অথবা, দ্বি-কক্ষবিশিষ্ট আইনসভা বলতে কী বুঝ? এর সুবিধাসমূহ সংক্ষেপে বর্ণনা কর।
ভূমিকাঃ বর্তমান গণতান্ত্রিক বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্ট্রে আইনসভাগুলাে মােটামুটি দু’ধরনের হয়ে থাকে। যথা- এক কক্ষবিশিষ্ট আইনসভা ও দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভা। এ দু’ধরনের আইনসভা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে দু’ধরনের ভূমিকা পালনের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্রে কার্যকরী ভূমিকা রাখছে। এ দু’ধরনের আইনসভারই কাজে ও চরিত্রে পার্থক্য রয়েছে।
দ্বি-কক্ষবিশিষ্ট আইনসভাঃ এক কক্ষবিশিষ্ট আইন সভার নানা ত্রুটি-বিচ্যুতি ও সীমাবদ্ধতার কারণে পৃথিবীর অধিকাংশ দেশেই দ্বি-কক্ষবিশিষ্ট আইনসভার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ ধরনের আইন সভায় দু’টি কক্ষ বা পরিষদ থাকে। একটি নিম্নকক্ষ এবং অপরটি উচ্চকক্ষ নামে পরিচিত।
দ্বি-কক্ষবিশিষ্ট আইনসভার গুণাবলিঃ দ্বি-কক্ষবিশিষ্ট আইনসভার গুণাবলিসমূহ নিম্নে আলােচনা করা হলাে-
(১) শাসনব্যবস্থায় ভারসাম্য ও নিয়ন্ত্রণ সৃষ্টিতে দ্বি-কক্ষবিশিষ্ট আইন সভা অত্যন্ত ফলপ্রসূ। এ ব্যবস্থায় ক্ষমতার ভারসাম্য তৈরি হয় বলে সরকারের স্বৈরাচারী হওয়ার প্রবণতা কম থাকে।
(২) দ্বি-কক্ষবিশিষ্ট আইনসভায় সুচিন্তিত আইন প্রণয়ন করা হয়। প্রথম কক্ষের যেকোনাে হঠকারিতা এবং আবেগ ২য় কক্ষে ধরা পড়ে এবং ২য় কক্ষের ভুল প্রথম কক্ষে ধরা পড়ে।
(৩) দ্বি-কক্ষবিশিষ্ট আইনসভা স্বৈরাচারী শাসনের অবসান করতে পারে। প্রথম কক্ষ জনমতের বিরুদ্ধে কাজ করলে অন্য কক্ষ তা প্রতিরােধ করতে সমর্থ হয়।
(৪) দ্বি-কক্ষবিশিষ্ট আইনসভা রাষ্ট্রের বিভিন্ন বিভাগের স্বাধীনতার পথকে প্রশস্ত করে। এখানে শাসন বিভাগকে দুটো কক্ষের কাছেই জবাবদিহি করতে হয়। ফলে অধিকতর স্বচ্ছতা নিশ্চিত হয়।
পরিশেষঃ পরিশেষে বলা যায় যে, দ্বিকক্ষবিশিষ্ট উভয় আইন সভাতেই পক্ষে-বিপক্ষে নানান যুক্তি আছে। তবে এ কথা সত্য যে বিশ্বের অধিকাংশ গণতান্ত্রিক দেশেই এখন দ্বি-কক্ষবিশিষ্ট আইন সভার উপযােগিতা প্রমাণিত হয়েছে। আর দরিদ্র ও ছােট দেশের জন্য এক কক্ষবিশিষ্ট আইন সভা উপযােগী বলে এর পক্ষেও অনেকে মত প্রকাশ করেছেন।
Leave a comment