ড আর্লি টু রাইস, মেক এ ম্যান হেলদি, ওয়েল দি এন্ড ওয়াইজ”।
তাই পড়াশোনা মনে রাখতে নিয়মিত নামাজ আদায় করুন।

কোরআন তেলাওয়াত করা

পড়াশোনায় মনোযোগী হওয়ার আরেকটি ইসলামিক উপায় হল নিয়মিত কোরআন তেলাওয়াত করা।
কারন নিয়মিত কোরআন তেলাওয়াত করলে মানুষের স্মরণ শক্তি এবং দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধি
পায় আর নিয়মিত কোরআন তেলাওয়াত করলে শয়তান ও আমাদের ধারে কাছে আসতে পারে না।
বলা হয়ে থাকে যে ঘরে সুরা বাকারা পাঠ করা হয়ে থাকে সেই ঘরে শয়তান আসতে পারে
না। আর শয়তান আসতে না পারলে মানুষের মনে কোন কুচিন্তার আবির্ভাব হয় না ফলে সহজে
পড়াশোনা মনে রাখা সহজ হয়।

জিকির করা ও দোয়া করা

আমাদের সবারই মনে রাখা উচিত মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন যদি আমাদের সাহায্য না
করেন তাহলে কোন কাজে আমাদের সফলতা অর্জন করা সম্ভব নয় তাই আমাদের প্রত্যেকের
উচিত মহান আল্লাহতালার কাছে দোয়া করা যাতে তিনি আমাদের স্মরণ শক্তি বাড়িয়ে দেন
এবং কল্যাণকর জ্ঞান দান করেন জ্ঞান বৃদ্ধির জন্য আমরা নিম্নোক্ত দোয়া গুলো পাঠ
করতে পারি

ﺳُﺒْﺤَﺎﻧَﻚَ ﻻَ ﻋِﻠْﻢَ ﻟَﻨَﺎ ﺇِﻻَّ ﻣَﺎ ﻋَﻠَّﻤْﺘَﻨَﺎ ﺇِﻧَّﻚَ ﺃَﻧﺖَ ﺍﻟْﻌَﻠِﻴﻢُ
ﺍﻟْﺤَﻜِﻴﻢُ

দোয়াটি হল -“সুবহানাকা লা ইলমা লানা ইল্লা মা আল্লামতানা ইন্নাকা আনতাল
আলিমুল হাকিম”

অর্থঃ হে আল্লাহ! আপনি পবিত্র। আমরা কোন কিছুই জানিনা তবে আপনি আমাদেরকে যা
শিখিয়েছেন সেগুলো ব্যতীত, নিশ্চয়ই আপনি প্রকৃত জ্ঞান সম্পন্ন
হেকমতওয়ালা।

رَّبِّ زِدْنِي عِلْمًا 

রাব্বি জিদনি ইলমা

অর্থঃ হে আমার প্রতিপালক আমার জ্ঞান বৃদ্ধি করুন। (সুরা ত্বহা, আয়াতঃ ১১৪)।

এছাড়া জিকির বা আল্লাহকে স্মরণ করলে ও জ্ঞান শক্তি বৃদ্ধি পায় এবং পড়া মনে
থাকে। আল্লাহ তায়ালা বলেন, “যখন ভুলে যান তখন আপনার পালনকর্তাকে স্মরণ করুন”।
(সুরা কাহাফ, আয়াতঃ ২৪)।

এছাড়াও আমাদের উচিত নিয়মিত জিকির তাজবীদ তাহলিল তাকবির পাঠ করা যেমন

  • সুবহানাল্লাহ
  • আলহামদুলিল্লাহ
  • লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ
  • আল্লাহু আকবার

এই জিকির গুলো বেশি বেশি করে পাঠ করতে হবে। তাহলে স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পাবে এবং
পড়াশোনা মনে রাখা সহজ হবে।

পাপ কাজ থেকে দূরে থাকা

প্রতিনিয়ত পাপ কাজ করলে স্মৃতিশক্তি দুর্বল হয়ে যায় আর পাপ হলো অন্ধকার জগত।
আর অন্ধকার জগত এবং জ্ঞানের আলো কখনো একসাথে থাকতে পারে না। যারা পাপ কাজ করে
তারা সব সময় বাজে চিন্তায় লিপ্ত থাকে আর বাজে চিন্তা মানুষের স্মরণ শক্তিকে
ধ্বংস করে দেয়। ইমাম সাফেয়ি রহমাতুল্লাহ বলেন, “আমি আমার সায়িক ওয়াকিকে আমার
খারাপ স্মৃতিশক্তির ব্যাপারে অভিযোগ করেছিলাম এবং তিনি শিখিয়েছিলেন আমি যেন পাপ
কাজ থেকে নিজেকে দূরে রাখি।

