প্রশ্নঃ নেতৃত্ব কী?

অথবা, নেতৃত্ব কাকে বলে?

ভূমিকাঃ সামাজিকজীবনে নেতৃত্ব একটি পরিচিত ও বহুল ব্যবহৃত শব্দ। বিভিন্ন সামাজিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে নেতৃত্ব সৃষ্টিকারী আচরণ পরিলক্ষিত হয়। এককথায় দুই বা ততােধিক ব্যক্তির সমন্বয়ে গঠিত দলে একজন নেতার ভমিকায় থাকেন যার আচরণ ও ক্রিয়াকলাপ অন্যের ওপর প্রভাব বিস্তার করে।

নেতৃত্বের সংজ্ঞাঃ সাধারণভাবে ‘নেতৃত্ব’ ও ‘নেতা’ শব্দ দু’টি একই অর্থে ব্যবহৃত হলেও প্রকতপক্ষে শব্দ দু’টি একই অর্থ জ্ঞাপন করে না। নেতৃত্ব কোনাে ব্যক্তি নয়, একটি প্রক্রিয়া। এর তিনটি উপাদান আছে যথাঃ (১) নেতা, (২) অনুগামী, (৩) পরিস্থিতি। নেতৃত্ব মূলত কোনাে পরিস্থিতিতে নেতা ও অনুগামীদের সম্পর্কের ফলশ্রুতি।

প্রামাণ্য সংজ্ঞাঃ বিভিন্ন মনােবিজ্ঞানী নেতৃত্বকে বিভিন্নভাবে সংজ্ঞায়িত করেছেন। যেমন-

মনােবিজ্ঞানী লা পিয়ের ও ফ্রান্সওয়ার্থ-এর মতে, অপর ব্যক্তিদের আচরণ নেতাকে যতখানি না প্রভাবিত করে, নেতৃত্ব হলাে সেই আচরণ যা অপর ব্যক্তিদের আচরণকে অধিকতর প্রভাবিত করে।

হল্যান্ডার ও জুলিয়ানের (১৯৬৯) ভাষায়, ‘নেতৃত্ব হচ্ছে দ্বি-মুখী প্রক্রিয়া। নেতৃত্ব মূলত কোনাে পরিস্থিতিতে নেতা ও অনুগামিদের সম্পর্কের ফলশ্রুতি।

সি আই বার্নার্ড (C.I. Bernard) বলেন, নেতৃত্ব হলাে ব্যক্তিবর্গের এমন গুণপনা যার মাধ্যম তারা সংগঠিত কর্ম উদ্যোগে জনগণের অথবা তাদের কার্যক্রমের দিকনির্দেশনা দিয়ে থাকেন।

আমেরিকান সমাজবিজ্ঞানী কিম্বল ইয়ং (Kimbol Young) বলেন, “নেতৃত্ব হলাে ব্যক্তির সে গুণাবলি যার মাধ্যমে সে অন্যদের কর্মধারা প্রভাবিত করে এবং অন্যদের ওপর আধিপত্য বিস্তার করে।”

Katz এবং Kahn বলেছেন, সংগঠনের নিয়মমাফিক নির্দেশনার সাথে যান্ত্রিক সম্পত্তির ওপরে ক্রমবর্ধমান প্রভাবকে নেতৃত্ব বলে।

পরিশেষঃ উপযুক্ত আলােচনার মাধ্যমে আমরা বলতে পারি যে, ওপরে আলােচিত নেতৃত্ব ছাড়াও অনেক ধরনের নেতৃত্ব রয়েছে। পরিবারে পিতা-মাতা, বিদ্যালয়ে শিক্ষক-শিক্ষিকা, অফিসে কর্মকর্তা এরা সকলেই এক এক ধরনের নেতা।