বহু মনােবিদ ধারণাকে সব রকম শিখনের মৌলিক ভিত্তি হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। একই ধরনের বস্তুসমূহের মধ্যে যে সাধারণ বৈশিষ্ট্য বা বৈশিষ্ট্যগুলি বর্তমান, সে সম্পর্কে জ্ঞান বা জানাকে ধারণা বলা হয়।
সাধারণ অর্থে ধারণা হল বিষয়, ব্যক্তি বা ঘটনার প্রেক্ষিতে সাধারণীকৃত একটি মানসিক প্রতীক।
-
একই শ্রেণির নানা বস্তুর মধ্যে যে সাধারণ গুণ বা বৈশিষ্ট্য থাকে, তার অভিজ্ঞতাই হল ধারণা।
-
যেসব গুণ, বৈশিষ্ট্য বা অবস্থার ভিত্তিতে মানুষ কোনাে জাতির বা কোনাে শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত ব্যক্তি বা বস্তুসমূহের বিষয়ে অভিজ্ঞতা বা জ্ঞান অর্জন করে, তাকেই ধারণা বলা যায়।
বিশিষ্ট মনােবিদ রিপল্ এবং ক্ল্যজমেইয়ার তাঁদের লেখা Learning and Abilities’ নামক বইতে ধারণা গঠনের বিষয়ে নিম্নলিখিত কয়েকটি নীতির কথা উল্লেখ করেছেন一
(১) পার্থক্য ও সাদৃশ্যের নীতি: কোনাে একটি বস্তু সম্পর্কে ধারণা গঠনের ক্ষেত্রে একই শ্রেণির বিভিন্ন বস্তুর মধ্যে কী কী পার্থক্য ও সাদৃশ্য রয়েছে তা লক্ষ করা হয়। সাধারণত সাদৃশ্যপুলিকে একত্র করে বস্তুটি সম্পর্কে ধারণা গঠন করা হয়।
(২) গুণবিষয়ক নীতি: বস্তুর বৈশিষ্ট্য বা গুণাবলির দ্বারা বস্তু সম্পর্কে ধারণা গড়ে ওঠে।
(৩) ক্রমপর্যায়ের নীতি: ঘটনার ক্ষেত্রে ক্রমপর্যায় অনুযায়ী বিষয়গুলি প্রত্যক্ষণ হলে ধারণা গঠন সহজ হয়।
(৪) বিশ্লেষণের নীতি: ধারণা গঠনের ক্ষেত্রে বিশ্লেষণ বিশেষভাবে প্রয়ােজন। সঠিক বিশ্লেষণ ধারণা গঠনের কাজকে সহজ করে।
(৫) ব্যবহারের নীতি: পূর্বে অর্জিত ধারণাসমূহ নতুন ধারণা গঠনের ক্ষেত্রে সহায়ক হয়। এটিই হল ধারণার ব্যবহারের মূলনীতি।
(৬) মূল্যায়নের নীতি: ধারণা গঠনের আর-একটি গুরুত্বপূর্ণ নীতি হল মূল্যায়ন। বিষয়বস্তুর বা ঘটনার সঠিক মূল্যায়নের দ্বারা ধারণা গড়ে ওঠে।
Leave a comment