আরো পড়ুনঃ  কর্ণফুলী টানেল – বঙ্গবন্ধু টানেল রচনা

তিনি বলেন, আল্লাহর জ্ঞান আলো একটি আলো এবং আল্লাহর আলো কোন পাপাচারিকে দান করা
হয় না”। ইয়াহিয়া বিন ইয়াহিয়া বলেন, “এক ব্যক্তি মালিক ইবনে আনাস কে প্রশ্ন
করেছিলেন, হে আদব! আল্লাহ আমার স্মৃতিশক্তিকে শক্তিশালী করে দিতে পারে এমন কোন
কিছু কি আছে? তিনি বলেন, যদি কোন কিছু স্মৃতিকে শক্তিশালী করতে পারে তা হলো পাপ
করা ছেড়ে দেয়া”। (আল-জামি, ২/৩৮৭)।

আর ওপরের কথা গুলা থেকে আমরা বুঝতে পারি মানুষ যখন পাপ কাজ করে তখন তার
স্মৃতিশক্তি লোপ পায় কারণ পাপ কাজ তাকে উদ্বেগ ও দুঃখের দিকে ধাপিত করে। আর সে
তার কৃতকর্মে ব্যপারে ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়ে যার কারণে সে জ্ঞানের আলো থেকে দূরে
সরে পড়ে। তাই জ্ঞানের আলোকে বাড়াতে হলে পাপ কাজ থেকে দূরে সরে আসতে হবে।

বিভিন্ন উপায়ে চেষ্টা করা

পড়াশোনা মনে রাখার আরেকটি কৌশল হলো বিভিন্ন উপায়ে পড়া মুখস্ত করার চেষ্টা করতে
হবে। কারণ আমরা একটু গভীরভাবে লক্ষ্য করলে দেখতে পায়, আমাদের সকলের পড়া মুখস্ত
করার পদ্ধতি এক নয়। কেউ তাড়াতাড়ি পড়া মুখস্ত করতে পারে, কেউ হেঁটে হেঁটে
পড়ে, কেউ শুয়ে পড়ে, আবার কেউ হেলান দিয়ে বসে মুখস্থ করতে পারে, 

আবার কেউ কোন শব্দ করে পড়ে না শুধু নীরবে দেখে পড়ে, আবার কেউ জোরে আওয়াজ করে
পড়ে, আবার কেউ বা গভীর রাতে পড়া মুখস্ত করতে ভালো পারে।আবার অনেকের ক্ষেত্রে
পড়া তাড়াতাড়ি মুখস্ত হয়, আবার কাউকে অনেক সময় ধরে পড়তে হয়। তাই আমাদের
প্রত্যেকের উচিত আমাদের কখন পড়া ভাল মুখস্ত হচ্ছে এবং কিভাবে আমরা পড়লে উপকার
হচ্ছে সে বিষয়ে লক্ষ্য রেখে পড়া তৈরি করা।

 আর কেউ যদি কোরআন মুখস্ত করে তাহলে তার কোরআন মুখস্ত করার সময় কোরআনের
আরবি কপি ব্যবহার করা উচিত।কারণ বিভিন্ন ধরনের মুসহাফে ও আয়াতের বিন্যাস বিভিন্ন
রকম হয়ে থাকে। একটি নির্দিষ্ট মুসহাফ নিয়মিত ব্যবহার করলে মস্তিষ্কের মধ্যে তার
একটি নির্দিষ্ট ছাপ পড়ে যায় এবং মুখস্তকৃত অংশটি মনের ভিতরে গেথে থাকে।

মুখস্তকৃত বিষয়ের ওপর আমল করা বা রিভিশন দেওয়া

একথা আমরা সবাই জানি যে, যে বিষয়ের ওপর যত বেশি আমল করা যায় সেই বিষয় আমাদের
স্মৃতিশক্তিতে তত বেশি গেঁথে থাকে। তাই আমরা যদি কোরআন মাজীদ মুখস্ত করি তাহলে
নামাজ পড়ার সময় আমরা সেই অংশগুলো দিয়ে নামাজ পড়তে পারি তাহলে আমাদের আমল হয়ে
যাবে এবং মুখস্তকৃত অংশটি আমাদের স্মৃতিশক্তিতে গেঁথে যাবে। আবার যদি আমরা বাংলা
কোন পড়াশোনা করি তাহলে আমরা যখন অবসর থাকি সেই সময়ে আমরা মুখস্তকৃত অংশটি
রিভিশন দিতে পারি এতে করে আমাদের মুখস্থকৃত অংশটি আর ভুলে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে
না।

পরিমিত বিশ্রাম নেওয়া

পড়াশোনা করার সময় একটানা পড়াশোনা না করে কিছু সময় বিশ্রাম নেওয়া উচিত কারণ
যে কোনো কাজের সময় যেমন বিশ্রামের প্রয়োজন হয় পড়াশোনার ক্ষেত্রেও তেমনি
বিশ্রামের প্রয়োজন রয়েছে। আমরা যখন ঘুমায় তখন আমাদের মস্তিষ্কে আমরা যেগুলো
দিনে পড়াশোনা করেছি তা সুন্দরভাবে গেঁথে যায়। এছাড়াও যদি আমরা দুপুরে
সামান্যতম বিশ্রাম করি তাহলে আমাদের মন মেজাজ এবং অনুভূতিকে আরো চাঙ্গা করে। আর
দুপুরে একটু বিশ্রাম করা সুন্নাহও বটে। তাই আমাদের উচিত বাজে কাজ ছেড়ে দিয়ে রাত
জেগে বসে না থেকে যথা সময়ে ঘুমিয়ে যাওয়া এবং স্মৃতিশক্তিকে বিশ্রাম দেওয়া।

