প্রশ্নঃ আন্তর্জাতিক নদী যে রাষ্ট্রের উপর দিয়ে প্রবাহিত হয় বা নদী বিধৌত রাষ্ট্রের বা নদীর তীরবর্তী রাষ্ট্রের অধিকার ও দায়-দায়িত্ব আলোচনা কর। 

ভূমিকাঃ আন্তর্জাতিক নদী আইন একটি গুরুত্বপূর্ণ আইন। পূর্বের তুলনায় বর্তমানে নদীর ব্যবহার বিশেষ করে আন্তর্জাতিক নদীর ব্যবহার অনেক গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। সুতরাং আন্তর্জাতিক নদীর নানামূখী ব্যবহারের ফলে এর গুরুত্বও বৃদ্ধি পেয়েছে।

নদী বিধৌত রাষ্ট্রের বা নদীর তীরবর্তী রাষ্ট্রের অধিকার :

(১) নির্দোষ অতিক্রমের সুবিধা : কোন আন্তর্জাতিক নদী যে সকল রাষ্ট্রের উপর দিয়ে প্রবাহিত হয় সেই সকল রাষ্ট্রই ঐ নদীর উপকূলীয় রাষ্ট্র। প্রত্যেক উপকূলীয় রাষ্ট্র ঐ আন্তর্জাতিক নদীতে তাদের জাহাজ নির্দোষ অতিক্রমের অধিকার প্রাপ্ত হবে।

(২) কোন শর্ত লংঘন হলে ব্যবস্থা গ্রহণ : উপকূলীয় রাষ্ট্রের অভ্যন্তরে কোন জাহাজ চলাচলের সময় কোন শর্ত লংঘন হলে উক্ত রাষ্ট্র প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবে।

(৩) নিজস্ব পতাকা ব্যবহার : প্রত্যেক রাষ্ট্র নিজস্ব পতাকা ব্যবহার করে আন্তর্জাতিক নদীতে নৌ চলাচল করাতে পারবে।

(৪) নৌ আইন মান্য করা : বিদেশী জাহাজ অবশ্যই উপকূলীয় রাষ্ট্রের অভ্যন্তরে চলাচলের সময় নৌ আইন মেনে চলবে। এটি উপকূলীয় রাষ্ট্রের অধিকার।

নদী বিধৌত রাষ্ট্রের বা নদীর তীরবর্তী রাষ্ট্রের দায়-দায়িত্ব :

(১) নির্দোষ অতিক্রম করতে দেয়া : আন্তর্জাতিক নদীতে উপকূলীয় কোন দেশের জাহাজ নির্দোষ অতিক্রম করলে তাদের নির্দোষ অতিক্ৰণে বাধা না দেয়া সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রের দায়িত্ব। 

(২) বিদেশী জাহাজকে নির্দোষ অতিক্রম করতে দেয়া : আন্তর্জাতিক নদীতে কোন বিদেশী জাহাজ নির্দোষ অতিক্রম করলে তাদের নির্দোষ অতিক্রণে বাধা না দেয়া উপকূলীয় রাষ্ট্রের কম দায়িত্ব।

(৩) কোন শর্ত লংঘন না করলে ব্যবস্থা না নেয়া : উপকূলীয় রাষ্ট্রের অভ্যন্তরে কোন জাহাজ ক্যা চলাচলের সময় কোন শর্ত লংঘন না করলে উক্ত রাষ্ট্র কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করবে না। 

(৪) স্রোত বন্ধ না করা : উপকূলীয় রাষ্ট্র তার এলাকায় নদীর স্রোত এমনভাবে বন্ধ করবে না যার ফলে অন্য উপকূলীয় রাষ্ট্রের ক্ষতি হয়।

উপসংহারঃ আন্তর্জাতিক নদী আইন মূলত: বিভিন্ন প্রথার উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে। অর্থাৎ নদী ব্যবহারের বিভিন্ন প্রথা পরবর্তীতে আইনে রূপ লাভ করেছে।