প্রশ্নঃ নৈতিক প্রগতির বিকাশের ধারাটি আলোচনা কর।
অথবা, নৈতিক প্রগতির ক্রমবিকাশ আলোচনা কর।
অথবা, নৈতিক অগ্রগতির ক্রমবিকাশ তুলে ধর।
ভূমিকাঃ নৈতিক অগ্রগতির জন্য বিভিন্ন সামাজিক প্রতিষ্ঠানের সহায়তার প্রয়োজন রয়েছে। শুধু আদর্শের চেতনাই নৈতিক অগ্রগতির একমাত্র শক্তি নয়। কারণ, পরিবার, বিদ্যালয়ের মত সামাজিক প্রতিষ্ঠান থেকেই ব্যক্তি নৈতিকতার শিক্ষা লাভ করে। এ সব কিছুর মিলিত প্রচেষ্টাকেই নৈতিক অগ্রগতি ত্বরান্বিত হয়।
নৈতিক প্রগতির ক্রম বিকাশঃ তিনটি স্তরে ব্যক্তির নৈতিক নিয়ম সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণার অভাব থাকে। কারণ, শিশুকালে ব্যক্তির বুদ্ধি এবং নৈতিক অন্তর্দৃষ্টি পূর্ণরূপ বিকশিত হয় না। সে সমাজে প্রচলিত সামাজিক নিয়ম ও প্রয়াস দ্বারাই নিজের কাজের বিচারবিশ্লেষণ করে।
১. প্রথম স্তরঃ নৈতিক প্রগতির প্রথম স্তরে ব্যক্তির মধ্যে নৈতিক নিয়ম সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণার অভাব থাকে। কারণ শিশুকালে ব্যক্তির বুদ্ধি এবং নৈতিক অন্তদৃষ্টি পূর্ণরূপে বিকশিত হয় না। সে সমাজে প্রচলিত সামাজিক নিয়ম ও প্রথার দ্বারাই নিজের কাজের বিচার বিশ্লেষণ করে।
২. দ্বিতীয় স্তরঃ দ্বিতীয় স্তরে এসে, ব্যক্তির অন্তর্দৃষ্টির বিকাশের সাথে সাথে বুদ্ধি বিবেচনা ও নৈতিকতা সম্পর্কে জ্ঞান বিকাশের আহরণ করতে থাকে। সে বুঝতে শেখে যে, সমাজে প্রচলিত প্রথা অর্থাৎ বহিঃনিয়ন্ত্রণ নয় বরং নিজের মনের অভিপ্রায় দিয়ে কাজের নৈতিক বিচার করতে হবে। এভাবে তার দৃষ্টি হয়ে উঠে বস্তুনিরপেক্ষ।
৩. তৃতীয় স্তরঃ তৃতীয় স্তরে যখন মানুষের অন্তর্দৃষ্টি পূর্ণরূপে বিকশিত হয়, বিচার-বিশ্লেষণের ক্ষমতা আরো গভীর হয় তখন সে সমাজে প্রচলিত প্রথা ও আইনের দোষ-ত্রুটি চিহ্নিত করতে শেখে, বহিঃনিয়ন্ত্রণকে দূরে ঠেলে তাকে পরিচালনা করে তার অন্তরের বিবেক। তখন সে সমাজের নৈতিক গঠন ও নৈতিক আদর্শ সম্পর্কে সচেতন হতে পারে।
উপসংহারঃ পরিশেষে বলা যায় যে, উপরোক্ত তিনটি স্তরের ভেতর দিয়েই ধীরে ধীরে ব্যক্তির নৈতিক চেতনার বিকাশ ঘটে। এরপর নৈতিক অগ্রগতির পথে সে ক্রমে অগ্রসর হয়। তাই নৈতিক প্রগতির ক্রমবিকাশের ধারা আলোচনা নীতিবিদ্যায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।
Leave a comment