অন্যকে শেখানো

স্মরণশক্তি বৃদ্ধি বা পড়া মনে রাখার আরেকটি অন্যতম কৌশল হল তা অন্যকে শেখানো। আর
অন্যকে শিখাতে গেলে একই কাজ আমাদের বারবার পড়তে হয় এতে করে বিষয়টি আমাদের
স্মৃতিতে স্থায়ীভাবে গেঁথে যায়। আর এই বিষয়গুলো আমাদের স্মৃতিপটে এমন ভাবে ধরা
পড়ে যে এগুলো আর আমরা ভুলবো না।

 জীবনের অপ্রয়োজনীয় কাজগুলো ত্যাগ করা

আমাদের স্মৃতিশক্তি বাড়াতে হলে আমাদের অপ্রয়োজনীয় কাজগুলো বাদ দিতে হবে। কারণ
অপ্রয়োজনীয় কাজ স্মৃতিশক্তিকে কমিয়ে দেয় যার কারনে আমরা কোন কাজই গভীর
মনোযোগের সাথে করতে পারিনা। সবচেয়ে বেশি আমরা সমস্যায় পড়ি যখন সালাত আদায়
করতে বসি। এমন অনেক সময় আসে যখন আমরা চার রাকাত সালাতে কয় রাকাত আদায় করেছি
সেটাও মনে করতে পারি না।

আর এমনটি হওয়ার মূল কারণ হলো গান-বাজনা শুনা, মুভি দেখা, ফেসবুকে সময় কাটানো,
আড্ডাবাজি করা অর্থাৎ অপ্রয়োজনীয় কাজে জড়িয়ে থাকা। তাই আমাদের উচিত
স্মৃতিশক্তি বাড়াতে হলে এবং পড়া মনে রাখতে হলে এগুলো থেকে যতদূর সম্ভব দূরে
থাকতে হবে।

কোন কাজে হাল না ছাড়া

কোন কাজেই সফলতা অর্জন করতে হলে হাল ছাড়া যাবে না। কারণ সফলতা অর্জন একবারে নাও
হতে পারে। তাই যে কোন কিছু মুখস্ত করার ক্ষেত্রে একবারে মুখস্ত না হলে হাল না
ছেড়ে বারে বারে চেষ্টা করতে হবে। মনে রাখবেন সময়ের সাথে সাথে আমাদের মস্তিষ্ক
সব কিছু মানিয়ে নেয় তাই আমাদের উচিত শুরুতেই হাল ছেড়ে না দিয়ে আল্লাহর উপর
ভরসা রেখে চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া এবং বারবার পড়ার চেষ্টা করা।

বিরতি নেওয়া

পড়াশোনা করার সময় অবশ্যই বিরতি নিতে হবে কারণ আমরা যখন ঘুমায় তখন আমাদের
মস্তিষ্ক অনেকটা ব্যস্ত অফিসের মত কাজ করে। আর এটি তখন সারাদিনের সংগৃহীত
তথ্যসমূহ প্রক্রিয়াজাত করতে থাকে। ঘুম মানুষের মস্তিষ্কের কোষ কে পুনগঠন ও
ক্লান্তি দূর করার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই যদি একটানা পড়াশোনা না করে বিরতি
নিয়ে পড়া যায় তাহলে বেশি উপকার পাওয়া যায়। মুখস্ত হওয়ার প্রবণতা অনেক বেড়ে
যায়।

আরো পড়ুনঃ  মোবাইল ফোন – রচনা  ৬-১২ শ্রেণির জন্য

তাই যে কোন পড়া মুখস্ত করার সময় একটানা না পড়ে বিরতি নিয়ে পড়তে হবে। তবে
বিরতি নেওয়ার সময় একথাও মনে রাখতে হবে এই বিরতি যেন শুধু মস্তিষ্ককে বিরতি
দেওয়া হয়। বিরতির দেওয়ার নামে আপনি যদি মোবাইলে গান শুনেন বা ফেসবুকে সময়
কাটান অথবা টিভি দেখেন অথবা আড্ডা করেন তাহলে এই বিরতি আপনার কোন কাজে আসবে
না।

প্রতিযোগী মনোভাব তৈরি করা

পড়াশোনা মনে রাখার আরেকটি প্রধান কৌশল হলো প্রতিযোগী মনোভাব তৈরি করতে হবে।
এক্ষেত্রে আপনাকে দেখতে হবে কে বেশি সময় ধরে পড়াশোনা করছে এবং সঠিক নিয়মে
পড়াশোনা করছে আপনাকে তাকে অনুসরণ করতে হবে। আপনি যদি সঠিক জিনিস অনুসরণ করেন
তাহলে আপনি একদিন সফলকাম হতে পারবেন।

