(১) ভৌগোলিক অবস্থা
বৃষ্টিপাত : ধান চাষের জন্য পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত দরকার। বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বছরে 100 থেকে 200 সেমি হওয়াই বাঞ্ছনীয়। ধানের চারা বড়াে হওয়ার সময় প্রতি মাসে 12 সেমি বৃষ্টিপাত হলে ফসল খুব ভালাে হয়। তবে ধান পাকার সময় শুষ্ক ও রােদ ঝলমলে আবহাওয়া থাকা প্রয়ােজন।
উষ্ণতা : ধান চাষের জন্য গড়ে 20 °সে. উয়তা প্রয়ােজন।
-
মৃত্তিকা : ধান চাষের জন্য উর্বর মৃত্তিকার প্রয়ােজন। নদী-উপত্যকার উর্বর পলিমাটিতে ধান ভালাে হয়। ধান চাষের প্রাথমিক অবস্থায় জমিতে জল জমে থাকা একান্ত প্রয়ােজন। এই কারণে উর্বর দোআঁশ-পলিমাটি স্তরের প্রায় 1 মিটার নীচে অপ্রবেশ্য কাদামাটির স্তর থাকা বাঞ্ছনীয়, যাতে জল মৃত্তিকাস্তরের গভীরে না গিয়ে ওপরের স্তরে জমে থাকে।
-
ভূমির অবস্থা : ধান চাষের জন্য সমতলভূমি বিশেষ উপযুক্ত, যাতে জমিতে বাঁধ দিয়ে জল ধরে রাখা সম্ভব হয়। এই কারণে নদী-উপত্যকা ও বদ্বীপের নীচু অঞ্চলগুলি পৃথিবীর ধান চাষের প্রধান ক্ষেত্র।
(২) অর্থনৈতিক অবস্থা
-
শ্রমিক : ধান চাষের জন্য জমিতে লাঙল দেওয়া, আগাছা পরিষ্কার করা, ধানের চারাকে স্থানান্তর করে রােপণ করা, ফসল কাটা প্রভৃতি যাবতীয় কাজ প্রধানত হাতেই করা হয়। ফলে ধান চাষের জন্য প্রচুর সুলভ শ্রমিকের প্রয়ােজন হয়।
-
মূলধন : হেক্টর-প্রতি ধান উৎপাদনের পরিমাণ বৃদ্ধির জন্য উচ্চফলনশীল বীজ, সার ও সেচের ব্যবহারের দ্বারা নিবিড় প্রথায় চাষ করতে হলে যথেষ্ট মূলধনের প্রয়ােজন হয়।
-
চাহিদা বা বাজার : যে অঞ্চলের মানুষের প্রধান খাদ্যশস্য চাল, সেই অঞ্চলে অন্য খাদ্যফসলের তুলনায় ধানের বেশি চাহিদা থাকায় ধান উৎপাদনই অগ্রাধিকার পায়।
ধানের ব্যবহার
(১) ধানের খােসা ছাড়িয়ে চাল প্রস্তুত করা হয়। চাল পৃথিবীর প্রায় অর্ধেক মানুষের প্রধান খাদ্য।
(২) এ ছাড়া চিড়ে, মুড়ি, খই, শ্বেতসার ইত্যাদি তৈরিতে ধান কাজে লাগে।
(৩) ধানের তুষ থেকে নিষ্কাশন করা হয় ভােজ্য তেল।
(৪) গ্রামাঞ্চলে ঘরের ছাউনি তৈরিতে খড় ব্যবহৃত হয়।
(৫) এ ছাড়া দড়ি, কাগজ শিল্পের কাঁচামাল ও জ্বালানি হিসেবেও খড় ব্যবহৃত হয়।
(৬) খড় একটি পশুখাদ্য।
(৭) বর্তমানে ধানের খােসা সিমেন্টের সঙ্গে মিশিয়ে শব্দ-নিরােধক দেয়াল নির্মাণ করা হচ্ছে।
Leave a comment