প্রথাগত শিক্ষার সীমাবদ্ধতার কারণে বিকল্প শিক্ষাব্যবস্থা হিসেবে দূরাগত শিক্ষার উদ্ভব ও প্রসার ঘটেছে।স্বাভাবিকভাবেই এই শিক্ষার বিশেষ কয়েকটি সুবিধা আছে যা নীচে উল্লেখ করা হল—

(১) সবার জন্য সুযোগ: দূরাগত শিক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হল এই শিক্ষার সুযােগ সবার জন্য উন্মুক্ত। যে-কোনাে বয়সের, যে-কোনাে মানের উৎসুক শিক্ষার্থীরা এই শিক্ষায় অংশ নিতে পারে।

(২) জাতীয় সম্পদের উন্নয়ন: দূরাগত শিক্ষা জাতীয় সম্পদ বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।

(৩) অবসরের সদব্যবহার: দূরাগত শিক্ষার আর-একটি সুবিধা হল এখানে শিক্ষার্থীদের গতানুগতিক শিক্ষার মতাে প্রতিদিন বিদ্যালয়, মহাবিদ্যালয় বা বিশ্ববিদ্যালয়ে উপস্থিত হতে হয় না৷

(৪) ব্যক্তিগত স্বাচ্ছন্দ্য: দূরাগত শিক্ষায় শিক্ষার্থীরা ব্যক্তিগত সুখস্বাচ্ছন্দ্য বা বিশ্রাম উপভােগ করে। কারণ নির্দিষ্ট সময়ে শিক্ষালয়ে উপস্থিতির বাধ্যবাধকতা থাকে না।

(৫) পদ্ধতির নমনীয়তা: দূরাগত শিক্ষার পদ্ধতি যথেষ্ট নমনীয়। নিয়ন্ত্রিত শিক্ষাব্যবস্থার অনুরূপ এক্ষেত্রে শিক্ষাদানের জন্য কোনাে নির্দিষ্ট পদ্ধতি অনুসরণ করা হয় না।

(৬) মেধার ব্যবহার: বিভিন্ন প্রতিকূলতার জন্য যেসব মেধাবী ছেলেমেয়ে নিয়ন্ত্রিত শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হয়, দূরাগত শিক্ষাব্যবস্থা সেইসব শিক্ষার্থীদের মেধার বিকাশ ঘটাতে সাহায্য করে।

(৭) শিখনের ক্ষেত্রে আত্মনির্ভরতা লাভ: এই শিক্ষায় শিক্ষার্থী নিজের ইচ্ছায় শিক্ষালাভ করে। শিক্ষকের সাহায্য ছাড়াই শিক্ষার্থী বিষয়বস্তু নিজে পড়ে বােঝার চেষ্টা করে; ফলে শিক্ষার্থী শিখনে আত্মনির্ভর হয়।

(৮) প্রস্তুত বিষয়বস্তু লাভ: দূরাগত শিক্ষার ক্ষেত্রে অভিজ্ঞ শিক্ষকদের, দ্বারা পাঠ্যবিষয় ছােটো ছােটো মডিউলের মাধ্যমে প্রস্তুত করে শিক্ষার্থীর কাছে সরবরাহ করা হয়। অর্থাৎ শিক্ষার্থী প্রস্তুত বিষয়বস্তুই পায়।

(৯) শিক্ষায় প্রবেশের সুযোগ: প্রথাগত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীর আসনসংখ্যা নির্দিষ্ট নয়। যতখুশি শিক্ষার্থী একই শিক্ষাবর্ষে ভরতি হতে পারে। ফলে বহু শিক্ষার্থী শিক্ষার সুযােগ পায়।

(১০) পাঠ্যবস্তুর মান: বহু অভিজ্ঞ শিক্ষক দ্বারা দূরাগত শিক্ষার পাঠ্য বিষয়বস্তু প্রস্তুত করা হয়। সুতরাং সেগুলির মান যথেষ্ট উন্নত হয়।