পড়াশোনার সঠিক সময় বেছে নেওয়া

পড়াশোনা মনে রাখতে হলে এবং স্মৃতিশক্তি ধরে রাখতে হলে আপনাকে পড়াশোনার সঠিক
সময় নির্বাচন করতে হবে। এক্ষেত্রে আপনি ভোরবেলায় পড়তে পারেন কারণ ভোর বেলায়
ব্রেন ফ্রেশ থাকে। দিনের বেলা যদি আপনাকে ৩ থেকে ৪ ঘন্টা পড়তে হয় আপনি দেখবেন
ভোরবেলায় আপনি সেই পড়া এক থেকে দেড় ঘণ্টার মধ্যে সম্পন্ন করতে পারবেন।

হাইলাইটার পেন ব্যবহার করুন

পড়া মনে রাখার আরেকটি কৌশল হলো আপনি হাইলাইটার পেন ব্যবহার করুন। এক্ষেত্রে
আপনার যে পয়েন্টটা সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ মনে হয় সেই পয়েন্টটা আপনি
হাইলাইটার পেন দিয়ে দাগিয়ে রাখুন। যেন পড়াশোনা করার সময় সহজেই এই লাইনটা
আপনার চোখে পড়ে। তাহলে দেখবেন আপনি অতি সহজেই পড়া মনে রাখতে পারছেন।

লিখে পড়ার অভ্যাস করুন

আপনি যে পড়াটা মুখস্ত করতে চান সেই পড়াটা আপনি একবার পড়ে নিয়ে সেটা লিখে
নিবেন কারণ একবার পড়া লেখা দশবার পড়ার সমান কাজ করে। আপনি যদি লিখে পড়তে চান
তাহলে দেখবেন পড়ার প্রতি মনোযোগ আপনার অনেক বেড়ে যাবে এবং সেটা সহজে আপনার
স্মৃতি শক্তিতে গেথে যাবে আর এতে করে আপনার পড়ায় মনোযোগ আসবে এবং পড়া
তাড়াতাড়ি মুখস্থ হবে।

উদাহরণ তৈরি করে নিন

আপনি যে পড়াটি পড়তে যাচ্ছেন তার সাথে মিল রেখে এমন কোন ঘটনা খোঁজে বের করবেন যে
ঘটনাটি আপনার পড়া মনে রাখতে সাহায্য করবে। তবে আপনাকে অবশ্যই বাস্তবধর্মী কিছু
উদাহরণ মনে রাখতে হবে।

কি ওয়ার্ড তৈরি করে নিন

আপনি যে পড়াটি পড়তে চাচ্ছেন সেই পড়াটি সহজে মনে রাখতে হলে আপনাকে পড়া গুলোর
মধ্যে থেকে সঠিক কীওয়ার্ড বেছে নিতে হবে কারণ আপনার লাইন বাই লাইন সহজে মনে
রাখতে পারবেন না। সে ক্ষেত্রে আপনাকে সেই পড়া গুলোর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ কিছু
ওয়ার্ড মনের মধ্যে গেঁথে নিতে হবে যাতে করে ওয়ার্ডগুলো মনে রাখলেই আপনি তার
পরের এবং আগের কিছু লাইন মনে করতে পারেন। যেমন – বেনীআসহকলা বললে আমরা সাতটি রং
এর নাম বুঝতে পারি। তেমনি আপনা কেও পড়াগুলোর মধ্যে থেকে সঠিক ভাবে কিছু লাইন
বেছে নিয়ে মনে রাখতে হবে।

পড়ার মাঝে আনন্দ খুঁজে বের করা

আপনি যে পড়াটি পড়তে চাচ্ছেন সেই পড়াকে আপনাকে আনন্দের সাথে গ্রহণ করতে হবে।
আপনি একটু চিন্তা করলেই বুঝতে পারবেন আপনি যখন কোন সিনেমা, নাটক দেখেন তখন সেটা
সহজেই আপনার মনে থাকে কারণ আপনি এই নাটকটি আনন্দের সাথে গ্রহণ করেন। তেমনি আপনি
যখন পড়বেন তখন আপনাকে সেই পড়া কেও ভালোবেসে আনন্দের সাথে গ্রহণ করতে হবে। তাহলে
দেখবেন পড়া সহজেই মনে থাকবে। আপনার স্মৃতি থেকে কখনোই মুছে যাবে না।

পড়া না বুঝে মুখস্ত করবেন না

আপনি যখন কোন পড়া মুখস্ত করতে চাইবেন তাহলে সেই পড়া আগে বুঝে নেওয়ার চেষ্টা
করবেন। পড়া না বুঝে মুখস্ত করার চেষ্টা করলে আপনার বিরক্তি এসে যাবে এবং পড়া
সহজে মুখস্ত হবে না। মনে রাখবেন মুখস্ত বিদ্যা চিন্তা শক্তিকে অকেজো করে দেয় আর
পড়ার আনন্দের ও মাটি করে দেয়। আপনি যদি না বুঝে কোন কিছু মুখস্ত করেন তাহলে
তাৎক্ষণিক আপনার মনে হবে আপনি মুখস্ত করতে পেরেছেন কিন্তু হয়তো আধা ঘন্টা পর
আপনি আর সেটা বলতে পারবেন না। তাই যে কোন জিনিস পড়ার আগে আপনি সেটা বুঝে নিয়ে
তারপরে মুখস্থ করার চেষ্টা করবেন।

