উদ্দিষ্ট ব্যক্তিবর্গ: সুভাষ মুখােপাধ্যায় তাঁর ‘মেঘের গায়ে জেলখানা’ রচনায় জানিয়েছেন যে, দেশকে ভালােবাসা ছাড়া আর কোনাে অপরাধ যারা করেননি, তাঁরাও বর্তমানে বক্সার জেলখানায় কয়েদি হয়ে রয়েছেন। ইংরেজরা স্বাধীনতা সংগ্রামীদের জন্যই বক্সার জেলখানা তৈরি করেছিল। কিন্তু স্বাধীনতার পর সেখানে অন্যান্য অপরাধীদের সঙ্গে রাজনৈতিক অপরাধীদেরও কয়েদি করে রাখা হয়েছে। খাঁসাহেব, নীরদ চক্রবর্তী, শিবশংকর মিত্র, সতীশ পাকড়াশী প্রমুখ স্বাধীনতা সংগ্রামী কমিউনিস্টদেরও এ জেলখানায় দেখেন লেখক।

লেখকের মনােভাব : যে-সমস্ত মানুষ দুরন্ত অজয় নদের তীরে দাঁড়িয়ে বন্যারােধী বাঁধ বেঁধেছেন, যাঁরা অন্ধকার খনিগর্ভে পৌঁছে দিয়েছেন উজ্জ্বল সম্ভাবনাময় নতুন দিনের সুসমাচার, হেলে পড়া ধানের শিষগুলিকে যাঁরা সাহস জুগিয়ে বর্শার ফলার মতাে টানটান করে দিয়েছেন, কারখানার চিমনির ধূমায়িত মুখে যাঁরা জুগিয়ে দিয়েছেন আগুনের ভাষা—সেইসব মানবতাবাদী কমিউনিস্ট নেতাকর্মীদের বক্সা বন্দিশিবিরে দেখতে পেয়ে অত্যন্ত বেদনার্ত হয়েছেন মানবতাবাদী কবি সুভাষ মুখােপাধ্যায়। স্বাধীন দেশের সরকারের এই অন্যায় আচরণ তিনি কিছুতেই মেনে নিতে পারেননি। তাই তিনি লিখেছেন, “আজ ইংরেজ নেই, তবু তার আগের ব্যবস্থাই বহাল আছে বক্সায়।”