বিজ্ঞান অবিচ্ছিন্নভাবে আমাদের জীবনের সাথে যুক্ত। প্রতিটি ক্ষেত্রে, প্রতিটি পদক্ষেপে আমরা বিজ্ঞানের অস্তিত্ব অনুভব করি যা সর্বদা আমাদের অবাক করে দেয়। আজ আমরা এমনি ৩ টি ঘটনা সম্পর্কে জানব, যা আমরা সর্বদাই দেখে থাকি তবে এর পেছনের বিজ্ঞানটি জানি না।

১। কোমল পানীয় বা ঠাণ্ডা পানির বোতলের গায়ে পানি-বিন্দু জমা হওয়া।

আমরা যখন কোল্ড ড্রিঙ্ক বা ঠাণ্ডা পানি পান করি, আমরা সবসময় বোতলটির বাইরের পৃষ্ঠের কিছু পানির ফোঁটা দেখতে পাই। তবে কখনও কি ভেবে দেখেছেন এই জলের ফোঁটাগুলি কোথা থেকে আসে? উত্তরটি কিন্তু বেশ চমৎকার।

ক্যান বা বোতলের ভিতরে যখন ঠাণ্ডা জল বা পানীয় থাকে, এটি বোতলটির উপরিভাগে একটি শীতল পরিবেশ তৈরি করে। যেহেতু বোতলটির বাইরের পৃষ্ঠটি শীতল হয়ে গেছে, এটি পৃষ্ঠের সংস্পর্শে থাকা বাতাসকে শীতল করতে শুরু করে। ফলস্বরূপ, বাতাসে বিদ্যমান বাষ্প শীতল হতে শুরু করে এবং শিশিরবিন্দুতে পৌঁছে। ধীরে ধীরে বাতাসের এই বাষ্প ক্ষুদ্র জলের ফোঁটা তৈরি করে এবং বোতলটির উপরিভাগে জমা হয়।

আরও পড়ুন – টাইম ট্রাভেলারদের জন্য স্টিফেন হকিং এর শ্যাম্পেইন পার্টি । An Experiment on Time travel

২. গভীর নিঃশ্বাস নেওয়া বা হাই তোলা

ধরুন আপনি ক্লান্ত বা বেশ ঘুম পেয়েছে। প্রথম কাজটি আপনি কি করবেন? আপনি বিশ্রাম নিতে বসবেন বা বিছানায় গা এলিয়ে দেবেন। তবে এর মধ্যে আপনি আরও একটি কাজ করবেন সেটি হল গভীর নিঃশ্বাস নেবেন, যাকে আমরা হাই তোলা বলি। কিন্তু কেন এটা ঘটে?

মূলত, যখন আমরা ক্লান্ত হয়ে পরি বা নিদ্রা অনুভব করি তখন আমাদের মস্তিষ্কে অক্সিজেনের ঘাটতি হতে থাকে এবং আমরা সকলেই জানি যে আমাদের মস্তিষ্ক সঠিকভাবে কাজ করার জন্য অক্সিজেনের প্রয়োজন। এই কারণে, যখন আমাদের মস্তিষ্কে অক্সিজেনের প্রবাহ হ্রাস পায়, তখন গভীর শ্বাস নেওয়ার জন্য আমাদের শরীর এমনভাবে পরিচালনা করে। এটি প্রচুর পরিমাণে বায়ু নিতে সাহায্য করে যা থেকে প্রয়োজনীয় পরিমাণ অক্সিজেন আমাদের ফুসফুসে প্রবেশ করবে এবং তারপরে আমাদের মস্তিষ্কের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হবে। বিস্তারিত। 

আরও পড়ুন – ভুল করে হওয়া ৭ টি বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার | Accidental Discoveries

৩. ঘামের পরে শরীর ঠাণ্ডা হয়ে যাওয়া

আমরা বিভিন্ন কারণে ঘেমে থাকি। শারীরিক পরিশ্রম করার পরে বা প্রচণ্ড গরমে সাধারণত আমাদের ঘাম হয়। তবে আপনি কি কখনও খেয়াল করেছেন যে ঘামের পর আমাদের শরীর ঠাণ্ডা হয়ে যায়? হ্যাঁ, এটি ঘটে। ঘামের পরে যদি আপনি আপনার শরীর স্পর্শ করেন তবে আপনি অনুভব করবেন যে আপনার শরীরের তাপমাত্রা হ্রাস পেয়েছে।

তো কেন এটি ঘটে?

যখন আমরা ঘামি তখন আমাদের লোমকূপ দিয়ে নোনতা পানি আমাদের শরীর থেকে বেরিয়ে আসে যাকে আমরা ঘাম বলি। শারীরিক পরিশ্রম যতক্ষণ অব্যাহত থাকে বা আমরা গরম অনুভব করি ততক্ষণ এই প্রক্রিয়াটি চলতে থাকে। এই ঘাম বাতাসের সংস্পর্শে আসার ফলে ধীরে ধীরে বাষ্পীভূত হতে থাকে। প্রক্রিয়া চলাকালীন এই ঘামের বিন্দুগুলি আমাদের দেহ থেকে সুপ্ত তাপ শোষণ করে। ফলস্বরূপ, ত্বকের তাপমাত্রা ধীরে ধীরে হ্রাস পায়। আর এভাবেই আমাদের শরীর ঘামের পরে ঠাণ্ডা হয়ে যায়।