পড়া মনে রাখার খাবার

আমাদের মস্তিষ্ককে সুস্থ রাখতে এবং পড়া মনে রাখতে হলে নিয়মিত ও পরিমিত সুষম
খাদ্য গ্রহণ করতে হবে। অতিরিক্ত খাদ্য গ্রহণ করা যাবে না কারণ অতিরিক্ত খাদ্য
আমাদের ঘুম বাড়িয়ে দেয় যা আমাদের অলস করে তোলে। আর অলসতা মানুষকে জ্ঞান অর্জন
থেকে বিমুখ করে ফেলে। তাছাড়া কিছু কিছু খাবার আছে যেগুলো আমাদের মস্তিষ্কের জন্য
খুবই উপকারী। 

সম্প্রতি ফ্রান্সের এক গবেষণায় দেখা গেছে যে জয়তুনের তেল যাকে আমরা অলিভ অয়েল
তেল বলে থাকি চাক্ষুষ স্মৃতি এবং বাচনিক সাবলীলতা বৃদ্ধি করে। এছাড়াও যেসব খাবে
অধিক পরিমাণে ও মেগা 3 ফ্যাট রয়েছে সেসব খাদ্য আমাদের স্মৃতিশক্তি ও মস্তিষ্কের
কার্যক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে। স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির জন্য অনেক আলেম
কিছু নির্দিষ্ট খাদ্য গ্রহণের কথা বলেছেন। যেমন ইমাম আয যুহুরী বলেন, তোমাদের মধু
পান করা উচিত।

আরো পড়ুনঃ  নৈতিকতা ও মূল্যবোধ রচনা সম্পর্কে জানুন

কারণ এটি স্মৃতি শক্তি বৃদ্ধির জন্য উপকারী। মধুতে রয়েছে চিনি মুক্ত কোষ যা
আমাদের মস্তিষ্ককে গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। পবিত্র আল কুরআনের
সূরা আল নাহলে মৌমাছি সম্পর্কে বর্ণনা করা হয়েছে। আর মধু হলো মৌমাছির একটি বিষ।
তবে মধু খাওয়ার নিয়ম হলো মধুর ডান হাতের তালুতে নিয়ে চেটে চেটে খাওয়া। আর
এভাবে মধু খাওয়া হলো সুন্নাহ।

মধু হলো এমন একটি উপাদান যা খাওয়ার ৭ মিনিটের মধ্যে আমাদের রক্তে মিশে গিয়ে কাজ
শুরু করে দেয়। এছাড়া ও স্মৃতিশক্তি বাড়াতে কিসমিস অনেক উপকারী। তিনি আরো বলেন,
“যে হাদিস মুখস্ত করতে চাই সে যেন কিসমিস খায়”।

এছাড়াও ভিটামিন ই যুক্ত খাবার খেতে হবে কারণ ভিটামিন ই কমে গেলে মস্তিষ্কের
ক্ষমতা হ্রাস পায়। তাই মস্তিষ্কের ক্ষমতা বাড়াতে আখরোট, কাজু বাদাম, পেস্তা,
চীনা বাদাম এবং কুমড়োর বীজ, তিল বীজ খেতে হবে। এছাড়াও অ্যাভোকাডো ফল, ওটস মিল,
পাউরুটি, বাদামি চালের মতো গোটা শস্য দানা, মটরশুঁটি, ডালিম, সঠিক নিয়মে তৈরি
চা, ডার্ক চকলেট, তৈলাক্ত মাছ ইত্যাদি খেতে পারেন।

ব্রেন ভালো হওয়ার দোয়া / তাড়াতাড়ি পড়া মুখস্ত করার দোয়া

স্মৃতিশক্তির অপর নাম হল ব্রেন। আর কোন কিছু মনে রাখতে পারাকে বলা হয়
স্মৃতিশক্তি বা ব্রেন। স্মৃতিশক্তি প্রখর হওয়া কত প্রয়োজন যার স্মৃতি শক্তি কম
একমাত্র সেই বুঝতে পারে। কোন কিছু মনে রাখার জন্য আমরা মহান আল্লাহতালার কাছে
সাহায্য প্রার্থনা করব। সৃষ্টির শুরু থেকে এখন পর্যন্ত ছোট বড় অনেক মানুষ
কোরআনুল কারীম মুখস্ত করেছেন। বড় পীর হযরত আব্দুল কাদের জিলানী মায়ের গর্ভে
থাকাকালীন অবস্থায় চার ৪ পারা কোরআন মুখস্ত করেছেন।

