প্রশ্নঃ শ্রেণীবিন্যাসসহ দেওয়ানী আদালতের এখতেয়ারের বর্ণনা কর। দেওয়ানী মোকদ্দমা দায়ের করার বিভিন্ন নিয়মাবলির বিবরণ দাও।
Define with classification the jurisdiction of civil courts. Explain different provisions of the civil procedure code relating to the place of suing.
উত্তরঃ বাংলাদেশের দেওয়ানী আদালতের শ্রেণীবিন্যানস ও এখতিয়ার ২০০১ সালের দেওয়ানী আদালত (সংশোধনী) আইন অনুযায়ী বর্তমানে বাংলাদেশে দেওয়ানী আদালতগুলি নিম্নরূপঃ
(ক) জেলা জজ আদালত;
(খ) অতিরিক্ত জেলা জজ আদালত;
(গ) যুগ্ম জেলা জজ আদালত;
(ঘ) সিনিয়র সহকারী জজ আদালত;
(ঙ) সহকারী জজ আদালত
এখতিয়ারঃ
(ক) জেলা জজ আদালতঃ জেলার প্রধান আদালত হচ্ছে জেলা জজ আদালত। জেলা জজ তার এলাকাধীন সকল অধঃস্তন আদালতের রায়, ডিক্রী, আদেশের বিরুদ্ধে আপীল শুনানী ও নিস্পত্তি করে থাকেন। এছাড়া ঐ সকল আদালতের তত্ত্বাবধান ও নিয়ন্ত্রণ করে থাকেন। জেলা জজ তার এলাকাধীন এক আদালত হতে অন্য আদালতে মামলা স্থানান্তর বা প্রত্যাহার করতে পারেন। কতিপয় ক্ষেত্রে জেলা জজের মৌলিক এখতিয়ার আছে, যেমন, প্রবেটের মামলা, লেটারস প্যাটেন্ট মামলা, দেউলিয়া সংক্রান্ত মামলা ইত্যাদি।
(খ) অতিরিক্ত জেলা জজ আদালতঃ কতিপয় জেলায় অতিরিক্ত জেলা আদালত থাকে। যদিও অতিরিক্ত জেলা জজের বিচার কার্যের এখতিয়ার ও মর্যাদা জেলা জজের সমান তবুও আদালতের প্রশাসনিক ক্ষমতা এককভাবে জেলা জজের উপর ন্যস্ত। জেলা জজ যে সকল মামলা ও আপীল অতিরিক্ত জেলা জজের নিকট প্রেরণ করেন সেগুলি অতিরিক্ত জেলা জজ নিষ্পত্তি করেন। জেলা জজ বা অতিরিক্ত জেলা জজের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে হাইকোর্ট বিভাগে আপীল করা যায়।
(৩) যুগ্ম জেলা জজ আদালতঃ জেলা জজের পরবর্তী অধ:স্তন আদালত হচ্ছে সাব জজ আদালত। প্রত্যেক জেলায় এরূপ আদালত রয়েছে। সহকারী জজ আদালতের রায়, ডিক্রী ও আদেশের বিরুদ্ধে সাব জজ আদালত আপীল শুনানী ও নিষ্পত্তি করে থাকেন। সহকারী জজ আদালতের বহির্ভূত মামলাগুলি যুগ্ম জেলা জজ আদালতে দায়ের করা হয়। মৌলিক এখতিয়ারের ক্ষেত্রে সাবজজের আর্থিক এখতিয়ার সীমাহীন।
(৪) সিনিয়র সহকারী জজ আদালতঃ প্রত্যেক জেলা সদরে এক বা একাধিক সিনিয়র সহকারী জজ আদালত রয়েছে। বর্তমানে ২ লক্ষ টাকার উপরে ৪ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আর্থিক মূল্যমানের বিচার এ আদালতে হবে।
(৫) সহকারী জজ আদালতঃ সিনিয়র সহকারী জজের পাশাপাশি এক বা একাধিক সহকারী জজ আদালত রয়েছে। একজন সহকারী জজের আর্থিক এখতিয়ার ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত।
দেওয়ানী মোকদ্দমা দায়েরঃ উপযুক্ত এখতিয়ার সম্পন্ন আদালতগুলির মধ্যে সর্ব নিম্ন স্তরের আদালতে মামলা দায়ের করতে হবে।
একটি মামলা গঠনের জন্য নিম্মলিখিত ৪টি উপাদানের অস্তিত্ব অপরিহার্য :-
১. পক্ষসমূহঃ একটি মামলায় অবশ্য বাদী ও বিবাদী থাকবে।
২. বিষয়-বস্তুঃ যে বিষয়কে কেন্দ্র করে মামলা করা হবে তা আদালত কর্তৃক নিস্পত্তি যোগ্য হতে হবে।
৩. নালিশের কারণঃ কিভাবে নালিশের কারণ উদ্ভুত হলো তা বর্ণনা করতে হবে। কাজেই নালিশের কারণ না থাকলে মামলা করা যায় না।
৪. প্রার্থিত প্রতিকারঃ দায়েরকৃত মামলার আরজিতে বাদী প্রার্থিত প্রতিকার উল্লেখ করতে হবে। অর্থাৎ বাদী কি প্রতিকারের জন্য আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে তার বর্ণনা থাকতে হবে।
Leave a comment