❋ দেশের বর্তমান যুবসমাজের নৈতিক অবক্ষয় রােধের উপায় সম্পর্কে তােমার মতামত জানিয়ে সংবাদপত্রে প্রকাশের জন্য একটি চিঠি লেখ।
১০ ডিসেম্বর ২০২১
বরাবর
সম্পাদক
দৈনিক মানবজমিন
১০০ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫।
বিষয় : সংযুক্ত পত্রটি প্রকাশের জন্য আবেদন।
জনাব
আপনার সম্পাদিত ও বহুল প্রচারিত দৈনিকের চিঠিপত্র’ কলামে সংযুক্ত গুরুত্বপূর্ণ পত্রটি প্রকাশ করে বাধিত করবেন।
বিনীত
তমালিকা মল্লিক
কালিগঞ্জ, ঝিনাইদহ ।
যুবসমাজের নৈতিক অবক্ষয় রােধের উপায়
যেকোনাে দেশ ও জাতির প্রাণশক্তি হলাে যুবসমাজ। এ শক্তির উপযুক্ত ব্যবহারে জাতির কল্যাণ হয়, আর অপচয়ে হয় অকল্যাণ ! কোনাে দেশই যুবসমাজকে বাদ দিয়ে নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে পারে না। কেননা যুবকরাই হচ্ছে আলাের পথের অভিযাত্রী। তাদের অন্ধকারে রেখে কোনাে দেশই অগ্রগতির পথে অগ্রসর হতে পারে না। যুবকরাই নতুন উৎসাহ এবং উদ্দীপনা নিয়ে জাতীয় জীবনে মঙ্গল বয়ে আনে। একসময় এদেশের যুবসমাজই নিজেদের প্রাণের বিনিময়ে মাতৃভাষার দাবি প্রতিষ্ঠা করেছিল এবং বর্বর পাকিস্তানি শাসকগােষ্ঠীর হাত থেকে স্বাধীনতা কেড়ে এনেছিল। অথচ দুঃখজনক হলেও সত্য যে, আজ আমাদের যুবসমাজে নৈতিক অবক্ষয় দেখা দিয়েছে। দেশজুড়ে যুবসমাজ আজ বিপথে চালিত হচ্ছে। যারা দেশ গড়ার সৈনিক তারাই আজ বখাটে, মাতাল, যৌন নিপীড়ক, সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজ। চুরি, ডাকাতি, হাইজ্যাক, হত্যা, রাহাজানি, প্রতারণা, চোরাকারবারি, নকলবাজি ইদানীং স্বাভাবিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। এসব দৃষ্টান্তই যুবসমাজের নৈতিক অবক্ষয়ের বাস্তব চিত্র । যুবসমাজের এরূপ নৈতিক অবক্ষয় রােধ করতে না পারলে জাতি অচিরেই ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যাবে। সুতরাং, এদের নৈতিক অবক্ষয় রােধকল্পে নিমােক্ত উদ্যোগ গ্রহণ করা যেতে পারে :
• বেকারত্ব যুবসমাজের নৈতিক অধঃপতনের অন্যতম কারণ। তাই তাদের জন্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে।
• সামাজিক অপরাধ যেমন- মদ, জুয়া, পতিতাবৃত্তি, হাইজ্যাক, রাহাজানি ইত্যাদি নিরােধের জন্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে আরও সক্রিয় হতে হবে।
• স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রমে নীতিবোেধ শিক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে।
• অশ্লীলতা বিবর্জিত সুষ্ঠু বিনােদনের ব্যবস্থা করতে হবে।
• আধুনিক তরুণ-তরুণীদের অনেকেই কম্পিউটারে ও স্মার্ট ফোনে পর্নো ছবি দেখে যৌন উন্মাদনায় ভুগছে এবং অসামাজিক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হচ্ছে। তাই পর্নো ছবির ভিডিও পুরােপুরিভাবে নিষিদ্ধ করতে হবে। নেতৃস্থানীয় দায়িত্বশীল লােকদের উদ্যোগে যুবকদের সৎপথে পরিচালিত করার দায়িত্ব নিতে হবে।
• প্রত্যেক অভিভাবককে তাদের সন্তান সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে। তারা কোথায় যায়, কী করে, কাদের সঙ্গে মেলামেশা – ‘ করে এসব ব্যাপারে নজর রাখতে হবে; যেন তারা অসৎ সঙ্গীদের সংস্পর্শে যেতে না পারে।
• সামাজিক ও ধর্মীয় দায়িত্ববােধ জাগ্রত রাখতে শিক্ষাব্যবস্থার সংস্কার সাধন করতে হবে।
• যুবসমাজকে রাজনীতিকদের হাতের ক্রীড়নক হওয়া থেকে বিরত রাখতে হবে। এজন্য সরকার ও বিরােধী দলকে প্রতিশ্রুতি দিতে হবে।
• সর্বোপরি যুবসমাজের নৈতিক অবক্ষয় রােধকল্পে জাতীয় উদ্যোগে সার্বিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
সবশেষে বলা যায় যে, উপযুক্ত পরামর্শ বাস্তবায়ন করা হলে যুবসমাজের নৈতিক অবক্ষয় অনেকাংশে রােধ করা সম্ভব হবে।
নিবেদক
তমালিকা মল্লিক
কালিগঞ্জ, ঝিনাইদহ।
Leave a comment