এছাড়াও ইমাম শাফি রহমাতুল্লাহি থেকে শুরু করে অনেক কম বয়সের বাচ্চারাও কোরআন
মুখস্ত করেছেন। কেউ হয়েছেন ইংরেজিতে পারদর্শী আবার কেউ অংকে পারদর্শী। আর এ
সবকিছুই মহান আল্লাহ তাআলার নেয়ামত। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন মানুষের
স্মৃতিশক্তি বাড়াতে বেশ কিছু দোয়া এবং জিকির নসিব করেছেন। 

কোরআন এবং হাদিসের জ্ঞান বৃদ্ধির অনেক দোয়া বর্ণিত হয়েছে আর এ সব দোয়া আমল
করলে আল্লাহ তায়ালা জ্ঞান বৃদ্ধি করে দেন।মানুষের কল্যাণকর ইলেম এবং জ্ঞান দান
করেন তাই প্রত্যেক মুমিন মুসলমানের উচিত আল্লাহর উপর ভরসা রেখে এসব দোয়া ও জিকির
পাঠ করা।

দোয়াটি হল -“সুবহানাকা লা ইলমা লানা ইল্লা মা আল্লামতানা ইন্নাকা আনতাল
আলিমুল হাকিম”

অর্থঃ এহে আল্লাহ! আপনি পবিত্র। আমরা কোন কিছুই জানিনা, তবে আপনি আমাদিগকে
যা শিখিয়েছেন সেগুলো ব্যতীত, নিশ্চয়ই আপনি প্রকৃত জ্ঞান সম্পন্ন হেকমতওয়ালা।
(২/৩২)

মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদের প্রিয় ও শেষ নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) কে
কোরআন মুখস্ত করার, স্মরণ শক্তি এবং কৌশল বাড়াতে দোয়া শিখিয়েছেন এবং নসিহত
করেছেন। যখন হযরত জিব্রাইল (আঃ) ওহী নিয়ে আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ
(সাঃ) এর কাছে আসতেন ওহী নাযিল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রাসূল (সাঃ) তা
মুখস্ত করার চেষ্টা করতেন।

আর এই মুখস্ত করাটা ছিল আমাদের নবীর জন্য অনেক কষ্টকর তাই মহান আল্লাহতালা
কুরআনুল কারীমে এ সম্পর্কে একটি আয়াত নাজিল করে রাসূল (সাঃ) কে উপদেশ দিলেন
এবং দোয়া শিখিয়ে দিলেন।

اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْهَمِّ وَالْحَزَنِ، وَالْعَجْزِ
وَالْكَسَلِ، وَالْبُخْلِ وَالْجُبْنِ، وَضَلَعِ الدَّيْنِ وَغَلَبَةِ
الرِّجَالِ

অর্থঃ হে আল্লাহ, আমি আপনার আশ্রয় নিয়েছি দুশ্চিন্তা ও দুঃখ থেকে, অপরগতা ও
অলসতা থেকে, কৃপণতা ও ভীরুতা থেকে, ঋণের ভার ও মানুষদের দমন পীড়ন থেকে।

فَتَعَالَى اللَّهُ الْمَلِكُ الْحَقُّ وَلَا تَعْجَلْ بِالْقُرْآنِ مِن
قَبْلِ أَن يُقْضَى إِلَيْكَ وَحْيُهُ

অর্থঃ সত্যিকারের মালিক হলেন মহান আল্লাহতালা। আপনার কাছে আল্লাহর ওহী সম্পন্ন
হওয়ার আগে আপনি কোরানের আয়াতের জন্য তাড়াহুড়া করবেন না।

এই আয়াতের প্রথম অংশের মাধ্যমে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে ওহী
আসার কর্তা মুখস্ত করার বিষয়ে তাড়াহুড়া করতে নিষেধ করেছেন বরং ধীর স্থিরতার
উপদেশ দিয়েছেন।

স্মরণশক্তি বৃদ্ধি হওয়ার অপর একটি দোয়া-

অর্থঃ হে আল্লাহ! আপনি
পবিত্র। আমরা কোন কিছুই জানিনা তবে আপনি আমাদেরকে যা শিখিয়েছেন সেগুলো ব্যতীত,
নিশ্চয়ই আপনি প্রকৃত জ্ঞান সম্পন্ন হেকমতওয়ালা।

ﺳُﺒْﺤَﺎﻧَﻚَ ﻻَ
ﻋِﻠْﻢَ ﻟَﻨَﺎ ﺇِﻻَّ ﻣَﺎ ﻋَﻠَّﻤْﺘَﻨَﺎ ﺇِﻧَّﻚَ ﺃَﻧﺖَ ﺍﻟْﻌَﻠِﻴﻢُ ﺍﻟْﺤَﻜِﻴﻢُ

দোয়াটি হল -“সুবহানাকা লা ইলমা লানা ইল্লা মা আল্লামতানা ইন্নাকা আনতাল
আলিমুল হাকিম”

অর্থঃ হে আল্লাহ! আপনি পবিত্র। আমরা কোন কিছুই জানিনা তবে আপনি আমাদেরকে যা
শিখিয়েছেন সেগুলো ব্যতীত, নিশ্চয়ই আপনি প্রকৃত জ্ঞান সম্পন্ন হেকমতওয়ালা।

رَّبِّ زِدْنِي عِلْمًا 

রাব্বি জিদনি ইলমা

অর্থঃ হে আমার প্রতিপালক আমার জ্ঞান বৃদ্ধি করুন। (সুরা ত্বহা, আয়াতঃ ১১৪)।

এছাড়াও আরেকটি দোয়া হলো-

“আল্লাহুম্মা ছাব্বিতনি ওয়াজ আলনি হাদিইয়্যাম মাহদিয়্যা”

এছাড়া জ্ঞান বৃদ্ধির জন্য বেশি বেশি করে আল্লাহতালার জিকির করতে হবে। মহান
আল্লাহ তা’আলা সূরা আল কাহাফ এর ২৪ নং আয়াতে বলেন- “যখন ভুলে যান তখন আপনারা
পালন কর্তাকে স্মরণ করুন”। 

আর এই আয়াতের মাধ্যমে আমরা বুঝতে পারি স্মরণশক্তি বৃদ্ধির জন্য বেশি বেশি করে
আল্লাহর জিকির এবং তাসবিহ, তাহালিল, তাহামিদ, তাকবির পাঠ করতে হবে। অর্থাৎ
সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহু আকবার, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ এবং আল্লাহ
আকবার পাঠ করতে হবে।

মহান আল্লাহ তা’আলা আরো বলেন, “তাদের এ ছাড়া কোন নির্দেশনা করা হয়নি যে, তারা
খাঁটি মনে একনিষ্ঠভাবে ভাবে আল্লাহর ইবাদত করবে, নামাজ কায়েম করবে এবং জাকাত
দেবে। এটাই সঠিক ধর্ম”। (সূরা আল বায়্যিনাহ, আয়াতঃ ৫)।

পড়া মনে রাখার ঔষধ

পড়া মনে রাখার আসলে কোন ঔষধ নেই। পড়া মনে রাখতে হলে আপনাকে বিভিন্ন কৌশল
অবলম্বন করে পড়াশোনা করতে হবে। সে ক্ষেত্রে আপনাকে স্মরণশক্তি বৃদ্ধি করে এমন
দোয়া পাঠ করতে হবে এবং স্মরণশক্তি বৃদ্ধি পায় এমন খাবার খেতে হবে। 

মধু স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির জন্য উপকারী। মধুতে রয়েছে চিনি মুক্ত কোষ যা আমাদের
মস্তিষ্ককে গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। পবিত্র আল কুরআনের সূরা আল
নাহলে মৌমাছি সম্পর্কে বর্ণনা করা হয়েছে। আর মধু হলো মৌমাছির একটি বিষ। তবে মধু
খাওয়ার নিয়ম হলো মধুর ডান হাতের তালুতে নিয়ে চেটে চেটে খাওয়া। আর এভাবে মধু
খাওয়া হলো সুন্নাহ।

মধু হলো এমন একটি উপাদান যা খাওয়ার ৭ মিনিটের মধ্যে আমাদের রক্তে মিশে গিয়ে কাজ
শুরু করে দেয়। এছাড়া ও স্মৃতিশক্তি বাড়াতে কিসমিস অনেক উপকারী। তিনি আরো বলেন,
“যে হাদিস মুখস্ত করতে চাই সে যেন কিসমিস খায়”।

আরো পড়ুনঃ  শিক্ষা ক্ষেত্রে ইন্টারনেটের দশটি ১০টি  ব্যবহার 
বিস্তারিত 

এছাড়াও ভিটামিন ই যুক্ত খাবার খেতে হবে কারণ ভিটামিন ই কমে গেলে মস্তিষ্কের
ক্ষমতা হ্রাস পায়। তাই মস্তিষ্কের ক্ষমতা বাড়াতে আখরোট, কাজু বাদাম, পেস্তা,
চীনা বাদাম এবং কুমড়োর বীজ, তিল বীজ খেতে হবে। এছাড়াও অ্যাভোকাডো ফল, ওটস মিল,
পাউরুটি, বাদামি চালের মতো গোটা শস্য দানা, মটরশুঁটি, ডালিম, সঠিক নিয়মে তৈরি
চা, ডার্ক চকলেট, তৈলাক্ত মাছ ইত্যাদি খেতে পারেন।

পড়া মনে রাখার দোয়া আর এগুলোকেই আপনি পড়া মনে রাখার ঔষধ হিসেবে নিতে পারেন-

اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْهَمِّ وَالْحَزَنِ، وَالْعَجْزِ
وَالْكَسَلِ، وَالْبُخْلِ وَالْجُبْنِ، وَضَلَعِ الدَّيْنِ وَغَلَبَةِ
الرِّجَالِ

অর্থঃ হে আল্লাহ, আমি আপনার আশ্রয় নিয়েছি দুশ্চিন্তা ও দুঃখ থেকে, অপরগতা ও
অলসতা থেকে, কৃপণতা ও ভীরুতা থেকে, ঋণের ভার ও মানুষদের দমন পীড়ন থেকে।

فَتَعَالَى اللَّهُ الْمَلِكُ الْحَقُّ وَلَا تَعْجَلْ بِالْقُرْآنِ مِن
قَبْلِ أَن يُقْضَى إِلَيْكَ وَحْيُهُ

অর্থঃ সত্যিকারের মালিক হলেন মহান আল্লাহতালা। আপনার কাছে আল্লাহর ওহী সম্পন্ন
হওয়ার আগে আপনি কোরানের আয়াতের জন্য তাড়াহুড়া করবেন না।

এই আয়াতের প্রথম অংশের মাধ্যমে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে ওহী
আসার কর্তা মুখস্ত করার বিষয়ে তাড়াহুড়া করতে নিষেধ করেছেন বরং ধীর স্থিরতার
উপদেশ দিয়েছেন।

স্মরণশক্তি বৃদ্ধি হওয়ার অপর একটি দোয়া-

অর্থঃ হে আল্লাহ! আপনি পবিত্র। আমরা কোন কিছুই জানিনা তবে আপনি আমাদেরকে যা
শিখিয়েছেন সেগুলো ব্যতীত, নিশ্চয়ই আপনি প্রকৃত জ্ঞান সম্পন্ন হেকমতওয়ালা।

ﺳُﺒْﺤَﺎﻧَﻚَ ﻻَ ﻋِﻠْﻢَ ﻟَﻨَﺎ ﺇِﻻَّ ﻣَﺎ ﻋَﻠَّﻤْﺘَﻨَﺎ ﺇِﻧَّﻚَ ﺃَﻧﺖَ ﺍﻟْﻌَﻠِﻴﻢُ
ﺍﻟْﺤَﻜِﻴﻢُ

দোয়াটি হল -“সুবহানাকা লা ইলমা লানা ইল্লা মা আল্লামতানা ইন্নাকা আনতাল
আলিমুল হাকিম”

অর্থঃ হে আল্লাহ! আপনি পবিত্র। আমরা কোন কিছুই জানিনা তবে আপনি আমাদেরকে যা
শিখিয়েছেন সেগুলো ব্যতীত, নিশ্চয়ই আপনি প্রকৃত জ্ঞান সম্পন্ন হেকমতওয়ালা।

رَّبِّ زِدْنِي عِلْمًا 

রাব্বি জিদনি ইলমা

অর্থঃ হে আমার প্রতিপালক আমার জ্ঞান বৃদ্ধি করুন। (সুরা ত্বহা, আয়াতঃ ১১৪)।

এছাড়া জ্ঞান বৃদ্ধির জন্য বেশি বেশি করে আল্লাহতালার জিকির করতে হবে। মহান
আল্লাহ তা’আলা সূরা আল কাহাফ এর ২৪ নং আয়াতে বলেন- “যখন ভুলে যান তখন আপনারা
পালন কর্তাকে স্মরণ করুন”। 

এছাড়াও আরেকটি দোয়া হলো-

“আল্লাহুম্মা ছাব্বিতনি ওয়াজ আলনি হাদিইয়্যাম মাহদিয়্যা”

পড়া স্মরণ রাখার জন্য কোন সূরা পড়তে হয়

স্মৃতিশক্তি আল্লাহর একটি বড় নেয়ামত। যাদের স্মৃতিশক্তি কম তাদের পড়া মনে
রাখার জন্য বিভিন্ন সূরা এবং দোয়া পড়ার প্রয়োজন হয়। পড়া স্মরণ রাখার জন্য যে
সূরা পাঠ করতে হয় তা হল – ইমাম আহমেদ রিদা খান বলেন, কারো স্মৃতিশক্তি বাড়াতে
হলে ঘুমের আগে সূরা আলম নাশরাহ ১৭ বার পড়ে বুকে ফু দিতে হবে এবং পানিতে ফু দিয়ে
পান করতে হবে। এছাড়া প্রতিদিন সকালে একই নিয়মে পাঠ করে বুকে ফু দিতে হবে এবং
পানিতে ফু দিয়ে সেই পানি পান করতে হবে।

শেষ কথা

শিক্ষার কোন বয়স নেই যে কোন বয়স এই মানুষ পড়াশোনা শিখতে পারে। তাই পড়াশোনা
মনে রাখতে হলে পড়াশোনায় মনোযোগী হওয়ার ২০টি  উপায় – ব্রেন ভালো হওয়ার
দোয়া আমাদের জানা অবশ্য কর্তব্য। তাই আমি আজকে আমার আর্টিকেল এর মাধ্যমে
পড়াশোনায় মনোযোগী হওয়ার ২০টি  উপায় – ব্রেন ভালো হওয়ার
দোয়া বিস্তারিত ভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। আমি আশা করি, আমার এই
আর্টিকেল আপনাদের অনেক উপকারে আসবে। আর যদি উপকারে আসে তাহলে অবশ্যই একটি কমেন্টস
করে জানাবেন। আর ভুল ত্রুটি থাকলে অবশ্যই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।